Russia-Ukraine War: যুদ্ধ দেখে স্বাবলম্বী দেশে পরিণত হতে চাইছে ভারত! হাতিয়ার ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি

বিগত প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও খবরের শিরোনামে নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি অতর্কিতে ইউক্রেনে হানা দিয়েছিল রুশ প্রেসিডেন্ট…

বিগত প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও খবরের শিরোনামে নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি অতর্কিতে ইউক্রেনে হানা দিয়েছিল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। এই আক্রমণের পর ইউক্রেনের চতুর্দিকে এখন শুধুই ধ্বংসের ছবি; কোথাও উড়ছে কালো ধোঁয়া, কোথাও আবার পড়ে রয়েছে শয়ে শয়ে মৃতদেহ। ছবির মতো সুন্দর দেশটির এরকম ভয়ঙ্কর পরিণতি হওয়া সত্ত্বেও হাল কিন্তু কোনোমতেই ছেড়ে দিচ্ছে না ইউক্রেন। ক্রমাগত তারা একাধিক দেশের সহায়তায় রাশিয়ান আক্রমণকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, এই যুদ্ধে প্রযুক্তিকে এক অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভারতও যদি কোনোদিন এরকম কোনো যুদ্ধের সম্মুখীন হয়, তার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার লক্ষ্যে এবার সরকারের এক নতুন পরিকল্পনা প্রকাশ্যে এল।

উল্লেখ্য যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ইন্টারনেটকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। একথা কমবেশি সকলেরই জানা যে, মূলত পশ্চিমী এবং ইউরোপীয় দেশগুলিই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে একাধিক উদ্ভাবনীমূলক কাজ করার জন্য জগৎবিখ্যাত। এর ফলে আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলি ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছে। এমত পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটকে। এর আগে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে স্পেস-এক্স (SpaceX)-এর স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট স্টারলিঙ্ক (Starlink) সার্ভিস প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এলন মাস্ক। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর পর, রাশিয়ায় একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপকে ব্যান করে দেওয়া হয়েছে। ফলে খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে, প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করেই রাশিয়াকে হারানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আর এই বিষয়টিকে দেখেই সতর্ক হয়ে গিয়েছে ভারত।

এখন, ইন্টারনেটকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন আমাদের দেশ। প্রকৃতপক্ষে, ভারত নিজেকে এমন একটি দেশ হিসেবে বিকশিত করতে চায়, যার উপর যুদ্ধ আরোপ করা হলে অন্য দেশের সাহায্য নিয়ে ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তিকে যেন তার বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে না হয়। আর এর জন্য কেন্দ্র সরকার সর্বশক্তি দিয়ে জোরকদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে একটি দেশের বিরুদ্ধে ইন্টারনেটকে যেভাবে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সে বিষয়ে ভারতের মতো দেশের উদ্বিগ্ন হওয়া খুবই জরুরি। তাই এমত পরিস্থিতিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হলে ভারতকে অবিলম্বে কাজ শুরু করতে হবে।

সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, ‘আত্মনির্ভর’ প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটসহ একটি স্বাবলম্বী দেশে পরিণত হতে চলেছে ভারত। উল্লেখ্য, দেশকে সর্বতভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে অনেকদিন আগেই সমস্ত ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এবার ভয়ঙ্কর যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেও যাতে ভারত অনায়াসে অন্য দেশের মোকাবিলা করতে পারে, তার জন্য তারা আত্মনির্ভর হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারের মতে, ভারতের নিজস্ব ইন্টারনেট ব্যবস্থা থাকা উচিত, যার ওপর অন্য কোনো দেশের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। ভারতের ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে বাইরের সমস্ত দেশের হাত থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। সেইসাথে দেশের ইন্টারনেটকে আরও সুরক্ষিত করার লক্ষ্যেও যথাযথভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এর জন্য সরকারকে বিদ্যমান নিয়ম এবং পরিকাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে শীঘ্রই ডেটা এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হবে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।