কোভিড অতিমারির ধাক্কায় জনজীবন যখন স্তব্ধ, তখন ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত যে কোন কাজের ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যাঙ্কিং একটি বড় সুবিধা। এর ফলে বাড়িতে বসে নিমেষের মধ্যেই একাধিক জরুরী কাজ মিটিয়ে ফেলা সম্ভব, যা করার জন্য হয়তো ব্যাঙ্কের লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হতো। যদিও অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ের সুবিধাকে বিকল্পহীন মনে হলেও এর কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে সেজন্য অবশ্য গ্রাহক বা ব্যাঙ্ক কোন পক্ষই দায়ী নন, বরং দায়ী কিছু ধুরন্ধর সাইবার-অপরাধী!
আজ্ঞে হ্যাঁ, কিছু মানুষের অসাবধানতার সুযোগ নিয়ে দিনের পর দিন সাইবার-অপরাধীরা তাদের লুটে নিচ্ছে! মানুষকে প্রতারণা করার একাধিক ফন্দি তাদের ঝুলিতে উপস্থিত। কখনো ভুয়ো মেসেজ পাঠিয়ে, কখনো ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি হিসেবে গ্রাহককে সরাসরি ফোন করে, আবার কখনো কেওয়াইসি আপডেটের বাহানায় প্রতারকেরা সাধারণ মানুষের হাজার হাজার টাকা লোপাট করছেন। এমনকি ভারতের বৃহত্তম ব্যাঙ্কিং সংস্থা এসবিআই বা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া পর্যন্ত এই সাইবার-দুষ্কৃতিদের হাত থেকে মুক্ত নয়। বরং সম্প্রতি এসবিআই অ্যাকাউন্টয়ের মালিকেরা সাইবার-অপরাধীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সবথেকে বেশী। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, সাধারণ গ্রাহকদের সচেতন করতে খোদ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকেই একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
একথা সকলেই জানেন যে নিজস্ব গ্রাহকদের জন্য এসবিআই (SBI) নেট-ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত সমস্ত ধরনের সুযোগসুবিধা সরবরাহ করে থাকে। ফলে বহু মানুষ এই প্রক্রিয়ার উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ের শরণাপন্ন সমস্ত গ্রাহক সমান সচেতন নন। এদের মধ্যে অনেকে পদ্ধতিটির ক্ষেত্রে অন্যের উপরে নির্ভরশীল। আবার অনেকেরই এ সম্পর্কে সীমিত ধারণা রয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক অসচেতন গ্রাহকের উপস্থিতির কারণেই বর্তমানে সাইবার-প্রতারণার এত রমরমা। মানুষের মুহূর্তের অসাবধানতার সুযোগ নিয়ে সাইবার-দুষ্কৃতি এবং হ্যাকারেরা তাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি থেকে শুরু করে বড় অঙ্কের অার্থিক ক্ষতি করে চলেছে। এরা মানুষকে ভুয়ো ওয়েবসাইটের লিঙ্ক সরবরাহ করে তাদের কাজ হাসিল করছে।
তবে একটু সচেতন হলেই আমরা এই সাইবার-অপরাধীদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারি। এজন্য আমাদের নির্দিষ্ট কতগুলি বিষয় সর্বদা মাথায় রাখতে হবে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে গ্রাহকদের এমনই কিছু উপায় সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে যা ক্রমবর্ধমান সাইবার-প্রতারণাকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনবে।
এসবিআই(SBI) -এর পক্ষ থেকে একটি টুইট করে জানানো হয়েছে, “মারণ ভাইরাসকে ঠেকাতে যেমন ভ্যাকসিন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনই সাইবার-অপরাধীদের দমাতে বারবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড বদলানো জরুরী।”
শুধু তাই নয়, একইসাথে সংস্থাটি গ্রাহকদের অপরিচিত উৎস থেকে আগত মেসেজ ওপেন থেকে না করার পরামর্শ দিয়েছে। তাছাড়া ভালোভাবে যাচাই না করে যে কোন মেসেজের লিংকে ক্লিক করার ফলও যে অনেক সময় বিরাট ক্ষতির কারণ হতে পারে, সেটাও ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
সুতরাং উপরের সমস্ত দিক মাথায় রেখেই আগামীদিনে অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ের কাজে অগ্রসর হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সামান্য একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই আমরা অনলাইন প্রতারণার হাত থেকে রেহাই পেতে পারি।