বেশি তেল পুড়িয়ে গাড়ি কম মাইলেজ দিচ্ছে? জ্বালানি সাশ্রয়ে এই টিপসগুলি মেনে চলুন, কমবে খরচ
সাম্প্রতিককালে পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলায় বিদ্ধ ভারতবর্ষ সহ গোটা পৃথিবী। পরিস্থিতিকে আরো সঙ্গীন করেছে...সাম্প্রতিককালে পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলায় বিদ্ধ ভারতবর্ষ সহ গোটা পৃথিবী। পরিস্থিতিকে আরো সঙ্গীন করেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। এমতাবস্থায় গাড়ি মালিকদের নাজেহাল অবস্থা। এদিকে স্বাচ্ছন্দের কথা মাথায় রেখেই প্রত্যেকে নিজের সাধের গাড়ি ঘরে আনেন। অতএব গাড়ি চড়া থেকে বিরত থাকা মুশকিল। তবে সমস্যা যেমন রয়েছে তার উপায়ও তেমন আছে। গাড়ির মালিক হিসেবে এই কয়েকটি কার্যক্রম নিয়মিত বজায় রাখুন আর তাতেই মিলবে খানিক সুরাহা। কিছুটা হলেও কমবে জ্বালানি খরচ।
টায়ার প্রেসার সঠিক রাখা
মনে রাখবেন যে কোন গাড়ির যথাযথ চলাচলের জন্য তার টায়ারে হাওয়ার চাপ সঠিক রাখা বাধ্যতামূলক। টায়ার প্রেসার অনেকাংশে জ্বালানি খরচের সঙ্গে সংযুক্ত। চাকায় অতিরিক্ত হাওয়া থাকলে তা চাকায় প্রযুক্ত ঘর্ষণ বল কমিয়ে দিয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন করতে পারে। এর ফলে দ্রুত গতিতে ব্রেকিং করলে গাড়ির চাকা স্কিড করার প্রবণতা দেখা দেয়। অন্য দিকে টায়ারে কম হাওয়া থাকলে চাকার ঘূর্ণন সঠিক মাত্রায় না হওয়ায় বেশি পরিমাণ জ্বালানির খরচ হয়। তাই অবশ্যই সঠিক পরিমাণ টায়ার প্রেসার সম্পর্কে জানতে গাড়ির নির্মাতার দেওয়া বুকলেট অনুসরণ করুন।
এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার
ইন্টার্নাল কম্বাশন ইঞ্জিনে (ICE) জ্বালানির দহন প্রক্রিয়াকে চালু রাখতে প্রতি মুহূর্তে বাতাসের অক্সিজেনের যোগান প্রয়োজন। আর সেই কারণেই ইঞ্জিনে প্রবেশ করা বাতাসকে এয়ার ফিল্টার দ্বারা পরিশোধিত করে তা ইঞ্জিনের দহন কক্ষে ঢোকানো হয়। এবার এই এয়ার ফিল্টারটি যদি বাতাসের ধুলোকণা দ্বারা রুদ্ধ থাকে তবে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে ইঞ্জিনের দহন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। সেই কারণে নির্দিষ্ট সময় অন্তর গাড়ির এয়ার ফিল্টারটি পরিষ্কার করা আবশ্যিক।
আরপিএমের রেড লাইন অতিক্রম না করা
সমস্ত গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ইঞ্জিনের একটি নির্দিষ্ট আরপিএম গতি নির্ধারণ করা থাকে। তার অতিরিক্ত আরপিএম তোলার চেষ্টা করলে তা ইঞ্জিনে প্রচন্ড স্ট্রেস প্রদান করে। ফলে দ্বিগুণ জ্বালানি খরচ হতে পারে। এই অবস্থায় এমনকি ক্লাচ ছাড়ার আগে বা গিয়ার চেঞ্জ করার পূর্বে সাধারণ অবস্থার থেকে অনেক বেশি তেল পোড়ে। এক্ষেত্রে আমরা বলবো ২,০০০-৩০০০ আরপিএমের মধ্যে গিয়ার পরিবর্তন করুন। এর ফলে ইঞ্জিনের উপর চাপ কমে খানিকটা হলেও উন্নত হবে মাইলেজ।
অযথা ইঞ্জিন চালু রাখা
এই বদভ্যাসটি প্রায় বেশিরভাগ গাড়ির চালকই করে থাকেন। এটি ইঞ্জিনের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমন বাড়ায় জ্বালানি খরচ। শহরের যানজটপূর্ণ রাস্তায় বহুক্ষন ধরে এভাবে ইঞ্জিন চালু রাখা একদম উচিত নয়। যদি কোনো ট্রাফিক জ্যামে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই গাড়ির ইঞ্জিনটি বন্ধ রাখুন।
সময়মতো সার্ভিসিং
একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অবশ্যই আপনার গাড়ির সম্পূর্ণ অংশকে সার্ভিস করানো প্রয়োজন। মনে রাখবেন যে কোন গাড়িই আদতে অসংখ্য যন্ত্রাংশের সমাহার। তাই সময়মতো এর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করলে ইঞ্জিনের মধ্যে থাকা সমস্ত যন্ত্রাংশগুলি মুক্তভাবে চলাচল করতে পারে। এমনকি গাড়ির এয়ার ফিল্টারকে পরিষ্কার রাখলে তা আপনার গাড়িকে প্রাণভরে শ্বাস নিতে সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি গিয়ার অয়েল, ক্লাচ অয়েল, চেইন অয়েল ইত্যাদি সময়মতো পরিবর্তন করলে আপনার গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা অন্য মাত্রায় পৌঁছে যাবে।