Free Fire অনলাইন গেম ব্যান করা উচিত? প্রায় ১ লক্ষ টাকা নষ্ট করলো দুই স্কুল পড়ুয়া

মধ্যপ্রদেশে কিশোরের মৃত্যুর ক্ষত এখনো শুকোয়নি। অথচ এরই মধ্যে জনপ্রিয় মোবাইল গেম ‘Free Fire’ – এর নেশায় পরিবারের লাখখানেক টাকা লোকসান করে অবশেষে দুই অপরাধী…

মধ্যপ্রদেশে কিশোরের মৃত্যুর ক্ষত এখনো শুকোয়নি। অথচ এরই মধ্যে জনপ্রিয় মোবাইল গেম ‘Free Fire’ – এর নেশায় পরিবারের লাখখানেক টাকা লোকসান করে অবশেষে দুই অপরাধী নিজেদের দোষ স্বীকার করলো। তবে এক্ষেত্রে তাদের কড়া শাস্তি দেওয়ার কোন উপায় নেই, কারণ তারা পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্য যাদের বয়স যথাক্রমে ১২ এবং ১৪ বছর!

ঠিকই পড়েছেন, উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা জেলার ঘটনা। সেখানে দুই স্কুলপড়ুয়া শুধুমাত্র গেম খেলার চক্করে মা-বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে লাখখানেক টাকা নষ্ট করে ফেলেছে। এখন কেউ আমাদের ভুল শুধরে দিয়ে বলতে পারেন যে ‘নষ্ট’ নয় ওটা ইন-গেম পার্চেজ বাবদ প্রদেয় অর্থ যা গেম প্রস্তুতকারী সংস্থার হকের টাকা! একদম ঠিক, ঘন্টার পর ঘন্টা ছেলেমেয়েদের মোবাইলে বুঁদ করে রাখা এই গেমগুলি এভাবে ‘হকের টাকা’ নিয়েই নিজেদের ব্যবসা বাড়াচ্ছে! যদিও এর জন্য ভুগছে কিন্তু সাধারণ মানুষ। সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েরাই নেশার ঘোরে বোধ হারাচ্ছে, বাবা-মায়ের কষ্টার্জিত অর্থ তারা নিমেষে তুলে দিচ্ছে গেম প্রস্তুতকারী সংস্থার হাতে। আর এসবের ফলে সমস্যায় পড়ছেন অভিভাবকেরা।

উপরোক্ত পরিস্থিতির সাম্প্রতিকতম সাক্ষ্য হিসেবে এবার উত্তরপ্রদেশের ঘটনাটি বর্ণনা করা যাক। সেখানে গোন্ডা জেলার ১২ ও ১৪ বছর বয়সী পূর্বোক্ত কিশোরদ্বয় অভিভাবকের অ্যাকাউন্ট থেকে যথাক্রমে ৭,০০০ ও ৯০,০০০ টাকা খরচ করে ফেলেছে। ফ্রি ফায়ার (Free Fire) খেলার সময় ডায়মন্ড এবং অন্যান্য ইন-গেম আইটেম কেনার জন্যই তারা এই বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করেছে বলে সংবাদ। পুরো ঘটনায় স্তম্ভিত অভিভাবকেরা দেশে ফ্রি ফায়ার গেম ব্যান করার দাবী জানিয়েছেন।

অ্যাকাউন্ট থেকে বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়ে গেলেও, দুই কিশোরের অভিভাবক তা টের পান অনেক পরে। বাচ্চাদের স্কুল ফি দাখিলের জন্য তারা যখন ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে যান, তখন আবিষ্কার করেন যে অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সাইবার জালিয়াতির কথা মনে হলেও পুলিশের কাছে গেলে প্রকৃত সত্য সামনে আসে। দেখা যায় গেমের নেশায় বুঁদ দুই সন্তান মা-বাবার অজান্তে তাদের ইউপিআই (UPI) সংক্রান্ত তথ্য জেনে টাকা খরচ করে ফেলেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে Free Fire নামটি আবারও বিতর্কে উঠে আসে।

অবশ্য এই ঘটনা নতুন নয়। সাইবার-জালিয়াতির পাশাপাশি গেমের নেশায় বাচ্চাদের টাকা নষ্টের সংখ্যাও উর্ধ্বমুখী। এক্ষেত্রে ফ্রি ফায়ারের নাম দিন দিন কুখ্যাত হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে সারা দেশজুড়ে গেমটি ব্যান করার দাবী উঠছে। এমনকি এই মর্মে বিচারক নরেশ কুমার লাকা প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত চিঠি লিখেছেন। Free Fire -এর সাথে তিনি PUBG Mobile গেমটির ভারতীয় ভার্সনের উপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবী তুলেছেন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন