স্মার্টফোনে নতুন বিপদ! লোকেশন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি যাচ্ছে গোপন তথ্য

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে মোবাইল হ্যান্ডসেটে; হরেক কিসিমের কী-প্যাড মুঠোফোনের বদলে এখন পকেট জুড়ে থাকছে স্মার্টফোন। কিন্তু দেখা গেছে, বিশ্বের লক্ষ লক্ষ…

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে মোবাইল হ্যান্ডসেটে; হরেক কিসিমের কী-প্যাড মুঠোফোনের বদলে এখন পকেট জুড়ে থাকছে স্মার্টফোন। কিন্তু দেখা গেছে, বিশ্বের লক্ষ লক্ষ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যেই অধিকাংশই জানেন না যে কিভাবে তাদের মোবাইলের গুরুত্বপূর্ণ ফিচারগুলির মাধ্যমেই খোয়া যেতে পারে সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে, স্মার্টফোনে ইন্সটল করা বিভিন্ন অ্যাপ কাজ শুরু করার আগে লোকেশন ট্র‍্যাকিং বা আরো যেসব নানারকম অনুমতি চায়, আমাদের মধ্যে অনেকেই না বুঝে অ্যাপগুলিকে সেই সমস্ত অ্যাক্সেস দিয়ে দিই৷ ফলে আমাদের অজান্তেই দানা বাঁধে বিপদ!

স্মার্টফোনের এই লোকেশন ট্র‍্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমেই কিভাবে ব্যক্তিগত তথ্য খোয়া যেতে পারে সেই বিষয়ে একটি বিশদ ব্যাখ্যা দেখা গিয়েছে উক্ত রিপোর্টে, যেখানে ইতালির ব্লোগনা ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের দুই গবেষক বিস্তারিত গবেষনায় দেখিয়েছেন, কিভাবে বিভিন্ন অ্যাপ লোকেশন ট্র‍্যাক করার অনুমতি চায় এবং এইসমস্ত তথ্য নিয়ে ইউজারদের তথ্যের সাথে কাটাছেঁড়া করে।

শুধু তাই নয়, ওই গবেষকরা তাদের যুক্তি প্রমাণের জন্য ট্র্যাকিং অ্যাডভাইজর (Tracking Advisor) নামে একটি অ্যাপ এনেছেন যা ক্রমাগত ইউজারের লোকেশন ডেটা সংগ্রহ করতে থাকে। তবে একই সাথে অ্যাপ্লিকেশনটি, ইউজারদের তথ্যের বৈধতা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানায় এবং প্রাইভেসি সেন্সিটিভিটি সম্পর্কিত বিষয়গুলি সামনে আনে। সেক্ষেত্রে, অ্যাপটির মাধ্যমে কী ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ হয় তা শনাক্ত করতে প্রায় দু সপ্তাহ ধরে ৬৯ জন স্মার্টফোন ইউজারের উপর গবেষণা চালানো হয়েছিল। দেখা গেছে, Tracking Advisor অ্যাপটি প্রায় ২,০০,০০০-এর বেশি লোকেশন ট্র্যাক করেছে এবং তার মধ্যে প্রায় ২,০০০টি জায়গা শনাক্তও করেছে। এছাড়াও এটি ব্যক্তিগত এবং জনবিন্যাসগত প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছে।

প্রয়োজনীয় অ্যাক্সেস পাওয়ার পর কী কী তথ্য সংগ্রহ করে অ্যাপগুলি?

রিপোর্ট অনুযায়ী, বহু অ্যাপ্লিকেশন ফোনে কাজ শুরুর আগে যে সমস্ত পারমিশন চায় তা পেলেই, এগুলি মেশিন লার্নিং টেকনোলজি ব্যবহার করে ইউজারের বাড়ির ঠিকানা, ডেমোগ্রাফি, তাদের অভ্যাস, আগ্রহ এবং ব্যক্তিত্ব সম্পর্কিত একাধিক সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে। এছাড়াও গবেষকরা দেখেছেন যে এগুলি স্বাস্থ্য, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি, জাতি ও ধর্ম ইত্যাদি নানা তথ্যও অ্যাক্সেস করে। এই সব তথ্যগুলি পরে নির্দিষ্ট কিছু বিজ্ঞাপনদাতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলেই তাদের অভিমত।

অতএব, ফোনে ইচ্ছেমত অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করার সময় সতর্ক থাকুন, কারণ সামান্য অলসতা বা অসাবধানতা ডেকে আনতে পারে বিপত্তি!

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন