App ban: ফের ২৩২টি চীনা বেটিং ও লোন প্রদানকারী অ্যাপ ব্যান করল ভারত সরকার

চীনের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর বিগত দু-বছরে কয়েকশো জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। তবে বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক…

চীনের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর বিগত দু-বছরে কয়েকশো জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। তবে বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক যে আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, তা সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট থেকে আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল। সংবাদসংস্থা এএনআই (ANI)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার খাতিরে আবারও ২৩০ টিরও বেশি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করতে চলেছে ভারত সরকার। জানা গিয়েছে, ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক (Ministry of Electronics and Information Technology) ভারতে বেটিং এবং লোন পরিষেবা সরবরাহকারী ২৩২ টি অ্যাপ্লিকেশন ব্লক করার পরিকল্পনা করেছে। এই ২৩২ টি অ্যাপের মধ্যে ১৩৮ টি বেটিং অ্যাপ এবং ৯৪ টি লোন-লেন্ডিং অ্যাপ রয়েছে। সরকারের প্রসার ভারতী নিউজ (Prasar Bharati News) জানিয়েছে যে, ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, ভারতের প্রতিরক্ষা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং জনসাধারণের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে ক্ষতিকর – এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য এই অ্যাপগুলিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

খুব শীঘ্রই ২৩২ টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করতে পারে ভারত

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (Ministry of Home Affairs) অনুরোধে আগামী দিনে ২৩২টি বেটিং ও লোন সার্ভিস অ্যাপ নিষিদ্ধ করতে পারে ভারত সরকার। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯ নম্বর ধারায় এই অ্যাপগুলিকে ব্লক করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। তবে নিষিদ্ধ অ্যাপগুলির (অর্থাৎ কোন কোন অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যান হবে) কোনো অফিসিয়াল তালিকা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, এই মোবাইল অ্যাপগুলি প্রাথমিকভাবে ইউজারদেরকে অল্প সুদে ঋণ নেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করতো, কিন্তু তারপরে বছর শেষে গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা আদায় করে নিতো।

সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই অ্যাপগুলি চীনা ষড়যন্ত্রকারীদের মস্তিষ্কপ্রসূত। এদেশে এই অ্যাপগুলিকে পরিচালনা করার জন্য অ্যাপ নির্মাতা সংস্থাগুলি ভারতীয়দেরকে নিয়োগ করতো বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মানুষের অসুবিধার সুযোগ নিয়ে বছর শেষে ৩,০০০ শতাংশ পর্যন্ত সুদের বোঝা তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হতো। সেক্ষেত্রে যারা ঋণের পরিমাণ বা সুদ পরিশোধ করতে পারতেন না, তাদেরকে অযথা হয়রানির স্বীকার করে তুলতো চীনা অ্যাপ্লিকেশনগুলির প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিরা। এমনকি অশ্লীল ছবি, মেসেজ প্রেরণ করার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের গোপন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়ঙ্কর হুমকিও দেওয়া হতো বলে খবর মিলেছে।

ভবিষ্যতে আরও অনেক চীনা অ্যাপ ব্যান করতে পারে ভারত

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, সরকার ছয় মাস আগে ২৮ টি চীনা লোন-লেন্ডিং অ্যাপের কার্যক্রম ট্র্যাক করেছিল। পরবর্তীকালে অনুমোদিত অ্যাপ স্টোর ও অন্যান্য থার্ড-পার্টি লিঙ্কে এই ধরনের ৯৪ টি অ্যাপের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে সরকারের নির্দেশে অথোরাইজড অ্যাপ স্টোর থেকে এই ধরনের বহু অ্যাপ সরিয়ে নেওয়া হলেও থার্ড-পার্টি সাইটগুলিতে বর্তমানে প্রচুর অনৈতিক বেটিং অ্যাপ উপলব্ধ রয়েছে, যেগুলি ইউজাররা অতি অনায়াসেই ডাউনলোড করে নিতে পারেন। উল্লেখ্য, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক হালফিলে একটি নির্দেশিকায় জানিয়েছে যে, যেহেতু ভারতের বেশিরভাগ অংশে বেটিং এবং জুয়া খেলা অবৈধ, তাই ভোক্তা সুরক্ষা আইন ২০১৯, কেবল টিভি নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯৫ এবং আইটি বিধি ২০২১-এর বিধান অনুসারে, এই বেটিং প্ল্যাটফর্মগুলি ইউজারদের একেবারেই ব্যবহার করা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা যেভাবে দিন-কে-দিন বেড়েই চলেছে, তাতে ভবিষ্যতে ভারত আরও অজস্র চীনা অ্যাপ ব্যান করবে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।