সরকারের কাছে মাথা নত না করলে ভিয়েতনামে বন্ধ হতে পারে ফেসবুক

গত সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সরকারের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট Facebook। তবে এবার, ভিয়েতনাম সরকারের রোষ নজরে পড়েছে মার্ক জুকারবার্গের এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।…

গত সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সরকারের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট Facebook। তবে এবার, ভিয়েতনাম সরকারের রোষ নজরে পড়েছে মার্ক জুকারবার্গের এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। তড়িঘড়ি ব্যবস্থা না নিলে এবং সরকারের কাছে মাথা নত না করলে, ওই দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ হতে পারে। ঠিক কী কারণে এমন মতবিরোধ? আসুন জেনে নিই।

সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, Facebook কে স্থানীয় রাজনৈতিক বিষয়গত পোস্ট সেন্সর করার জন্য চাপ দিচ্ছে ভিয়েতনাম সরকার। গত এপ্রিল মাসে ভিয়েতনাম সরকারের নির্দেশে স্থানীয় ইউজারদের রাষ্ট্রবিরোধী সমালোচনামূলক পোস্টগুলির ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে ফেসবুক। কিন্তু এতেও যে ওই দেশের সরকার সন্তুষ্ট নয় সেটা তাদের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এই বিষয়ে ফেসবুকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংস্থাটি এপ্রিল মাসে ভিয়েতনাম সরকারের সাথে একটি চুক্তি করে এবং এখনো অবধি তারা সেই চুক্তি মান্য করার যথাযথ চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতেও তাদের পক্ষে সরকারের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এখন সরকার, তাদের ওপর নতুন আইন ও জরিমানা সংক্রান্ত কিছু নীতিমালা চাপাতে চাইছে।

অন্যদিকে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে যে, ফেসবুককে স্থানীয় আইন মেনে চলতে হবে এবং ভিয়েতনামী রীতিনীতি এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থ লঙ্ঘন করে এমন সমস্ত তথ্য যাতে না ছড়িয়ে পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

গত শুক্রবার প্রকাশিত একটি রিপোর্টে Facebook বলেছে, তারা, ভিয়েতনাম সরকারের রাষ্ট্রবিরোধী বিষয়বস্তু অপসারণের অনুরোধটি মেনে গত ছয় মাসে ৮৩৪টি আইটেমের অ্যাক্সেস বন্ধ করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলিতে তাদের আরো কন্টেন্ট সেন্সর করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে এবং সরকারি আদেশ অমান্য করলে ভিয়েতনামে ফেসবুক পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

যদিও, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি সংস্থা বলেছে যে, ফেসবুক বিশ্বের যেখানে যেখানে ব্যবসা করে, সংস্থাটির সেই সমস্ত দেশের মানবাধিকারকে সম্মান করার দায়িত্ব বর্তায়। ভিয়েতনামও এর ব্যতিক্রম নয়। অ্যামনেস্টির দাবি, ফেসবুক ভিয়েতনাম থেকে কেবল ব্যবহারিক ব্যবসায়িক লাভ করার চেষ্টা করছে কিন্তু দেশের মানবাধিকারকে সম্মান করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ভিয়েতনামে ফেসবুকের প্রায় ৬০ মিলিয়ন ইউজার রয়েছে। এটি সেখানে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এবং রাজনৈতিক মতবিরোধ প্রকাশ করার মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ভিয়েতনাম থেকে বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের রেভেনিউ আয় করে মার্কিনি সংস্থাটি। আপাতত ফেসবুক, ভিয়েতনাম সরকারের নজরদারিতে রয়েছে। তবে আগামী দিনে সরকার ফেসবুকের বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক পদক্ষেপ নিলে তার যে বেশ বড়সড় প্রভাব পড়বে – সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।