DART Mission: গ্রহাণু বধ করতে আগামীকাল মহাকাশযান পাঠাতে চলেছে নাসা, লাইভ কীভাবে দেখবেন

পৃথিবীর দিকে বড়োসড়ো আকারের গ্রহাণুর ধেয়ে আসার খবর প্রায়শই পাওয়া যায়। আর বড়ো আকারের গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত করলে কী হবে – এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর…

পৃথিবীর দিকে বড়োসড়ো আকারের গ্রহাণুর ধেয়ে আসার খবর প্রায়শই পাওয়া যায়। আর বড়ো আকারের গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত করলে কী হবে – এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর খুঁজতে দিনকয়েক আগে বিশ্বখ্যাত মহাকাশকেন্দ্রিক গবেষণা সংস্থা, NASA (নাসা) এক অত্যাশ্চর্য নতুন মিশন লঞ্চ করার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গিয়েছিল, এবং অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এসে উপস্থিত হয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে পৃথিবীর দিকে কোনো দৈত্যাকার গ্রহাণু ধেয়ে আসছে না, কিন্তু যদি কখনো আসে তাহলে তা প্রতিরোধ করতে NASA সম্প্রতি একটি প্ল্যানেটারি ডিফেন্স টেস্ট (planetary defence test) আয়োজন করতে চলেছে।

এই টেস্টের মাধ্যমে নাসা ঘন্টায় ১৫,০০০ মাইল (অর্থাৎ ঘন্টায় ২৪,০০০ কিলোমিটার) বেগে ধাবমান একটি মহাকাশযানের (spaceship) সাথে আগামী বছর একটি গ্রহাণুর সংঘর্ষ ঘটাতে চায়। এই Double Asteroid Redirection Test (DART)-এর মূল উদ্দেশ্য হল, সংঘর্ষের দ্বারা গ্রহাণুটিকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করে তার প্রকোপ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করা যাবে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা। DART স্যাটেলাইটটি ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেস (Vandenberg Space Force Base) থেকে SpaceX Falcon 9 রকেটের মাধ্যমে ২৪ নভেম্বর সকাল ১:২১ ইএসটি-তে উৎক্ষেপণ করা হবে। ভারতীয়রা সকাল ১১:৫০-এ এই অত্যাশ্চর্য ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী হতে পারবেন।

নাসা ডার্ট মিশনের লাইভ লঞ্চ কভারেজ ভারতীয় সময় সকাল ১১:০০ টায় শুরু হবে। দর্শকরা NASA টেলিভিশন, NASA অ্যাপ এবং NASA-র অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এই লাইভ কভারেজ দেখতে পারেন। নীচে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করেও আপনি এই মিশনটি লাইভ দেখার সুযোগ পাবেন

এমনিতেই মহাকাশ সম্বন্ধীয় অজানাকে জানতে প্রচুর মানুষেরই বিশাল উৎসাহ থাকে, তার ওপর এই ধরনের অত্যাশ্চর্য মিশন সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ যে আকাশচুম্বী হবে, সেটা খুবই স্বাভাবিক। তাই উৎসাহীদের আগ্রহের খিদে মেটাতে নাসা গত ২১ নভেম্বর থেকেই এই মিশনের প্রিলঞ্চ এবং এর সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু আপডেট আগ্রহীদের দিতে শুরু করেছে। ইউজাররা #DARTMission হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে Twitter, Facebook, এবং Instagram-এর মাধ্যমে এই মিশন সম্পর্কে আপডেট পেতে পারেন। আবার, রেগুলার আপডেটের জন্য @NASA, @AsteroidWatch, @NASASocial এবং @NASA_LSP-এর মতো নাসার Twitter অ্যাকাউন্টগুলিতে চোখ রাখা যেতে পারে। এছাড়া Facebook এবং Instagram থেকে আপডেট পাওয়ার জন্য যথাক্রমে https://www.facebook.com/NASA/ এবং https://www.instagram.com/nasa/ লিঙ্কে ক্লিক করুন।

আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, যদি DART স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণটি সঠিকভাবে এই বছরে যথাসময়ে হয়, তবে আগামী বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবরের মধ্যে পৃথিবী থেকে ৬.৮ মিলিয়ন মাইল দূরত্বে এটি Didymos নামে একটি বিশাল গ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষ করবে। এই Didymos হল একটি বাইনারি গ্রহাণু। এর প্রাথমিক বডি সেকেন্ডারি বডি Dimorphos থেকে ২৫৫৯ ফুট দূরে রয়েছে। ৫২৫ ফুট ব্যাসের এই সেকেন্ডারি বডিকেই বলা হয় moonlet, এবং এটিই আসলে পৃথিবীর জন্য বেশি ক্ষতিকর। জানা গেছে যে, সংঘর্ষের আগে মহাকাশযান থেকে বেরিয়ে আসবে Italian Space Agency-র নির্মিত একটি ক্যামেরা, যা দুই বস্তুর সংঘর্ষ রেকর্ড করে যাবতীয় তথ্য জোগাড় করবে। ভবিষ্যতে সত্যিই যদি পৃথিবীর দিকে বড়ো মাপের কোনো গ্রহাণু ধেয়ে আসে, তাহলে সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে গ্রহাণুটির গতিপথ পরিবর্তন বা সেটিকে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস করা যাবে কি না তা আগে থেকেই নিশ্চিত করে রাখতে নাসার এই অত্যাশ্চর্য মিশনের দিকে যে গোটা পৃথিবী অধীর আগ্রহে চোখ রেখে বসে আছে, তা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।