বর্তমানে ছোটো ছোটো ভিডিও, মিমস এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট (Social Media Content) নেটিজেনদের কাছে ক্ষণিকের জন্য সুখকর হয়ে উঠেছে। তাই মজার বা সৃজনশীল বিনোদনের ফলে অনেকেই দিনের অনেকটা সময় এইসব কনটেন্ট দেখে ব্যয় করেন। তবে আপনিও যদি এই দলে থাকেন তাহলে সতর্ক হোন। আসলে সম্প্রতি একটি স্টাডি থেকে জানা গেছে, দীর্ঘ সময় সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রোল করলে উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিহেভিয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি জার্নালে এই রিসার্চ স্টাডি প্রকাশিত হয়। যাতে বলা হয়েছে – ‘প্রাপ্তবয়স্কদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফলে একাকীত্ব এবং মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়।’ এছাড়াও যারা সামাজিক মিডিয়ায় ক্রিয়েটিভ কাজের মাধ্যমে অ্যাকটিভ থাকেন তাদের তুলনায় যারা অন্যদের তৈরি কন্টেন্ট দেখেন তাদের একাকীত্ব অনুভব করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারের ধরণ, একাকীত্ব এবং মানসিক যন্ত্রণার সম্পর্কে বিশদে জানতে একদল গবেষক ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ২৮৮ জন ব্যক্তির উপর একটি সমীক্ষা করেন। আর এই গবেষণায় তিন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সম্পর্কে পরীক্ষা করা হয়েছে। সেগুলি হলো –
১) প্যাসিভ ইউজ : এই বিভাগে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যারা শুধুমাত্র অন্য ব্যবহারকারীদের দ্বারা তৈরি কন্টেন্ট দেখে থাকেন।
২) অ্যাক্টিভ নন সোশ্যাল ইউজ : এই বিভাগে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা তাদের নিজস্ব কন্টেন্ট পোস্ট করেছেন, কিন্তু অন্য ব্যবহারকারীদের সাথে জড়িত ছিলেন না।
৩) অ্যাক্টিভ সোশ্যাল ইউজ : এই বিভাগে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যারা তাদের নিজস্ব কন্টেন্ট পোস্ট করেছেন এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগও করেছেন।
সমীক্ষার পরে রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সমস্ত প্যাসিভ SMU (সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ) ব্যবহারকারীদের মধ্যে অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার ফলে উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং মানসিক চাপ লক্ষ্য করা গেছে। আর যে ব্যবহারকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের কনটেন্ট তৈরি করেন এবং সেগুলি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন, আর অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ কম রাখেন তাদের মানসিক চাপ অনেকটাই কম থাকে।
এই রিপোর্টের লেখক কনস্টান্টিনা প্যানৌরগিয়া একটি প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, “যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের কনটেন্ট শেয়ার করেন কিন্তু সরাসরি সামাজিক মাধ্যমে কোনো যোগাযোগ রাখেন না, তাদের তুলনায় যারা ক্রমাগত সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের কন্টেন্ট শেয়ার করেন এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সাথে কথোপকথন করেন বা যোগাযোগ রাখেন তারা সামান্য হলেও মানসিক চাপের স্বীকার হতে পারেন।”
গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বিবেচনা করা উচিত তারা কেন সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। পাশাপাশি তাদের সচেতন হওয়া উচিত যাতে তারা একাকীত্ব বিষন্নতা এবং মানসিক চাপে না ভোগেন।