ব্যাংকিং জালিয়াতি রুখতে সরকার চালু করলো এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নম্বর

ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং-এর দৌলতে ব্যাংকের সামনে গিয়ে লম্বা লাইন দেওয়ার দিন প্রায় শেষ। বাড়ি বসেই এখন সেরে নেওয়া যায় ব্যাংকের যাবতীয় কাজ। তবে…

ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং-এর দৌলতে ব্যাংকের সামনে গিয়ে লম্বা লাইন দেওয়ার দিন প্রায় শেষ। বাড়ি বসেই এখন সেরে নেওয়া যায় ব্যাংকের যাবতীয় কাজ। তবে এই পরিষেবার সুবিধা যেমন আছে, তেমনি অসুবিধাও কম নয়। রোজই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, সাইবার ক্রাইমের ঘটনা। সেক্ষেত্রে, মানুষ এই সব জালিয়াতি সম্পর্কে যতই সজাগ থাকুক না কেন, অপরাধীরা ইদানিং এতটাই মরিয়া হয়ে উঠেছে যে তারা নিত্য নতুন উপায় খুঁজে ঠিক নিজেদের কাজ হাসিল করে যাচ্ছে। ফলত, বিভিন্ন প্রকারের সাবধানতা অবলম্বনের পরও ব্যাংক গ্রাহকদের প্রতারিত হতে হচ্ছে। তাই, নেট ব্যাংকিং ও অন্যান্য অনলাইন আর্থিক জালিয়াতির ঘটনাগুলিকে নির্মূল করার লক্ষ্যে ভারত সরকার একটি নতুন এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে।

কী এই এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নম্বর ?

ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মিলিত উদ্যোগে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে, ১৫৫২৬০ এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নম্বরটি লঞ্চ করা হয়েছিল। সাইবার জালিয়াতি সংক্রান্ত যেকোনো ঘটনার অভিযোগ জানাতে গ্রাহকেরা এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন। এটি অনেকটা ১১২ নম্বরের মতোই কাজ করবে, তবে এর কার্যকারিতা হবে আরো দ্রুত। সেক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, বর্তমানে শুধুমাত্র দিল্লি ও রাজস্থানের বাসিন্দাদের জন্য এই নম্বরটি উপলব্ধ। তবে শীঘ্রই অন্যান্য রাজ্যর মানুষও পরিষেবাটি উপভোগ করতে পারবেন।

কী ভাবে কাজ করবে এই এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নম্বর ?

১. সাইবার ক্রাইম বা ব্যাংকিং জালিয়াতির ঘটনাগুলি রুখতে, ব্যাংক সংস্থাগুলি এসএমএস বা বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মারফৎ তাদের গ্রাহকদের সচেতন করে। সেক্ষেত্রে, এমন বহু গ্রাহক আছেন যারা বিষয়টিকে গাম্ভীর্যের সাথে নেয় না ও পরবর্তী সময়ে জালিয়াতির শিকার হয়। সেক্ষেত্রে, এইরকম প্রতারিত গ্রাহকদের প্রথমেই পুলিশ অফিসার দ্বারা পরিচালিত হেল্পলাইনে কল করতে হবে।

২. যদি জালিয়াতির ঘটনার সময়কাল ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে যায়, তবে হেল্পলাইন থেকে ভুক্তভোগীকে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করতে বলা হবে।

৩. আর যদি জালিয়াতির ঘটনাটি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটে থাকে, তবে হেল্পলাইনে থাকা অপারেটর ভুক্তভোগীর থেকে তার ব্যক্তিগত তথ্য এবং অপরাধের বিশদ বিবরণ চেয়ে একটি ফর্ম ফিল-আপ করবে।

৪. এর পরের ধাপে ফিনান্সিয়াল ইন্টারমিডিয়ারিস (financial intermediaries) বা এফআই প্রতিষ্ঠানে এই তথ্য পৌঁছানো হলে, একটি টিকিট দেওয়া হবে প্রতারিতকে।

৫. এরপর, এই প্রতারণামূলক লেনদেনের টিকিট -টি প্রতিষ্ঠানটির ডেবিটেড এফআই (ভুক্তভোগীর অ্যাকাউন্ট, যার থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে) এবং ক্রেডিটেড এফআই (অপরাধীর অ্যাকাউন্ট বা ওয়ালেট, যেখানে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে) উভয় ড্যাশবোর্ডে দেখা যাবে।

৬. যে ব্যাংক বা ওয়ালেটটিতে টিকিট জমা দেওয়া হয়েছে, সেটির প্রতারণামূলক লেনদেনের বিশদ পরীক্ষা করা হবে।

৭. যদি টাকা অপরাধীর অ্যাকাউন্ট বা ওয়ালেটে ইতিমধ্যে চলে যায়, তবে সেই লেনদেনের তথ্য পোর্টালে দেখানো হবে এবং সেটিকে পরবর্তী এফআই প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হবে।

৮. যদি লেনদেন সংক্রান্ত ফান্ড উপলব্ধ না থাকে, তবে সেটিকে অস্থায়ী ভাবে হোল্ডে রেখে দেওয়া হবে।

৯. এক্ষেত্রে, ফান্ড আসা ততক্ষন চালু থাকে যতক্ষণ না সেটিকে অস্থায়ী ভাবে হোল্ডে রেখে দেওয়া হচ্ছে অথবা ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের থেকে সেটিকে পুরোপুরো বের করে দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে এটিএম (ATM) উইথড্রয়াল, স্বশরীরে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে উইথড্রয়াল ও ইউটিলিটি বিকল্প সামিল আছে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন