কথায় আছে ‘সাবধানের মার নেই!’ রাস্তায় যানবাহন নিয়ে বেরোলে যে অঘটন ঘটবে না, এমনটা নিশ্চিতভাবে বলা কিন্তু অসম্ভব। বিশেষত ভারতের রাস্তা যেখানে ‘অতি দুর্ঘটনা প্রবণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই স্কুটার বা মোটরবাইক নিয়ে রাস্তায় বেরোলে নিজের ও পরিবার পরিজনের সুরক্ষা বজায় রাখাটা খুবই জরুরী। যে কারণে মোটরসাইকেল বা স্কুটার চালানোর সময় হেলমেটের ব্যবহার অত্যাবশ্যক। কিন্তু যদি দূরে কোথাও যেতে হয় – সেক্ষেত্রে কি কেবল হেলমেট যথেষ্ট? একদমই নয়। তখন হেলমেটের সাথে প্রয়োজন আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। যেগুলি ‘সেফটি গিয়ার’ নামে জানা যায়।
এই সেফটি গিয়ার নামের সাথে কাছেপিঠে চলাচলে অভ্যস্ত বাইক চালকরা হয়তো তেমন একটা পরিচিত নন। কিন্তু যারা দ্বিচক্রযানে চেপে দূর-দূরান্তে পাড়ি জমান, তাঁদের কাছে এটি মোটেও নতুন নয়। এখন বিষয় হচ্ছে, রাস্তায় টু-হুইলারের চলাচলের ক্ষেত্রে এই সেফটি গিয়ারের প্রয়োজনীয়তা কোথায়? এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, কাছেপিঠে না হলেও একটু দূরে টু-হুইলারে সফরের ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি থাকে বৈকি। কোনো দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে এই সেফটি গিয়ার। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। নিরাপত্তার দিক থেকে সেফটি গিয়ার হল লাজবাব।
সেফটি গিয়ার কাকে বলে?
সেফটি গিয়ার বা পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট (PPE) কয়েকটি বিশেষ পোশাক ও সরঞ্জাম। যার মধ্যে রয়েছে – হ্যান্ড গ্লাভস, প্রোটেক্টিভ আইওয়্যার, হেয়ারিং প্রোটেকশন ইক্যুইপমেন্ট, হার্ড হেলমেট, ব্রিদিং অ্যাপারেটাস এবং কমপ্লিট বডি কভারিং। উল্লিখিত সেফটি গিয়ারগুলি শরীরের বিভিন্ন অংশে পরিধান করা হয়। ফলে কোনো বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও, মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার থেকে শরীরকে রক্ষা করে এগুলি।
১) হেলমেট – হেলমেট সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। রাস্তায় বাইক বা স্কুটার নিয়ে বের হলেই হেলমেট পরিধান বাধ্যতামূলক। নিজের সুরক্ষা বজায় রাখা ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধের থেকে বাঁচতে হেলমেট অবশ্যই পড়ে বেরোন।
২) জ্যাকেট – রাইডিং জ্যাকেট মাথা বাদে আমাদের দেহের উপরি অংশকে সুরক্ষা প্রদান করে। যেমন কাঁধ, হাত, পিঠ ও বুকে আঘাত লাগার থেকে বাঁচায় এটি।
৩) বটমওয়্যার বা প্যান্ট : রাইডিং ইক্যুইপমেন্টের মধ্যে সবচেয়ে যেই জিনিসটি আমাদের নজর এড়িয়ে যায় তা হল বটমওয়্যার বা প্যান্ট। দেহের নিম্নাংশ অর্থাৎ পায়ের নিরাপত্তা বজায় রাখতে অতি কার্যকর এটি। বেশিরভাগ চালকের ভুল ধারণা বাইক চালানোর সময় জিন্স পড়ে নিলে হয়তো বটমওয়্যার পড়ার প্রয়োজন নেই।
৪) রাইডিং বুট : বাইক চালানোর সময় বুট আমাদের অনেকটাই সুরক্ষিত রাখে।
৫) হ্যান্ড গ্লাভস : এই তালিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম হল হ্যান্ড গ্লাভস।
৬) ফুল বডি শ্যুট : এটি চালককে বাড়তি নিরাপত্তা দান করে।
প্রসঙ্গত, ভারতে দু’চাকার গাড়িতে দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাই এতে আহত ও নিহতের পরিমাণও অধিক। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ভারতীয় রাস্তায় প্রতি ঘন্টায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আবার এদেশের রাস্তার বেহাল দশা দুর্ঘটনার প্রবণতা যে বাড়িয়েছে, তা অস্বীকার করার জো নেই। তাই দূরে কোথাও যাত্রার ক্ষেত্রে প্রাণহানির সম্ভাবনা কমাতে সেফটি গিয়ারের ব্যবহার যুক্তিযুক্ত।