দু'বছরের মধ্যে ভারতে বিশেষ ধরনের টু-হুইলার লঞ্চ করবে Honda, পেট্রলের উপর নির্ভরশীলতা কমবে
বর্তমানে ভারতের পেট্রোল-ডিজেলের দাম মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের পকেটকে গড়ের মাঠ করে তুলছে। এক মাসের জ্বালানির খরচ জোগাতে...বর্তমানে ভারতের পেট্রোল-ডিজেলের দাম মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের পকেটকে গড়ের মাঠ করে তুলছে। এক মাসের জ্বালানির খরচ জোগাতে নাভিশ্বাস উঠছে, দেশে এমন মানুষের সংখ্যাই সিংহভাগ। ফলে একদিকে যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অর্থনীতির বেহাল দশা কেন্দ্রকে ভাবাচ্ছে, অপরদিকে দোসর হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা পরিবেশ দূষণের মাত্রা। তাই সরকার বর্তমানে বিকল্প জ্বালানিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি খণিজ জ্বালানির আমদানি কমিয়ে রাজকোষের ঘাটতি মেটাতেও তৎপর কেন্দ্র। আর তাই গাড়ি নির্মাতা একাধিক সংস্থাকে ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ জীবাশ্ম জ্বালানি ও জৈব জ্বালানি (ইথানল ও মিথানল)-তে চলতে সক্ষম এমন ফ্লেক্স-ফুয়েল (Flex-Fuel) ইঞ্জিন নির্মাণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এতে এক ঢিলে বেশ কয়েকটি পাখি মারার মতো উপায় দেখছে সরকার। জৈব জ্বালানির ব্যবহার বাড়লে পেট্রোলে আমদানির পরিমাণ কমে আসবে। আবার পরিবেশবান্ধব হওয়ায় এ থেকে দূষণের পরিমাণ কমবে। আবার বেশি পরিমাণে ইথানল বা মিথানল পেট্রলে মেশানোর ফলে জ্বালানির দাম কমে আসবে, এতে সুরাহা মিলবে সাধারণ মানুষের। এদিকে কেন্দ্রের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম টু-হুইলার নির্মাতা হন্ডা মোটরসাইকেল অ্যান্ড স্কুটার ইন্ডিয়া বা HMSI এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চলেছে বলে নিশ্চিত করল। হন্ডা জানিয়েছে আগামী দু'বছরের মধ্যে তারা দেশে ফ্লেক্স-ফুয়েল ইঞ্জিন পরিচালিত টু-হুইলার নিয়ে আসবে।
এই প্রসঙ্গে সংস্থার ভারতীয় শাখার সভাপতি আতসুশি ওগাটা বলেন, ২০২৪-এর মধ্যেই যাতে এই জাতীয় স্কুটার ও মোটরসাইকেল নিয়ে আসা যায়, সেজন্য তারা কাজে হাত লাগিয়েছে। তাঁর কথায়, “আমরা মনে করি আগামী ১০ বছর পরেও প্রথাগত জ্বালানি গাড়ির বিক্রি বাড়তেই থাকবে। সরকারের এই নীতি ইতিবাচক। বায়োফুয়েল প্রযুক্তি নিশ্চিতরূপে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান, যা তেলের আমদানি কমিয়ে আনবে।”
এদিকে ব্রাজিলের বাজারে দু'রকম জ্বালানিতে সম্পূর্ণ চলতে সক্ষম এমন গাড়ি নিয়ে এসেছে হন্ডা। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে এই জাতীয় যানবাহনের জনপ্রিয়তা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে ওগাটা জানান, “ব্রাজিলে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফ্লেক্স-ফুয়েল গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। যেখানে ইউরো-৬ নির্গমন বিধি মেনে গাড়ি চালানো হয়। ভারত ইউরো-৫ বিধির একটি বিকল্প অনুসরণ করে। আমরা দেখছি ভারতে কত পরিমাণ ইথানল মেশানো যায়, যাতে জ্বালানির কার্যকারিতায় কোনো প্রভাব না পড়ে।”
প্রসঙ্গত, দেশে পেট্রোল ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যানবাহনের বিক্রি কমতে দেখা গিয়েছে। যেমন ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের তুলনায় গত আর্থিক বছরে হন্ডার স্কুটার ও বাইকের বিক্রি ৫৫ লক্ষ থেকে কমে ৩৪.৭ লক্ষে নেমে এসেছে। এদিকে গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২৫-এর মধ্যে পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল মেশানোর লক্ষ্যমাত্রার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এ দেশে বর্তমানে পেট্রোলে ৮.৫% ইথানল মেশানো যায়। চলতি বছরে অবশ্য সেটা ১০% করার পথে এগোচ্ছে কেন্দ্র।