TV রিচার্জ করতে গিয়ে জালিয়াতদের খপ্পরে মহিলা, খোওয়া গেল 81000 টাকা, আপনিও সতর্ক হয়ে যান
ডিজিটালাইজেশন আমাদের বর্তমান জীবন সহজ করে দিলেও, এটিকে মাধ্যম করে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে জালিয়াতি...ডিজিটালাইজেশন আমাদের বর্তমান জীবন সহজ করে দিলেও, এটিকে মাধ্যম করে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে জালিয়াতি শব্দটি। প্রায় দিনই কোনো না কোনোভাবে ঘটা প্রতারণার খবর আমাদের সামনে আসছে। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি সেট-টপ-বক্স অনলাইনে রিচার্জ করার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির কবলে পড়েছেন এক মহিলা। আর, এবারের ঘটনাটিও মুম্বাইয়ের। রিপোর্ট অনুযায়ী, মায়ানগরীর বাসিন্দা ওই মহিলা, অনলাইনে STB (সেট-টপ-বক্স) রিচার্জ করার সময় পেমেন্ট সংক্রান্ত কিছু সমস্যার মুখে পড়েন। এরপর বিষয়টিতে সাহায্য পাওয়ার জন্য, তিনি ইন্টারনেটে DTH সার্ভিস প্রোভাইডারের কাস্টমার কেয়ার নম্বর সার্চ করেন; এই সময় তাঁর হাতে একটি হেল্পলাইন নম্বর আসে যাতে তিনি তড়িঘড়ি কল করেন। ব্যস এরপরেই ঘটে যায় বিপত্তি – মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৮১,০০০ টাকা চুরি হয়ে যায়।
সাইবার জালিয়াতির শিকার, ৮১ হাজার টাকা খোওয়ালেন মধ্যবয়স্কা মহিলা
শুরুতেই বলেছি, নতুন এই অনলাইন জালিয়াতিতে ভিক্রোলি (পূর্ব) এলাকার কান্নামওয়ার নগরের বাসিন্দা এক ৪৭ বছর বয়সী মহিলা একটি সেট-টপ-বক্সের অনলাইন রিচার্জ করতে গিয়ে জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। তবে এ ঘটনা একেবারে মাসের শুরুর দিকের – গত ৫ই মার্চ ওই মহিলা রিচার্জের জন্য অনলাইনে ৯৩১ টাকা প্রদান করে, ডিটিএইচ সার্ভিস পুনরায় চালু হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু পেমেন্ট করার পরেও, তিনি একটি রিচার্জ কনফার্মেশন মেসেজ পাননি বা তার সেট-টপ-বক্স ব্যালেন্স আপডেট হয়নি। এরপর সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি অনলাইনে কাস্টমার কেয়ার সাপোর্ট নম্বর খোঁজেন এবং একটি 'হেল্পলাইন' নম্বর পান। প্রথমে তিনি সেই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পাননি। কিন্তু পরেরদিন, একজন অজানা ব্যক্তি মহিলাটিকে ফোন কল করে নিজেকে কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভ হিসাবে পরিচয় দেয় এবং সাহায্যের প্রস্তাব করে।
এক্ষেত্রে এটিকে সত্যিকারের কল বলে মনে করে ওই মহিলা তাঁর যাবতীয় সমস্যা সেই ব্যক্তির সাথে শেয়ার করেন; পরিবর্তে ওই ব্যক্তি ফোনে একটি রিমোট অ্যাক্সেস অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে বলে। এরপর রিমোট অ্যাক্সেস অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতেই, তিনি ওটিপি পেতে শুরু করেন এবং ব্যাঙ্ক ট্রানজাকশনের মেসেজ পান। সবশেষে দেখা যায়, ওই মহিলার প্রায় ৮১,০০০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি বোঝার পর, এই অনলাইন কেলেঙ্কারি সম্পর্কে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এখন, সেখানকার পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা নথিভুক্ত করেছে এবং গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে।
কীভাবে ঘটল এই সাইবার জালিয়াতি?
মিডিয়া রিপোর্ট থেকে এটুকু স্পষ্ট যে, মহিলাটি যে হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করেছিলেন তা জাল এবং যে ব্যক্তি নিজেকে কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভ বলে অভিযোগ করেছিল সে আদতে স্ক্যামার ছিল। এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি, মহিলাটির বিশ্বাস অর্জন করে তাকে কৌশলে ফেলেন এবং রিমোট অ্যাক্সেস অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করাতে সফল হন। এই অ্যাপটি ব্যবহার করে স্ক্যামার মহিলার স্মার্টফোনে অ্যাক্সেস পায় এবং তাঁর ব্যক্তিগত বিবরণ, ওটিপি ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করে।
জালিয়াতি থেকে বাঁচতে সাবধান থাকুন
বারংবার সরকার, পুলিশ কিংবা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সতর্ক করা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ কেলেঙ্কারীর মুখে পড়ছে। দুর্ভাগ্যবশত, শিক্ষিত লোকেরাই অনলাইন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন এবং লক্ষ লক্ষ টাকা হারাচ্ছেন। তাই ফোন, ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় চোখ কান খোলা রাখুন – অজানা লিঙ্কে ক্লিক করা, সন্দেহভাজন কলারের কথামত কাজ করা এবং ইন্টারনেটের সমস্ত তথ্য বিশ্বাস করা থেকে বিরত থাকুন।