ভুয়ো কল যাচাইয়ের জন্য লাগবে না Truecaller, TRAI-এর নয়া নিয়মে ফোনেই দেখা যাবে আসল পরিচয়

দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর সবে হয়তো একটু ভাতঘুম দিতে চোখটা বুজেছেন, এমন সময় বেজে উঠল ফোন! ওপাশ থেকে ভেসে এল একটি অজানা...
techgup 21 May 2022 8:30 PM IST

দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর সবে হয়তো একটু ভাতঘুম দিতে চোখটা বুজেছেন, এমন সময় বেজে উঠল ফোন! ওপাশ থেকে ভেসে এল একটি অজানা কণ্ঠস্বর, "হ্যালো, অমুক ব্যাঙ্ক থেকে বলছি, আপনার ডেবিট কার্ডের পিন নম্বর বলুন নইলে এক্ষুনি অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে" – এমন কল নিশ্চয়ই আপনাদের প্রত্যেকের কাছেই একবার না একবার এসেছে, কি বলেন? আসলে বর্তমান ডিজিটাল যুগে ভুয়ো কলের পরিমাণ এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে এরকম অভিজ্ঞতা কমবেশি আমাদের সকলেরই হয়েছে। বেশিরভাগ ভুয়ো কলই ব্যাঙ্কের নাম করে আসে, এছাড়াও কোনো লিঙ্কে ক্লিক করলেই মোটা টাকা লটারি জেতার খবর কিংবা KYC (কেওয়াইসি) ফর্ম জমা না দিলে মোবাইল সিম বন্ধ করার হুমকিও ইউজাররা আকছার পেয়ে থাকেন। কল আসে মোবাইল টাওয়ার বসানোর নামেও। তবে একথা আর নতুন করে বলার কোনো প্রয়োজন নেই যে, এই সমস্ত কলের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে সাইবার জালিয়াতির অন্ধকার দিক তথা হ্যাকারদের বিভিন্ন কলাকৌশল, যার ফাঁদে পা দেওয়া মাত্রই এক নিমেষে খালি হয়ে যাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট!

নিঃসন্দেহে এটি যে একটি ভীষণরকম চিন্তার বিষয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ মুশকিলটা হল যে, কোথা থেকে কল আসছে বা কে করছে সে সম্পর্কে তো আগাম কিছুই সঠিকভাবে জানা যায় না, এমনকি ট্রুকলার (TrueCaller)-এর মাধ্যমে যদি চেক করাও হয় – তাহলেও অনেক সময় ভুল নাম দেখা যায়। ফলে আসল প্রতারকের পরিচয় জানা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে ওঠে। তাহলে এই বিপদের হাত থেকে বাঁচার উপায় কী? সেক্ষেত্রে বলে রাখি যে, চিন্তার কোনো কারণ নেই; ইউজারদের সুবিধার্থে মোবাইল কলিংয়ের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বড়োসড়ো পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এক্ষেত্রে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা ট্রাই (TRAI) খুব শীঘ্রই কেওয়াইসি-ভিত্তিক প্রক্রিয়া (KYC-based process) শুরু করতে চলেছে। কিন্তু এতে কী সুবিধা মিলবে? আসুন জেনে নিই।

ঠিকঠাক কলার আইডি দেখা যাবে TRAI-এর নিয়মে

ট্রাই-এর নয়া নিয়ম অনুযায়ী, এবার ফোন এলেই কলারের নামটি ইউজারদের মোবাইল স্ক্রিনে প্রদর্শিত হবে। আর সবচেয়ে বড়ো ব্যাপার হল, ট্রুকলার-এ যদিও বা ভুল নাম দেখানোর সম্ভাবনা থাকে তাহলেও সরকার কর্তৃক জারি করা কেওয়াইসি-ভিত্তিক প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নের পরে কলিংয়ের সময় যে নামগুলি দেখানো হবে, সেগুলি ১০০ শতাংশ সঠিক হবে। আর এর জন্য মোবাইলে ওই ব্যক্তির নম্বর সেভ থাকারও কোনো প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যেই ট্রাই এই বিষয়ে টেলিযোগাযোগ বিভাগের সাথে আলোচনা শুরু করেছে। নিয়ন্ত্রকের চেয়ারম্যান পি ডি ওয়াঘেলা (P. D. Vaghela) এই বিষয়ে জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নয়া নিয়ম চালু করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সোজা কথায় বললে, এই পদ্ধতিটির মাধ্যমে কলারদেরকে তাদের কেওয়াইসি (নো ইওর কাস্টমার) অনুসারে সনাক্ত করা যাবে। আর এর জন্য টেলিকম সংস্থাগুলিকে তাদের সমস্ত গ্রাহকের কাছ থেকে অফিসিয়াল নাম, ঠিকানা সহ যাবতীয় ডিটেইলস চেয়ে নিতে হবে। আর এই সমস্ত ইনফর্মেশন সঠিক কি না, তার প্রমাণ হিসেবে গ্রাহকদের ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বা ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে হবে। এর সুবাদে নতুন কেওয়াইসি-ভিত্তিক প্রক্রিয়া কার্যকর হলেই কোনো কলার আর তার পরিচয় গোপন করতে পারবেন না। কোনো নম্বর থেকে কারোর ফোনে কল গেলেই কলারের যাবতীয় ডিটেইলস রিসিভারের স্ক্রিনে নির্ভুলভাবে ফুটে উঠবে, ফলে রিসিভারের ফোনে নম্বর সেভ না করা থাকলেও তিনি অনায়াসে জানতে পারবেন যে ফোনটি কে করছে। আর এর ফলে ভুয়ো কলিংয়ের পরিমাণ যে অনেকটাই কমবে, সেকথা বলাই বাহুল্য। তবে এই প্রক্রিয়াটি কবে থেকে চালু হবে এবং সকলের জন্য বাধ্যতামূলক হবে কি না, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।

Show Full Article
Next Story