ভয়ংকর দুর্ঘটনার শিকার এক ব্যক্তির প্রাণ বাঁচালো Google Pixel স্মার্টফোন

স্মার্টফোনের আগমন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে যে আরও সহজ করে তুলেছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। মুঠোফোনের উপযোগিতার জৌলুসে এর চর্চিত খারাপ দিকগুলিও এখন হয়ে গেছে…

স্মার্টফোনের আগমন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে যে আরও সহজ করে তুলেছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। মুঠোফোনের উপযোগিতার জৌলুসে এর চর্চিত খারাপ দিকগুলিও এখন হয়ে গেছে ম্লান। তবে আমি যদি বলি স্মার্টফোন একজন ব্যক্তির জীবনসংশয় হওয়া থেকে বাঁচিয়েছে, সেক্ষেত্রে খবরটি কিন্তু নড়েচড়ে বসার মতোই শোনাচ্ছে। আমার আকাশকুসুম কল্পনা নয়, চুক ওয়াকার (Chuk Walkler) নামে জনৈক এক রেডডিট (Reddit) ব্যবহারকারী তাঁর এমনই এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতার কথা সম্প্রতি শেয়ার করেছেন।

চুক ওয়াকার জানিয়েছেন, গত বছর নভেম্বরে তিনি তাঁর বাড়ি লাগোয়া একটি ববক্যাট লোডার গাড়ির মধ্যে থাকাকালীন ভয়ংকর দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন। কোনওভাবে গাড়িটি ভারসাম্য হারিয়ে সম্পূর্ণ উল্টে গিয়ে একটি ছোট নালার মধ্যে গিয়ে পড়ে। ফলে গাড়ির এমার্জেন্সি এক্সিট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং বেরোনোর প্রধান দরজাও আংশিকভাবে আটকে যায়। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ওয়াকারের বুঁকের সাতটা পাঁজর এবং মেরুদন্ডের কিছুটা ভেঙে যায়।

তবে ওয়াকার বলেছেন, দুর্ঘটনা ঘটার কয়েক সপ্তাহ আগেই তিনি নিজের Google Pixel 4 XL ফোনের কার ক্র্যাশ ডিটেকশন ( Car crash detection) বা গাড়ি দুর্ঘটনা শনাক্তকরণ ফিচারটি অন করেছিলেন৷ ভাগ্যক্রমে, গুগলের পিক্সেল ফোনের এই বিশেষত্বটিই তাঁর প্রান বাঁচিয়েছে। গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেও পিক্সেল ফোনটি সম্ভাব্য গাড়ি দুর্ঘটনা অনুমান করে স্বয়ং ৯১১ নম্বরে (এমার্জেন্সি টেলিফোন নম্বর) কল করে।

জ্ঞান ফেরার পর, অসহনীয় যন্ত্রণায় ওয়াকার সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকে এবং তখনই সে তাঁর ব্লুটুথ ইয়ারবাডে শুনতে পায় একজনের কন্ঠস্বর, আওয়াজটি ছিল জরুরী অবস্থায় সাহায্য করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এক ব্যক্তির। Walker-কে ব্যক্তিটি বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে তাকে সাহায্যের জন্য তিনি ইতিমধ্যেই লোক পাঠিয়ে দিয়েছেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকারী দল এসে তাকে গাড়ি থেকে বের করে।

সুতারাং, স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, Google Pixel ফোনের ক্র্যাশ ডিটেকশন (crash detection) ফিচারটি এ যাত্রায় ওয়াকারকে বাঁচিয়ে দিল। কৌতুহলী হয়ে ওয়াকার অবশ্য বলেছেন, “ফিচারটি কীভাবে কাজ করে তা জানা খুব মজার বিষয় হবে। আচ্ছা, ৯১১ কী কোনো ডিজিটাল ভয়েস থেকে কল পেয়েছিল?” 

এবার প্রশ্ন হচ্ছে, কার ক্র্যাশ ডিটেকশন বা গাড়ি দুর্ঘটনা শনাক্তকরণ করার পদ্ধতিটি গুগলের পিক্সেল ফোনে কীভাবে কাজ করে? গুগল তাদের সাপোর্ট পেজে লিখেছে, আপনার Pixel 3, 4, 4a, 4a (5G), এবং Pixel 5 বিভিন্ন তথ্য- আপনার অবস্থান, মোশন সেন্সর, এবং আশেপাশের শব্দগুলি বিশ্লেষণের মাধ্যমে কোনও সম্ভাব্য গাড়ি দুর্ঘটনা শনাক্ত করতে পারে। দুর্ঘটনা শনাক্তকরণের জন্য অবস্থান, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং মাইক্রোফোনের অনুমতি প্রয়োজন। যদি আপনার ফোন শনাক্ত করে আপনি গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন এবং সেইসময় জরুরী পরিষেবায় কল করলে, আপনার আনুমানিক অবস্থান এবং গাড়ি দুর্ঘটনার ডেটা অ্যান্ড্রয়েডের এমার্জেন্সি লোকেশন সার্ভিস দ্বারা জরুরী পরিষেবাতে স্থানান্তর হতে পারে।

দুঃখজনকভাবে, ভারতবর্ষে এই ফিচারটি উপলব্ধ নয়। এটি শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, এবং যুক্তরাজ্যে কাজ করে। এদেশে পিক্সেল ফোনের বিক্রি কম হওয়ার কারণেই গুগল সম্ভবত ফিচারটি রোল আউট করেনি। তবে ভবিষ্যতে ভারতেও ফিচারটি চালু হবে বলে আমরা আশা রাখতে পারি।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন