ভারতে ব্যান হতে পারে Facebook, Twitter, Instagram, জানুন কারণ

এবার কেন্দ্রের রোষের মুখে পড়ে ভারতে ব্যান হতে পারে Facebook, Twitter এবং Instagram-এর মতো শীর্ষস্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশ টানতে…

এবার কেন্দ্রের রোষের মুখে পড়ে ভারতে ব্যান হতে পারে Facebook, Twitter এবং Instagram-এর মতো শীর্ষস্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশ টানতে ডিজিটা‌ল কনটেন্ট সংক্রান্ত একগুচ্ছ নয়া মধ্যস্থতাকারী নির্দেশিকা (Intermediary Guidelines) জারি করেছিল ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক (MEITy)। এই নির্দেশিকাগুলি (IT rules) মেনে নেওয়ার জন্য সংস্থাগুলিকে ৩ মাস সময় দেওয়া হয়েছিল, যার সময়সীমা শেষ হচ্ছে ২৫ শে মে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত WhatsApp, Facebook, Twitter সহ কোনও প্ল্যাটফর্মই এই নয়া নির্দেশিকার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়াই জানায়নি। কেবল Twitter-এর ভারতীয় ভার্সন Koo, একমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ যা ২৫ মে সময়সীমার আগে নতুন নিয়মাবলী মেনে নিয়েছে। তাই এই নয়া নির্দেশিকা না মেনে নিলে ভারতে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।

ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফ থেকে ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যাবতীয় ডিজিটাল কনটেন্ট যাচাই করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে ভারত থেকে কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে। কর্মকর্তা অভিযোগগুলি রিভিউ করবেন, কনটেন্ট বিশদে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং আপত্তিকর হলে সেগুলি রিমুভ করবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব আপত্তিকর ভাষা ও বিষয়বস্তু দেখা যাচ্ছে, তা এবার থেকে সরকার আর অনুমোদন করবে না এবং তা রুখতেই এই নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। এই জাতীয় নিয়মগুলি কেবল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির জন্যই নয়, OTT প্ল্যাটফর্মগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

নতুন নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে যে, Netflix, Amazon Prime সহ অন্যান্য স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলিকেও ভারতের একজন অভিযোগ নিষ্পত্তি কর্মকর্তা (grievance redressal officer) নিয়োগ করতে হবে, যিনি যাবতীয় অভিযোগগুলি পর্যালোচনা করবেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে সেগুলির ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। সরকার মনে করে যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির কোনো সেল্ফ-রেগুলেশন (self-regulation) কোড নেই। অতএব, সরকার চায় যে, সংস্থাগুলি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করুক এবং কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কমিটি গঠন করুক। নতুন নিয়মে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোড লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র কমিটির থাকবে।

খুব স্বাভাবিকভাবেই এরকম চাঞ্চল্যকর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানারকম তর্কবিতর্ক ও আলোচনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে একজন সরকারী কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে বলেছেন, “সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ যদি তারা ২৫ মে-র মধ্যে নতুন নিয়ম না মানে, তাহলে তারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তাদের মর্যাদা ও সুরক্ষা (status and protections) হারাবে এবং ভারতের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। যদিও এই সমস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাগুলি ছয় মাস সময় চেয়েছিল কারণ তারা মার্কিন সদর দপ্তর থেকে প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।”

এদিকে Facebook এই নিয়ম মেনে চলবে কি না তার ওপর আলোকপাত করে সংস্থার এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য তথ্যপ্রযুক্তি বিধির (IT rules) বিধান মেনে চলা এবং বিশেষ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের সাথে আরও বেশি যোগাযোগ করা প্রয়োজন। IT rules অনুযায়ী, আমরা অপারেশনাল প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন এবং এফিশিয়েন্সি উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। আমাদের প্ল্যাটফর্মে অবাধে এবং নিরাপদে মানুষের নিজেদের মতামত প্রকাশ করার ক্ষমতার প্রতি Facebook প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।”

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন