ভুয়ো SMS এর মাধ্যমে প্রতরণা ঠেকাতে নতুন বিধি আনলো ট্রাই, জানুন

ভুয়ো SMS-এর চক্করে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছে এরকম মানুষের সংখ্যা ইদানীংকালে নেহাত কম নয়। কোনো কোম্পানি বা ব্যাংকের নামে, অথবা লটারি জেতার প্রলোভন দেখিয়ে মানুষ…

ভুয়ো SMS-এর চক্করে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছে এরকম মানুষের সংখ্যা ইদানীংকালে নেহাত কম নয়। কোনো কোম্পানি বা ব্যাংকের নামে, অথবা লটারি জেতার প্রলোভন দেখিয়ে মানুষ কে ভুয়ো SMS পাঠিয়ে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে প্রতারকরা। এগুলিকে আটকাতে এর আগেও বহুবার বহুরকম নিয়ম বা বিধিনিষেধ জারি করেছে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI)। তবে গতকাল TRAI একটি নতুন সার্কুলার প্রকাশ করেছে, যেটি ১৮ জুলাই, ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত টেলিকম কমার্শিয়াল কমিউনিকেশনস কাস্টমার প্রেফারেন্স রেগুলেশনস (TCCCPR) অর্ডারের একটি অংশ। এই নিয়ম অনুযায়ী, টেলিকম কোম্পানিগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতিটি SMS যাচাই এবং স্ক্রাব করতে হবে, যেগুলি কোনো ভেরিফায়েড/রেজিস্টার্ড সংস্থা তার গ্রাহকদের পাঠানোর চেষ্টা করছে। যদি SMS টেমপ্লেটটি রেজিস্টার্ড না হয়, তাহলে সেটিকে ব্লক করতে হবে। ১ এপ্রিল, ২০২১ থেকে এই নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এই নতুন নিয়মে ব্লকচেন সিস্টেমে মেসেজ স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে ভুয়ো-পেস্কি মেসেজ ছড়িয়ে পড়া আটকানো যাবে বলেই অভিমত টেলিকম নিয়ন্ত্রকের।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গত ৮ই মার্চ, TRAI দেশের সমস্ত টেলিকম অপারেটরকে এই নতুন মেসেজ বা এসএমএস টেম্পলেট বিধি চালু করার নির্দেশ দেয়; কিন্তু সংস্থাগুলি এই নিয়ম বাস্তবায়িত করা মাত্রই এগুলির নেটওয়ার্কে কয়েকশো মিলিয়ন মেসেজ ব্লক হয়ে যায়, যার মধ্যে OTP সহ প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ এসএমএসও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে গ্রাহকদের অস্বস্তি কমাতে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি তড়িঘড়ি মাঠে নামে এবং ১৭ই মার্চ থেকে সমস্ত টেলিকম কোম্পানিকে নিজেদের নেটওয়ার্কে শুধুমাত্র এসএমএস ফিল্টার করার আদেশ দেয়। ওই সময় বলা হয় যে, কোনো মেসেজ নির্দিষ্ট টেমপ্লেট বিধি না মানলেও টেলকোগুলি সেই মেসেজ ব্লক না করে ডেলিভার করবে, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র মেসেজটির ঘাটতি রেকর্ড করে রাখা হবে; ফলত, গ্রাহকদের মেসেজ সংক্রান্ত কোনো অসুবিধার মুখে পড়তে হবে না।

যদিও গতকাল থেকে ফের ৮ই মার্চের নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে। দেশের সব টেলিকম সংস্থাগুলির পাশাপাশি সমস্ত ব্যাঙ্ক, ব্যাবসায়িক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিও যাতে SMS-এর নতুন নিয়ম মেনে চলে, তার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে TRAI। TRAI-এর আগের এক বিবৃতিতে জানা গেছে যে, এসবিআই, এইচডিএফসি ব্যাংক, আইসিআইসিআই ব্যাংক, এলআইসি এবং স্যামসাং-এর মতো সংস্থাগুলি এর আগে TRAI কর্তৃক প্রণোদিত কোনো নিয়ম মেনে চলেনি। এই প্রসঙ্গে মনে করা হচ্ছে যে, নতুন টেমপ্লেটের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে সংস্থাগুলি অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। একাধিক সংস্থার মতে, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ SMS পাঠানোর প্রক্রিয়া চলে। সুতরাং, এটা তাদের জন্য ‘এককালীন মেনে চলা’ নিয়ম নয়। এর জন্য অনেক সময় লাগবে, এবং তাই নতুন নিয়ম না মানা হলে কোনো মেসেজ ব্লক করা উচিত নয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে TRAI-এর সার্কুলারে বলা হয়েছে, কয়েকটি ছোটখাটো ঘটনা বাদ দিয়ে ভারতে নতুন SMS নিয়মাবলীর বাস্তবায়নে কোনো ‘বড়ো সমস্যা’ হয়নি। এটি শুধু ব্যাংক এবং অন্যান্য সংস্থার জন্য নয়, গ্রাহকদের জন্যও সুখবর যারা ওটিপি, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংক্রান্ত মেসেজ না পেয়ে সবচেয়ে বড়ো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো যে, এই নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে SMS ডেলিভারির হার রোজকার মতো না হলেও, ৮ মার্চ, ২০২১ তারিখে যা ছিল তার তুলনায় যথেষ্ট ভালো। সময়ের সাথে সাথে, আরো অনেক সংস্থা এই নিয়মের সাথে মানিয়ে নিতে সক্ষম হবে, এবং SMS ডেলিভারি রেটও বৃদ্ধি পাবে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন