সোশ্যাল মিডিয়ায় কোভিডের জন্য সাহায্যে চাইলে বা সরকারকে সমালোচনা করলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নয়, জানালো সুপ্রিম কোর্টের

ইদানিংকালে যখন কোভিড সুনামিতে সমগ্র দেশ ব্যাপকভাবে জর্জরিত এবং দেশজুড়ে অক্সিজেন সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীর চরম আকাল দেখা দিয়েছে, তখন কোভিড রোগী বা তাদের…

ইদানিংকালে যখন কোভিড সুনামিতে সমগ্র দেশ ব্যাপকভাবে জর্জরিত এবং দেশজুড়ে অক্সিজেন সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীর চরম আকাল দেখা দিয়েছে, তখন কোভিড রোগী বা তাদের পরিবার চিকিৎসা সহায়তা পাওয়ার জন্য দ্বারস্থ হচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। সংক্রামিত ব্যক্তিরা বা তাদের পরিবার অক্সিজেন সরবরাহ এবং অন্যান্য চিকিৎসা সহায়তার জন্য যেমন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে SOS মেসেজ পোস্ট করতে বাধ্য হচ্ছেন, তেমনি অনেকে অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতি বা প্রয়োজনীয় ওষুধের অনুপলব্ধতার বিষয়ে নিজেদের ক্ষোভ ও অভিযোগ উগরে দিচ্ছেন।

এই ভয়াবহ সময়ে, ইউপি সরকারের মতো কিছু রাজ্য সরকার সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যে চাওয়ায় কোভিড রোগী বা তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করছে। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, কিছু লোক সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অনলাইনে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে ও মিথ্যা অভিযোগ করছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার সম্প্রতি আদেশ দিয়েছিল যে, যারা কোভিড-১৯ এর জন্য সাহায্য চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা আবেদন করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর দেওয়ানি ও ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে শুক্রবার দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এবং বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ দেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি পরিচালনা সম্পর্কিত বিষয়গুলি পরীক্ষা করার জন্য একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানি করছে। এদিন সুপ্রিম কোর্ট দ্ব্যর্থহীন জোরালো বিবৃতিতে সমস্ত রাজ্য ও রাজ্যগুলির ডিজিপিকে কঠোর বার্তা দিয়ে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে, কোভিড-১৯ এর জন্য চিকিৎসা সহায়তা বা অক্সিজেন সরবরাহের জন্য সাহায্য চেয়ে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। তদুপরি, নাগরিকদের সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে কোনও বাধা দেওয়া যাবে না, এবং অভিযোগগুলিকে ভুল বলা যাবে না।

সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে যে, যদি এই ধরনের কাজ করার জন্য সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা নেয় বা তাকে হয়রানির শিকার হতে হয়, তবে তা সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা হিসেবে পরিগণিত হবে।

তবে যতই বিতর্কের সৃষ্টি হোক না কেন, একথা ঠিক যে বর্তমানে কোভিডের দ্বিতীয় সংক্রমণকালে টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুক সহ সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও সক্রিয় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এই বিপজ্জনক করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে-কোনো সময় যে-কোনো রকম সাহায্যের জন্যই সাধারণ মানুষ এই প্ল্যাটফর্মগুলিকে ব্যবহার করছেন। হাজার হাজার নাগরিক তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা ও সমস্যার কথা পোস্ট করছেন। একাধিক সেলিব্রিটি এবং প্রভাবশালী সামাজিক ব্যক্তিত্বরা এই পোস্টগুলি দেখছেন এবং তার ফলে প্রয়োজনীয় যথাযথ ব্যবস্থা সময়মতো নিতে উদ্যোগী হচ্ছেন। ফলে এই প্ল্যাটফর্মগুলি থেকে জনগণের প্রাপ্ত সাহায্যের পরিমাণ বেড়েছে কয়েকগুণ।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন