যাত্রীসহ উড়ন্ত গাড়ির সফল পরীক্ষা, ২০২৩ সালে বাজারে আসার সম্ভাবনা

'Flying car' বা "উড়ন্ত গাড়ি" এখন শুধুমাত্র ফ্যান্টাসি বা কল্পবিজ্ঞানের উপন্যাসের পাতায় সীমাবদ্ধ নেই। বিংশ শতাব্দীতে এই...
SHUVRO 29 Aug 2020 9:48 PM IST

'Flying car' বা "উড়ন্ত গাড়ি" এখন শুধুমাত্র ফ্যান্টাসি বা কল্পবিজ্ঞানের উপন্যাসের পাতায় সীমাবদ্ধ নেই। বিংশ শতাব্দীতে এই উড়ন্ত গাড়ির অজস্র প্রোটোটাইপ বানানো হয়েছে। বিভিন্ন ফ্ল্যাইট টেকনোজির মাধ্যমে এগুলি আকাশে ওড়ানোর চেষ্টাও করা হয়েছে। পরীক্ষায় মিলেছে কখনও সফলতা আবার কখনও দেখতে হয়েছে ব্যর্থতার মুখ। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতি যে দ্রুতগতির সাথে এগোচ্ছে তাতে মনে হয়, এই উড়ন্ত গাড়ি মানবসভ্যতার ধরাছোঁয়ার খুব একটা বাইরে নেই।

যেমন- ডাচ সংস্থা PAL-V আগামী বছরের মধ্যেই PAL-V Liberty নামে একটি রোডেবল এয়ারক্র্যাফট (একধরনের ফ্ল্যাইং কার, এটি একটি হাইব্রীড ভেহিকেল যার মধ্যে আকাশে ওড়ার সক্ষমতা যেমন আছে, তেমনি বিকল্পভাবে এটি রাস্তায় গাড়ির মতো আবার ড্রাইভও করা যায়) বাজারে লঞ্চ করার লক্ষ্য রেখেছে এবং এটি প্রোডাকশানের কাজও ফুলদমে চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও Volocopter, EHang, Airbus নামক কয়েকটি সংস্থা, ফ্লাইং কার বা eVTOL (একধরনের এয়ারক্রাফ্ট যেটি বৈদ্যুতিক শক্তির মাধ্যমে ভার্টিকালি ওড়া, টেক অফ ও ল্যান্ডিং করতে পারে) সাফল্যের সহিত টেস্ট ফ্লাইট করতে সক্ষম হয়েছে।

এবার জাপানের SkyDrive দেশের সর্বপ্রথম সংস্থা হিসেবে একজন মানুষসহ উড়ন্ত গাড়ির টেস্ট ফ্লাইট সাফল্যের সাথে পরিচালনা করলো। এই স্কাইড্রাইভ প্রোজেক্ট ২০১২ তে জাপানের অটোমেকার, Toyota, ইলেকট্রনিক্স কোম্পানী Panasonic এবং ভিডিও গেম ডেভলপার সংস্থা Bandai Namco এর ফান্ডিং এর মাধ্যমে ভলেন্টিয়ার প্রোজেক্ট হিসেবে শুরু হয়। যদিও বছর তিনেক আগে সংস্থাটির পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টাটি সাফল্যের মুখ দেখেনি। তারপর থেকেই প্রোজেক্টটি নিয়ে পুরোদমে কাজ চলতে থাকে এবং এটি সম্প্রতি Development Bank of Japan থেকে ৩.৯ বিলিয়ন জাপানি মুদ্রা অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৭১ কোটি টাকার ফান্ডিং পেয়েছে।

শুক্রবার সংস্থার পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের একটি ভিডিও দেখানো হয়। ভিডিওতে আটটি প্রপেলার সহ স্লিক মোটরসাইকের মতো দেখতে SD-03 নামক এই eVTOL (Electric vertical takeoff and landing) শ্রেণীর ফ্লাইং কারকে একজন পাইলট সহ টয়োটার টেস্ট ফিল্ডে মিনিট চারেক মাটির কয়েকফুট (১-২) ওপরে উড়তে দেখা যায়। যারপরেই জাপানের স্কাইড্রাইভ কে বিশ্বের অগণিত ফ্লাইং কার প্রোজেক্টের মধ্যে অন্যতম মানা হচ্ছে। কারণ বিশ্বের একশোরও বেশী ফ্লাইং কার প্রোজেক্টের মধ্যে কয়েকটি হাতেগোনা ক্ষেত্রে মানুষ সহ একটি সফল ও পরিমিত টেস্ট ফ্লাইট পরিচালনা করা সক্ষম হয়েছে। এবার স্কাইড্রাইভও সেই তালিকায় নবতম সংযোজন হিসাব উঠ এল।

টমোহিরো ফুকুজাওয়া যিনি এই প্রোজেক্টকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন,"বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি ফ্ল্যাইং কার প্রোজেক্টের মধ্যে, কেবলমাত্র কয়েকটি প্রকল্পেই এই উড়ন্ত গাড়ি যাত্রীসহ সফল টেস্ট ফ্লাইট চালিয়েছে।"
ফুকুজাওয়া বলেছেন, "এখনো পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ছোটো এই eVTOL এর সর্বোচ্চ উড়ানক্ষমতা পাঁচ থেকে দশ মিনিট। তবে এই সময়সীমা যদি ৩০ মিনিটের হয়, তবে চীনের মতো জায়গায় রফতানির সম্ভাবনা থাকবে।

সংস্থাটি জানিয়েছে ২০২৩ সালের মধ্যে যাতে এটিকে বাস্তবে পণ্য হিসেবে বানানো যায় সেজন্য তারা আরো পরীক্ষা, টেকনোলজি ডেভলপ এবং সুরক্ষা বিধিগুলি নিশ্চিত করবে।

আপাতদৃষ্টিতে ফ্লাইং কার যাতায়াতের নতুন মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হলেও এটির গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যে যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ব্যাপার তা বলার উপক্ষা রাখে না। ডিজাইন, নিরাপত্তা,পরিবেশ, নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ উৎপাদন মূল্য, ওড়ার ছাড়পত্র পাওয়া এই সমস্যাগুলি এর বাণিজ্যিকরণের প্রথে প্রধান অন্তরায়। এখন এটাই দেখার বিষয় ফ্লাইং কার কখন এই বাধাগুলি অতিক্রম করতে সক্ষম হবে এবং একে কখন আমরা ইন্টারনেটের দুনিয়ার বাইরে সামনাসামনি চাক্ষুষ করতে করতে পারবো।

Show Full Article
Next Story
Share it