ভ্রমণকারীদের জন্য সুখবর! এই বছরের শেষের দিকে ভারতে ই-পাসপোর্ট চালু করতে পারে TCS
দীর্ঘ সময় ধরেই এদেশে ই-পাসপোর্ট (E-Passport) চালু হওয়ার বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে। গত জানুয়ারীতে এই প্রয়োজনীয় নথির...দীর্ঘ সময় ধরেই এদেশে ই-পাসপোর্ট (E-Passport) চালু হওয়ার বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে। গত জানুয়ারীতে এই প্রয়োজনীয় নথির ডিজিটাইজেশন সম্পর্কে সবুজ সংকেতও দিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। সেক্ষেত্রে অবশেষে ভ্রমণকারীদের জন্য আশার আলো ফুটছে বলেই মনে হচ্ছে। আসলে ই-পাসপোর্টের ভারতীয় গ্রাহকদের হয়ত আর খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না, কারণ টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস বা TCS (টিসিএস) ২০২২ সালের শেষের দিকে ভারতে চিপ-ভিত্তিক ই-পাসপোর্ট রোলআউট করা শুরু করবে বলে শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, সংস্থাটি, এই পরিষেবার স্বার্থে একটি নতুন কন্ট্রোল সেন্টার এবং ডেটা সেন্টার সেটআপ করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (Ministry of External Affairs বা MEA) সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। এই সেটআপের কাজ শেষ হয়ে গেলেই সংস্থাটি গোটা দেশে ই-পাসপোর্ট চালু করা শুরু করবে। সেইসাথে বিদ্যমান পাসপোর্টগুলিকে রিনিউ করার সময় সেগুলিকেও আপডেট করা হবে বলে TCS-এর তরফে জানানো হয়েছে।
E-Passport কী?
যারা জানেন না তাদের বলে রাখি, ই-পাসপোর্ট মানে হল বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট (Biometric Passport)। এই পাসপোর্টে থাকবে একটি মাইক্রোচিপ, যার মধ্যে ব্যবহারকারীর প্রিন্টেড পাসপোর্টের মত তথ্য (অর্থাৎ নাম, জাতি, জন্মতারিখ সংক্রান্ত তথ্য) মজুত থাকবে। এক্ষেত্রে একবার ই-পাসপোর্ট চালু হয়ে গেলে যাত্রীদের আর ইমিগ্রেশন কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। কারণ ইমিগ্রেশন কাউন্টারে ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশনের পরিবর্তে ই-পাসপোর্টটি কয়েক মিনিটের মধ্যে খুব সহজেই স্ক্যান হয়ে যাবে। এটি জাল পাসপোর্ট ব্যবসাকে দমন করতেও ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে, কারণ মাইক্রোচিপে রেকর্ড করা ডেটাকে অদলবদল করা স্ক্যামারদের পক্ষে বেশ কঠিন হবে।
এই বিষয়ে ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন পর্বের দ্বিতীয় পর্যায়ে টিসিএস নতুন পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র বা পিএসকে (PSK) স্থাপন করবে। ইউজারদেরকে যাতে পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে যথাযথ পরিষেবা প্রদান করা যায়, তার জন্য আগামী দিনে এই পিএসকে-গুলিকে পরিকাঠামোগত দিক থেকে অত্যধিক পরিমাণে উন্নত করে তোলার লক্ষ্যমাত্রাও নিয়েছে সংস্থা। সেইসাথে গ্রাহকদের ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা আরও সুসমৃদ্ধ করে তুলতে বায়োমেট্রিক্স, অটো-রেসপন্স এবং চ্যাটবটের সুবিধা প্রদান করা হবে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
TCS-এর পাবলিক সেক্টর বিজনেসের হেড তেজ ভাটলা (Tej Bhatla) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, সংস্থাটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে একটি নতুন ডেটা এবং কন্ট্রোল সেন্টার গড়ে তোলার যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তার জন্য প্রচুর পরিমাণে আইটি ইকুইপমেন্টের প্রয়োজন পড়বে। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, এই প্রকল্পটি এমন এক সময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে যখন গোটা বিশ্ব ভয়ঙ্কর রকমের চিপের ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে। এই সমস্যার জন্য অনেক উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই স্থগিত হয়ে গিয়েছে। তাহলে TCS-এর এই কাজ কীভাবে হবে? ভাটলা জানিয়েছেন যে, ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের কাজকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যার ফলে চিপের ঘাটতির কোনোরকম কুপ্রভাব এর ওপর পড়বে না। আর এর ফলস্বরূপ ডিজিটাল ইন্ডিয়া গঠনের লক্ষ্যে ভারত যে খুব শীঘ্রই আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চলেছে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।