র‍্যাগিংয়ের শিকার বহু Alexa নামের মেয়ে, Amazon-কে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের নাম পরিবর্তন করার আর্জি

Amazon-এর ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট Alexa ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বে বিপুলভাবে জনপ্রিয়। মুখের কথা খসাতেই তৎক্ষণাৎ সেই কার্য সম্পাদন করতে বেশ পটু Alexa। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে এই যন্ত্র…

Amazon-এর ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট Alexa ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বে বিপুলভাবে জনপ্রিয়। মুখের কথা খসাতেই তৎক্ষণাৎ সেই কার্য সম্পাদন করতে বেশ পটু Alexa। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে এই যন্ত্র প্রয়োজন অনুসারে খবর পড়া, আবৃত্তি করা, এমনকি জোকসও বলতে পারে। তবে এবার এই বহুল জনপ্রিয় Alexa-র জন্যই এক বিচিত্র সমস্যার মুখোমুখি হল Amazon। না, Alexa চালিত ডিভাইসে কোনো বাগ বা কোনো নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি পাওয়া যায়নি, বরং এই Alexa নামটিই Amazon-এর জন্য সমস্যার সৃষ্টি করেছে! সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে অ্যালেক্সা নামের বেশ কয়েকটি মেয়েকে তাদের স্কুলে নিরলস উৎপীড়নের শিকার হতে হয়েছে, এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উৎপীড়নের মাত্রা এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে তাদের মধ্যে কেউ কেউ বাধ্য হয়ে স্কুল পরিবর্তন করে ফেলেছে। তাই অভিভাবকরা এখন Amazon-এর এই ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের নাম পরিবর্তন করার জন্য সংস্থার কাছে আর্জি জানিয়েছে।

BBC-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, Amazon-এর ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট Alexa-কে কোনো কাজ মুখে বললেই সে যেমন তৎক্ষণাৎ সেটি সম্পাদন করে, ঠিক সেরকমভাবেই অ্যালেক্সা নামের কোনো মেয়ের নাম জোরে ডেকে অন্যান্য সহপাঠীরা তাকে একটি কার্য সম্পাদনের নির্দেশ দিয়ে র‍্যাগিং করছে। এবং কাজটিকে কেন্দ্র করে ঠাট্টা-তামাশা, ইয়ার্কি, হাসিমজার যে সৃষ্টি হবে সেটা তো খুব স্বাভাবিক ব্যাপার! ফলে অ্যালেক্সা নামের মেয়েদের মনে চরম বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং তারা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই স্কুলে নিরলস উৎপীড়নের শিকার হওয়া অ্যালেক্সা নামের মেয়েদের অভিভাবকরা Amazon-এর কাছে তাদের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের নাম পরিবর্তন করার অনুরোধ করেছে, এবং সাথে এও বলেছে যে তারা যাতে সেটির এমন কোনো নাম দেয় যা সাধারণভাবে কোনো মানুষের নাম নয়।

নির্মম র‍্যাগিংয়ের শিকার হওয়া অ্যালেক্সা নামের এক মেয়ের মা BBC-কে জানিয়েছেন, ” রসিকতা ও টিটকিরির কারণে আমার মেয়ে কাউকে তার নাম বলতে ভয় পেত। সেকেন্ডারি স্কুল শুরু করার সাথে সাথেই আমার মেয়েকে স্কুলে উৎপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এতে আমার ছোটো মেয়ের মনের ওপর অসম্ভব চাপ পড়লেও প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে এটা বিশেষ কোনো ব্যাপার বলে মনে হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারটি জানালে তারা কোনো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার বদলে বিষয়টির সাথে মানিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তাই অবশেষে আমি আইনত আমার মেয়ের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবং স্কুলটিও পরিবর্তন করে মেয়েকে একটি নতুন পরিবেশে নিয়ে এসেছি, যাতে আমার মেয়ে ভালো থাকে।”

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ২০১৪ সালে Amazon যখন তাদের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্ভিসের কথা ঘোষণা করে। “অ্যালেক্সা” দিয়ে শুরু হওয়া সমস্ত ইকো ডিভাইসগুলি মুখে কোনো কম্যান্ড দিলেই তা তৎক্ষণাৎ পালন করে। এই কার্যকারিতাটিই অ্যালেক্সা নামধারীদের ওপর চরম বিরূপ প্রভাব ফেলে। প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, যুক্তরাজ্যে ৪০০০ জনেরও বেশি মানুষ রয়েছে যাদের নাম অ্যালেক্সা, এবং তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ২৫ বছরের কম।

তবে বিতর্কটিকে কেন্দ্র করে Amazon-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, মানুষের একাধিক কার্য অতি সহজে সম্পাদনের জন্য তারা ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট Alexa-কে নিয়ে এসেছে; তবে এই নামের জন্য যে বেশ কিছু মানুষকে এই নির্মম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হল তার জন্য সংস্থাটি অত্যন্ত দুঃখিত। কঠোর ভাষায় ঘটনাটির নিন্দা করে সংস্থাটি আরও বলেছে যে, অ্যালেক্সা-কে কেন্দ্র করে যে-কোনো ধরনের উৎপীড়ন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, তবে এই নামটি পরিবর্তন করা হবে কি না সে বিষয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে সঠিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন