আসন্ন প্রোডাক্টের তথ্য হাতিয়ে Apple এর কাছে প্রায় ৩৭৪ কোটি টাকা দাবি হ্যাকারদের

হ্যাকারদের বিশ্বে বোধহয় প্যান্ডেমিক নেই, তাই তাদের দুষ্কর্মে কখনোই ইতি পড়েনা। এবার তাদের নয়া শিকার মার্কিন বহুজাতিক সংস্থা অ্যাপল (Apple)। ঠিকই পড়ছেন, সম্প্রতি হ্যাকারেরা অ্যাপলের…

হ্যাকারদের বিশ্বে বোধহয় প্যান্ডেমিক নেই, তাই তাদের দুষ্কর্মে কখনোই ইতি পড়েনা। এবার তাদের নয়া শিকার মার্কিন বহুজাতিক সংস্থা অ্যাপল (Apple)। ঠিকই পড়ছেন, সম্প্রতি হ্যাকারেরা অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং তার বিনিময়ে সংস্থার কাছ থেকে মোটা টাকা দাবী করে। এই অর্থ তুলে না দিলে তারা চুরি করা সমস্ত গোপন তথ্য ডার্ক ওয়েবে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দেয়। চলুন ব্যাপারটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আসলে সরাসরি অ্যাপল (Apple) নয়, বরং তাদের সহযোগী সংস্থা কোয়ান্টা-র (Quanta) কাছ থেকেই হ্যাকারেরা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে অ্যাপলের (Apple) আসন্ন ম্যাকবুক (MacBook) ও অন্যান্য কয়েকটি প্রোডাক্টের ডিজাইন সহ সংস্থার উৎপাদনজনিত অগণিত জরুরি ডেটা। মূলত সাইবার হামলার মাধ্যমে হ্যাকারেরা এত বড় একটা ঘটনা ঘটাতে পেরেছে। এই হামলার পিছনে রয়েছে রাশিয়ান হ্যাকারদের সংগঠন Revil, যারা তথ্য ডাকাতির পর থেকে বড় অঙ্কের টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে কোয়ান্টা (Quanta) তথা অ্যাপলের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরী করে চলেছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ ডার্ক-ওয়েবে ফাঁস না করার বিনিময়ে তারা অ্যাপলের কাছে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৩৭৪ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা) দাবী করেছে! শুধু তাই নয়, তথ্য ডাকাতির প্রমাণস্বরূপ তারা ইতিমধ্যেই অ্যাপলের নতুন আইম্যাকের (iMac) ডিজাইন সংক্রান্ত ২১টি স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে এনেছে। আগামী দিনে তারা অ্যাপলের M1 MacBook Air এবং আরো একটি আসন্ন ল্যাপটপের ডায়াগ্রাম ডার্কওয়েবে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ফলে পুরো বিষয়টি নিয়ে অ্যাপল (Apple) এবং তার সহযোগী সংগঠন আপাতত বেশ বিড়ম্বনার শিকার।

প্রাথমিকভাবে রাশিয়ান হ্যাকারদের সংগঠন Revil, অ্যাপলের বদলে কোয়ান্টা-র কাছেই খেসারত হিসেবে বড় অঙ্কের অর্থ দাবী করে। অ্যাপলের সহযোগী সংস্থা এ বিষয়ে অসম্মত হলে তখন তারা সরাসরি অ্যাপলকে উদ্দেশ্য করে এগোতে থাকে। সংস্থার উপরে উত্তরোত্তর চাপ বৃদ্ধির উপায় হিসেবে তারা ক্রমাগত ব্ল্যাকমেলিংয়ের পথ বেছে নেয়। খেসারতের অঙ্ক মিটিয়ে দেওয়ার জন্য তারা অ্যাপলকে ১লা মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে অ্যাপল এখনো কোন নরম সুরে কথা বলেনি।

অ্যাপলের মতো সংস্থা হ্যাকিংয়ের কবলে পড়ার ফলে বিশ্বের প্রযুক্তি মহলে রীতিমতো শোরগোল তৈরী হয়েছে। যাদের কাছ থেকে তথ্য চুরি গিয়েছে, সেই কোয়ান্টা কম্পিউটার (Quanta Computer) নিজেও কোন এলেবেলে সংস্থা নয়। অ্যাপল ছাড়াও HP, Dell, Microsoft, Lenovo, Toshiba সহ বিভিন্ন প্রথম সারির ল্যাপটপ প্রস্তুতকারকের সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। ফলে হ্যাকারদের সাথে যুঝবার ক্ষেত্রে এই বৃহৎ সংস্থাদ্বয় ভবিষ্যতে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেদিকে সকলের নজর থাকবে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন