Fish Operated Vehicle: ছোট্ট গোল্ডফিশের সুপ্ত প্রতিভার সন্ধান, গাড়ি চালাতে শিখল সে! দেখুন ভিডিও

“প্রতিভা সবারই আছে। কিন্তু আপনি যদি একটি মাছকে গাছে চড়ার সক্ষমতা দিয়ে বিচার করেন তাহলে সে নিজেকে অথর্ব ভেবেই জীবন পার করে দেবে।” – বিশ্ববরেণ্য…

“প্রতিভা সবারই আছে। কিন্তু আপনি যদি একটি মাছকে গাছে চড়ার সক্ষমতা দিয়ে বিচার করেন তাহলে সে নিজেকে অথর্ব ভেবেই জীবন পার করে দেবে।” – বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন’র খুব সুন্দর একটি উক্তি। একবিংশ শতাব্দীতেও এসেও উদ্ধৃতিটি তার প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি৷ তবে মাছ গাছে উঠতে না পারলেও এখন সে প্রযুক্তির কল্যাণে গাড়ি চালাতে পারছে।

খবরটি শুনে আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা হলেও একদল ইজরায়েলি (Israeli) গবেষক বাস্তবে সত্যিসত্যিই গোল্ডফিশ (Goldfish) প্রজাতির মাছকে দিয়ে এমনই অসাধ্য সাধন করতে পেরেছেন। গোল্ডফিশ খুবই শুভ বলে আমরা মনে করি। বাড়িতে অ্যাকোয়ারিয়ামের মধ্যে রাখলে তার সাধারণত একটাই কাজ – পাক খেয়ে খেয়ে ঘোরা আর খেতে দিলে গপগপ করে খাওয়া। কিন্তু তার বাইরেও গোল্ডফিশের একটি সুপ্ত প্রতিভার খোঁজ পেয়েছেন ওই গবেষকরা।

তারা পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন, গোল্ডফিশ তার নড়নচড়নের মাধ্যমে একটি গাড়ি নিয়ন্ত্ৰণ করতে সক্ষম। কারোর সাহায্য ছাড়াই সে গাড়ি ডানে-বামে ও সামনে-পিছনে ঘোরাতে পারে। তবে সাধারণ গাড়ি নয়। গবেষকরা গোল্ডফিশের ক্ষমতা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি ছোট্ট ব্যাটারিচালিত গাড়ি তৈরি করেছেন। যার নাম দেওয়া হয়েছে ফিস অপারেটেড ভেহিকল (Fish Opearated Vehicle) বা এফওভি (FOV)।

এফওভি খেলনা গাড়ির মতোই দেখতে। তবে এখানে গাড়ির মূল কাঠামোর উপর একটি ছোট্ট অ্যাকোয়ারিয়ামের অনুরূপ জলের ট্যাঙ্ক রাখা রয়েছে৷ তার উপর রয়েছে লিডার সেন্সর। এই রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তিটি স্পন্দিত লেজার আলোর মাধ্যমে গাড়ির অবস্থান এবং জলের ট্যাঙ্কের ভিতরে মাছের অবস্থান সম্পর্কে ডেটা সংগ্রহ করে। আবার ট্যাঙ্কটি যে কাঠামোর উপর অবস্থান করছে তাতে একটি ক্ষুদ্র কম্পিউটার, ক্যামেরা, ইলেকট্রিক মোটর এবং ওমনি ডিরেকশনাল হুইল (সব দিকে ঘুরতে পারে এমন চাকা) লাগানো।

জলের ট্যাঙ্কের ভিতরে গোল্ডফিশ নড়াচড়া করলে গাড়িটি এগোতে থাকে। একটি ওভারহেড সেন্সর মাছের গতিবিধি ধরে রাখে এবং কম্পিউটারে ডেটা পাঠায়। এরপর সেটি ডেটা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে এভওভি’র চলাফেরা নিশ্চিত করে।

গবেষকরা আরও দেখেছেন, যখন একটি গোল্ডফিশকে সঠিকভাবে খাবার দিয়ে প্রশিক্ষিত এবং এফওভি’র মতো উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করলে, তদের গাড়ি চালানো শিখতে বেশি সময় লাগে না। গবেষকদের দাবি, গোল্ডফিশ খুব তাড়াতাড়িই বুঝে গিয়েছিল যে, তারা যে মেশিনের উপরে রয়েছে, যার চলাফেরার সঙ্গে তাদের গতিবিধির একটা যোগসূত্র বতর্মান।

এখনও পর্যন্ত ছ’টি গোল্ডফিশকে গাড়ি চালানোর পাঠ দেওয়া হয়েছে৷ প্রশিক্ষণের জন্য যখনই তারা একটি লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছে, তাদেরকে খাবার দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তবে মানুষ ছাড়া এই প্রথম কোনও প্রাণী গাড়ি চালাতে শিখল এমনটা নয়। এর আগে  কুকুর, বিড়াল, এমনকি ইঁদুরকে দিয়ে গাড়ি চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

অ্যাকোয়ারিয়ামের মধ্যে কারোর সাতেপাঁচে না থাকা আপনার পোষ্য গোল্ডফিশ শুধু পাক খেয়ে ঘুরতে আর গপগপ করে খেতে পারে – বিজ্ঞানীদের নতুন অনুসন্ধান এই ধারণা ভাঙল বৈকি!