অনলাইন গেম খেললে এবার দিতে হবে ২৮ শতাংশ কর! নয়া নিয়ম জারি করছে কেন্দ্র সরকার
সাম্প্রতিককালে জিএসটি (GST)-র মত ট্যাক্সের থাবায় রীতিমতো জর্জরিত হয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের জীবন। আসলে জিএসটির আগমনের...সাম্প্রতিককালে জিএসটি (GST)-র মত ট্যাক্সের থাবায় রীতিমতো জর্জরিত হয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের জীবন। আসলে জিএসটির আগমনের পর থেকে যেকোনো পরিষেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রেই এখন অতিরিক্ত গাঁটের খড়ি খসাতে হয় ইউজারদের। তবে এই পরিস্থিতিতে ফের মড়ার (সাধারণ মানুষের) ওপর খাঁড়ার ঘা পড়তে চলেছে বলে মনে হচ্ছে। আসলে নতুন রিপোর্ট বলছে, এবার অনলাইন গেম খেললে আগের থেকে আরও বেশি কর দিতে হবে ব্যবহারকারীদের। সম্প্রতি কেন্দ্রের নয়া ঘোষণায় এমনই খবর সামনে এসেছে।
আপনাদের জানিয়ে রাখি যে বর্তমানে ক্যাসিনো, হর্স রেসিং (ঘোড়দৌড়), কিংবা অনলাইন গেমিংয়ের ওপর ১৮% জিএসটি ধার্য করা রয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই এই জিএসটির পরিমাণ ১৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৮ শতাংশে উন্নীত করতে সম্মত হয়েছে দেশের অর্থমন্ত্রীদের প্যানেল। এ বিষয়ে বাংলার অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) জানিয়েছেন যে, উল্লিখিত পরিষেবাগুলিতে করের যথাযথ মূল্যায়ন করবে মন্ত্রিগোষ্ঠী অর্থাৎ জিওএম (group of ministers বা GoM)। এবং কোন কোন খাতে কী পরিমাণ কর আরোপ করা হবে, সে সম্পর্কে যাবতীয় সিদ্ধান্তও তাঁরাই নেবেন।
উল্লেখ্য, সরকার গত বছর মে মাসে অনলাইন গেমিং, ক্যাসিনো এবং ঘোড়দৌড়ের মতো পরিষেবাগুলিতে জিএসটির সঠিক মূল্যায়নের জন্য প্রতিমন্ত্রীদের একটি প্যানেল গঠন করেছিল। সম্প্রতি মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার (Conrad Sangma) নেতৃত্বাধীন জিওএম গত সোমবার এক বৈঠকে মিলিত হয় এবং এই তিনটি পরিষেবার জন্য প্রযোজ্য জিএসটি-র হার নিয়ে আলোচনা করে। সেখানেই বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রীরা এ বিষয়ে একমত হন যে অনলাইন গেমিং, ক্যাসিনো এবং ঘোড়দৌড় – এই তিনটি পরিষেবাতে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ হারে কর আরোপ করা উচিত।
যদিও এখনও পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে আধিকারিকদের কমিটি একটি রিপোর্ট জমা করবে। তারপর জিওএম-এর আর-একটি বৈঠক হবে এবং সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মন্ত্রীরা। মূলত এই ধরনের গেমিং পরিষেবা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের কথা মাথায় রেখেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে আয়োজিত হতে চলা জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে মন্ত্রিগোষ্ঠীর রিপোর্ট বিবেচনা করা হতে পারে। জানা গেছে যে আট সদস্যের এই প্যানেলে রয়েছেন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার (Ajit Pawar), গুজরাটের অর্থমন্ত্রী কানুভাই প্যাটেল (Kanubhai Patel), গোয়ার পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী মৌভিন গোডিনহো (Mauvin Godinho), তামিলনাড়ুর অর্থমন্ত্রী পি ত্যাগরাজন (P Thiagarajan), উত্তরপ্রদেশের অর্থমন্ত্রী সুরেশ খান্না (Suresh Khanna), এবং তেলেঙ্গানার অর্থমন্ত্রী টি হরিশ (T Harish)।
এই প্রসঙ্গে এএমআরজি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সিনিয়র পার্টনার রজত মোহন (Rajat Mohan) বলেছেন যে অনলাইন গেমিং, ক্যাসিনো, এবং ঘোড়দৌড়ের মতো পরিষেবার মূল্যায়নকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন মামলা ও জলঘোলা চলছে। তাই আশা করা যায় যে, নতুন প্রণয়ন করা বিধিমালার সহায়তায় ট্যাক্স কর্তৃপক্ষের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হবে, এবং সেইসাথে এই খাতটিও বিকাশের সুযোগ পাবে।