Emoji: থাম্বস-আপ ইমোজি পাঠানোয় ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা, কি ভুল করেছিলেন এই ব্যক্তি
বর্তমানে ইমোজি (Emoji) অনলাইন দুনিয়ার একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আজ কাল ব্যবহারকারীরা টেক্সট মেসেজে নিজের মনের ভাব, আবেগ...বর্তমানে ইমোজি (Emoji) অনলাইন দুনিয়ার একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আজ কাল ব্যবহারকারীরা টেক্সট মেসেজে নিজের মনের ভাব, আবেগ প্রকাশ করতে এই বৃত্তাকার মুখের ইমোটিকনগুলি ব্যবহার করে থাকেন। এমনকি এক একসময় অনেকে কোনো মেসেজ টাইপ না করেও Emoji-র মাধ্যমে নিজেকে ব্যক্ত করে থাকেন। কেউই কোন ইমোজি পাঠানোর আগে বেশি ভাবনা চিন্তাও করেন না। আর এভাবেই কোনো ভাবনা-চিন্তা ছাড়া এই ছোট ডিজিটাল আইকনটি ব্যবহার করে এক কানাডিয়ান কৃষককে ৬০ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হয়েছে। এখন মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, ছোট্ট এই আইকনটি কি ভাবে এমন বিপদজনক হয়ে উঠলো। আসুন পুরো ঘটনাটি জেনে নেওয়া যাক।
কানাডার সাসকাচোয়ান নিবাসী ক্রিস অ্যাকটার নামের একজন কৃষককে টেক্সট মেসেজে থাম্বস-আপ ইমোজি ব্যবহার করার জন্য কানাডার আদালত প্রায় ৫০,৮৮,৮৯৩ টাকা (৬১৬১০ ডলার) জরিমানা করেছে ।
রিপোর্ট অনুসারে, অ্যাকটার একজন ক্রেতার সাথে ফোনে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছিলেন, যিনি তার কাছে প্রতি বুশেল ১৩.৭৩ ডলার মূল্যে ৮৬ টন ফ্ল্যাক্স কিনতে আগ্রহী ছিলেন। ক্রেতা ফোনে অ্যাকটারের সাথে যোগাযোগ করে এবং নভেম্বরে ফ্ল্যাক্স সরবরাহ করার চুক্তির একটি ছবি শেয়ার করে চুক্তিটি নিশ্চিত করতে বলে। তখন ঐ কৃষক চুক্তির স্বীকৃতি বোঝাতে ক্রেতাকে একটি থাম্বস-আপ ইমোজি পাঠান।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো ফ্ল্যাক্স সরবরাহ না করায় ক্রেতা আবার ওই কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন ওই কৃষক বলেন যে, তিনি কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন নি। আর তার পাঠানো ইমোজির অর্থও এই নয় যে তিনি চুক্তি মেনে নিয়েছেন।
এরপর ক্রেতা এই বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা করেন। শুনানির সময় ক্রেতা চুক্তিটি পূরণ না করার জন্য কৃষককে অভিযুক্ত করেন এবং কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। এরপর ক্রিস বলেন, তিনি কেবল চুক্তিটি পেয়েছেন বলে থাম্বস-আপ ইমোজিটি পাঠিয়েছেন, তিনি চুক্তি মেনে নিয়েছেন বলে সেটি পাঠাননি।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক ক্রেতার পক্ষেই রায় দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন থাম্বস-আপ ইমোজি সাধারণত অনুমোদন দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি Dictionary.com-এ দেওয়া সংজ্ঞা মেনে তিনি বলেছেন এখানে থাম্বস আপ এর অর্থ চুক্তি মেনে নেওয়া। বিচারকের মতে, বর্তমান সময়ে ইমোজিগুলি ডিজিটাল যোগাযোগ করার একটি অন্যতম মাধ্যম।
বিচারপতি কিন বলেছেন যে, সামনাসামনি চুক্তির ক্ষেত্রে স্বাক্ষর গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ঐতিহ্যগত পদ্ধতি। তবে বর্তমান যুগে ইমোজির মতো আধুনিক পদ্ধতি গুলির ব্যবহারও সমান গুরুত্বপূর্ণ। রাইটার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিচারক বলেছেন, যেহেতু সম্পূর্ণ চুক্তিটি ফোন মারফত হয়েছিল, তাই এক্ষেত্রে থাম্বস-আপ ইমোজিটিকে স্বাক্ষরের পরিপূরক হিসেবে ধরে নিতে হবে। আর তাই ক্রিস অ্যাকটারকে, চুক্তি অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হবার জন্য ৮২ হাজার ডলার (প্রায় ৬০ লাখ) জরিমানা দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।