ইমোজি (emoji) ছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা চ্যাট করা এমনকি কোনো ছোট্ট মেসেজ পাঠানোও যেন মশলা ছাড়া তরকারি রান্না করার শামিল! নানা ধরনের স্মাইলি, ইমোজি না পাঠালে নেটদুনিয়ায় ঠিকমতো আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করা যায়না। কিন্তু এই ইমোজি পাঠানোর জন্যই যদি লাখ লাখ টাকা জরিমানা হয়, তাহলে কী হবে? শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে ঠিক এমনটাই ঘটেছে। সম্প্রতি থাম্বস আপ (thumbs up) ইমোজি পাঠিয়ে ৬১,৬১০ ডলার (ভারতীয় মূল্যে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা) খেসারত গুনছেন কানাডার সাসকাচোয়ানে বসবাসকারী এক কৃষক।
ছোট্ট ইমোজি পাঠানোর দায়ে কয়েক লাখ টাকা জরিমানা, কেন?
বর্তমানে প্রতিদিন আমরা নানা রকমের ইমোজি ব্যবহার করে থাকি, এর মধ্যে একটি সাধারণ তথা বহুল ব্যবহৃত ইমোজি হল থাম্বস আপ। ওকে (okay) বা সম্মতি বোঝাতে, ‘বেস্ট অফ লাক’ (best of luck) শুভেচ্ছা জানাতে এবং আমরা বাঙালিরা বুড়ো আঙুল বা কাঁচকলা দেখাতে এই ইমোজিটি ব্যবহার করে থাকি। তবে কানাডার সাসকাচোয়ানের আশ্চর্যজনক ঘটনাটির উৎস আজকের নয়। ২০২১ সালের মার্চ মাসে এক শস্য ক্রেতা ৮৬ টন ফ্লেক্স কেনার জন্য বিজ্ঞাপন দেন। এরপর কেন্ট মিকলবোরো নামের একজন ক্রেতা, স্থানীয় কৃষক ক্রিস ইক্টরকে নভেম্বরে ফ্লেক্স সরবরাহের বরাত দিয়ে অনলাইন মাধ্যমে একটি চুক্তির ছবি পাঠান, যেখানে চুক্তিটি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এর জবাবে, কৃষক একটি থাম্বস আপ ইমোজির মাধ্যমে উত্তর দেন। ব্যস এরপরেই বাঁধে বিপত্তি!
আসলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী শস্য পাঠাতে পারেননি ক্রিস। এদিকে, কেন্ট এবং ক্রিস ইমোজির অর্থ সম্পর্কে একমত হতে পারেননি। কেন্টের মতে ক্রিস তার মেসেজের প্রত্যুত্তরে থাম্বস আপ পাঠিয়ে চুক্তির শর্তাবলীতে সম্মতি দিয়েছেন। আবার, ক্রিস যুক্তি দেন যে ইমোজিটি নিছক একটি রিপ্লাই ছিল যার মধ্যে তিনি মেসেজটি পেয়েছেন তা নিশ্চিত করেন। এক্ষেত্রে বিতর্কের জল গড়ায় আদালত অবধি। আর চুক্তি পূরণের ব্যর্থতার দরুন বিচারক থাম্বস আপ ইমোজিকে ডিজিটাল স্বাক্ষর হিসেবে ধরে জরিমানার রায় দেন। এই কারণেই ক্রিসকে ৫০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। অতএব হুটহাট করে ইমোজি পাঠানোর আগে সাবধান হন।