প্রতারণার ফাঁদ! এই WhatsApp অ্যাকাউন্ট চুরি করে নিতে পারে আপনার ব্যক্তিগত ও ব্যাংকিং তথ্য
সহজসরল মানুষকে প্রতারিত করার জন্য হ্যাকারদের সৃষ্ট নিত্যনৈমিত্তিক ফন্দিফিকিরের পোর্টফোলিও দিন-কে-দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে।...সহজসরল মানুষকে প্রতারিত করার জন্য হ্যাকারদের সৃষ্ট নিত্যনৈমিত্তিক ফন্দিফিকিরের পোর্টফোলিও দিন-কে-দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে। সম্প্রতি একটি WhatsApp (হোয়াটসঅ্যাপ) স্ক্যামের খবর প্রকাশ্যে এসেছে, যার মাধ্যমে ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে স্ক্যামাররা। WhatsApp-এর ফিচার ট্র্যাকার WABetaInfo-র একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই স্ক্যামের মাধ্যমে জালিয়াতরা ভুয়ো সাপোর্ট (Support) অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ব্যাংক এবং কার্ডের ডিটেইলস সহ ইউজারদের ব্যক্তিগত এবং আর্থিক তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারে। আবার, এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলিকে হাতিয়ার করে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তাদের ব্যক্তিগত ডিটেইলস সুনিপুণ কায়দায় আদায়ও করে নিতে পারে সাইবার আক্রমণকারীরা। এই স্ক্যামটি সর্বপ্রথম কাদের নজরে এসেছে, সে সম্পর্কে বিশদে কিছু জানা না গেলেও সম্প্রতি shimon128 নামের এক Discord (ডিসকর্ড) ইউজার এরকমই একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছেন। তাহলে চলুন, বিষয়টি সম্পর্কে একটু বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
কীভাবে WhatsApp-এ ভুয়ো সাপোর্ট অ্যাকাউন্ট স্ক্যামের ঘটনা ঘটছে?
সহজসরল ইউজারদের প্রতারণার জালে ফাঁসানোর জন্য হ্যাকাররা প্রথমে একটি ভুয়ো হোয়াটসঅ্যাপ সাপোর্ট অ্যাকাউন্ট তৈরি করে, যেটিকে দেখলে হুবহু আসল অ্যাকাউন্ট বলেই মনে হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউজারদের মনে যাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের উদ্রেক না হয় তার জন্য এই অ্যাকাউন্টগুলিতে একটি ভেরিফায়েড ব্যাজ সহ একটি নির্দিষ্ট প্রোফাইল ইমেজ ব্যবহার করা হয়। আর, এই জাল অ্যাকাউন্টগুলি ইউজারদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট সমাপ্তির (অ্যাকাউন্ট টার্মিনেশন) সতর্কতা দিয়ে তাদের কাছ থেকে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করে।
যেমন, এই ধরনের ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি ইউজারদেরকে সাবধানবাণী দেয় যে যদি তারা তাদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের টার্মিনেশন আটকাতে চান, তাহলে তার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ব্যাংক কার্ডের ইনফর্মেশন শেয়ার করতে হবে। আর বর্তমান যুগে হোয়াটসঅ্যাপের প্রয়োজনীয়তা যে কতখানি, সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই আর আলাদা করে কিছু বলার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই আচমকা অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে ভেবে হ্যাকাররা যা জানতে চায়, ইউজাররা নির্দ্বিধায় তাদেরকে তৎক্ষণাৎ তা জানিয়ে দেন। আর এর ফলটা যে কী হয়, সেটা নিশ্চয়ই কারোর আঁচ করতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হওয়ার কথা নয়৷ উপরন্তু, এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি কখনো কখনো ইউজারদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস পাওয়ার জন্য ছয় ডিজিটের পিন নম্বরও জানতে চায়।
কীভাবে এই ভুয়ো WhatsApp Support অ্যাকাউন্ট কেলেঙ্কারীর হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন?
যত দিন যাচ্ছে, ধনী থেকে দরিদ্র – সর্বস্তরের মানুষকে ঠকানোর লক্ষ্যে গোটা বিশ্ব জুড়ে হ্যাকারদের দাপট উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে হ্যাকারদের আটকানো তো কার্যত অসম্ভব বললেই চলে, তাই সুরক্ষিত থাকতে হলে নিজেদেরকেই যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে। সবসময় মনে রাখবেন যে, হোয়াটসঅ্যাপ কখনোই অ্যাকাউন্ট টার্মিনেশন এড়ানোর জন্য আপনার ব্যাংক ডিটেইলস, ছয় ডিজিটের পিন, কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য জিজ্ঞাসা করবে না। যদি কেউ হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে আপনার কাছ থেকে এই ধরনের কোনো ইনফর্মেশন আদায় করার চেষ্টা করে, তবে নিঃসন্দেহে বুঝে নেবেন যে সেটি একটি জাল অ্যাকাউন্ট৷
আবার এই বিষয়টিও নজরে রাখবেন যে, মূল WhatsApp Support অ্যাকাউন্টের ভেরিফায়েড ব্যাজটি অ্যাকাউন্টের নামের পাশে দেখা যায়, প্রোফাইল পিকচারে নয়। তাই যদি কখনো কোনো ভুয়ো WhatsApp Support অ্যাকাউন্ট থেকে মেসেজ পেয়ে থাকেন, তাহলে তৎক্ষণাৎ সেটির সম্পর্কে চ্যাট ইনফো সেকশনে রিপোর্ট করুন। চ্যাটে আপনার সেন্ড করা শেষ পাঁচটি মেসেজ WhatsApp মডারেশন টিমের সাথে শেয়ার করা হবে, যারা কথোপকথনের প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে অ্যাকাউন্টটিকে রেসট্রিক্ট করবে।