লক্ষ্য ভারতে উৎপাদন বাড়ানো, এবার বিদেশি প্রিন্টার ও ক্যামেরা আমদানি নিষিদ্ধ করতে চলেছে কেন্দ্র
ভারত সরকার সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি চুক্তি-১ (ITA-1) পাশ করে বিদেশে তৈরি ফোন, ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেট আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা...ভারত সরকার সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি চুক্তি-১ (ITA-1) পাশ করে বিদেশে তৈরি ফোন, ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেট আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এখন আবার জানা গেছে, এই নিষেধাজ্ঞা খুব শীঘ্রই আরো বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের উপরও প্রযোজ্য হতে পারে। যার মধ্যে সামিল থাকছে - প্রিন্টার, হার্ড ড্রাইভ, ক্যামেরা ইত্যাদি৷ আসলে কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে, আমদানি হওয়া যন্ত্রপাতি, ব্যাটারি, সোলার প্যানেল সরঞ্জাম, এবং জেট ইঞ্জিনের মতো প্রোডাক্টের কারণে এদেশের অর্থনীতির উপর পরা প্রভাবকে কিছুটা কমানোর চেষ্টা করছে। একই সাথে, বাইরের দেশে নির্মিত প্রোডাক্টের উপর নির্ভরতা কমাতে ও স্থানীয় উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতেই মূলত এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
ভারতের ক্রমবর্ধমান আমদানি প্রভাবিত করছে GDP রেটকে
একটি দেশের অর্থনীতি অনেকখানিই নির্ভর করে, আমদানি ও রপ্তানিকৃত প্রোডাক্টের পরিমাণের ভারসাম্যের ওপর। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, ভারত বর্তমানে ৪৪৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করছে এবং আমদানির খরচ বার্ষিক ৭১৪ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই করছে। যার অর্থ, প্রতি বছর বাইরের দেশ থেকে জিনিস এদেশে নিয়ে আসার জন্য অতিরিক্তভাবে ৩০০ বিলিয়ন ডলার নিজের পকেট থেকে ব্যয় করছে ভারত।
এই বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়াল জানিয়েছেন, ভারত আমদানির ক্ষেত্রে ১৬.৫% বার্ষিক (YoY) গ্রোথ দেখেছে। যেখানে চলতি বছরে রপ্তানির পরিমাণ মাত্র ৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের এরূপ ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক প্রোডাক্ট আমদানির প্রবণতা 'গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট' বা GDP -এর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। যেমকারণে এখন দেশের সরকার আমদানির পরিমাণ কমিয়ে স্থানীয়ভাবে পণ্য উৎপাদন শুরু করতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি, এই 'মেক-ইন-ইন্ডিয়া' উদ্যোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো গেলে নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সমস্যাও মিটবে।
বাইরে থেকে প্রিন্টার, হার্ড ড্রাইভ ও ক্যামেরার আমদানি নিষিদ্ধ করতে পারে ভারত সরকার
এইচএসএন ৮৭৪১ (HSN 8741) পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত সরকার। যার দরুন, স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি আর বাইরের দেশ থেকে ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট ম্যানুফ্যাকচার করে নিয়ে আসতে পারবে না৷ এই দেশে পণ্যাদি বিক্রি করার জন্য সংস্থাগুলিকে স্থানীয়ভাবে তাদের যাবতীয় গ্যাজেট তৈরী করতে হবে। তবেই একমাত্র ডিভাইসগুলি বাজারে 'এন্ট্রি' পাবে, এই শর্তই রাখা হয়েছে। এখন সরকারের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে এই তালিকা আরো বড় হতে চলেছে। কেননা - প্রিন্টার, হার্ড ড্রাইভ, ক্যামেরা, কী-বোর্ড -এর মতো প্রোডাক্টগুলিকেও নয়া ITA-1 অ্যাক্টের অধীনে নিয়ে আসা হতে পারে।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে কারণ হল, ভারত প্রতি বছর ২০ লক্ষ প্রিন্টার আমদানি করতে ৩৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে। এদিকে ক্যামেরা সহ অন্যান্য প্রোডাক্ট আমদানির জন্য বার্ষিক প্রায় ১৪৪ মিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়। যদি এই গ্যাজেটগুলিকে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে আমাদের দেশকে উল্লেখিত পরিমাণ অঙ্কের টাকা খরচ তো করতেই হবে না, উল্টে ভারত বিশ্বমঞ্চে একটি বড় রপ্তানি কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।