ধুঁকছে পরিষেবা, এখনো চালু হয়নি 4G নেটওয়ার্ক! কেন আজ এই শোচনীয় অবস্থায় BSNL?

আজকাল অধিকাংশ পরিবারের প্রত্যেক সদস্য এমনকি বাড়ির খুদেটির হাতেও নিজস্ব মোবাইল দেখা যায়। কিন্তু দু-দশকের আগের ছবিটা ছিল একদমই আলাদা – স্মার্টফোন বা প্রত্যেকের হাতে…

আজকাল অধিকাংশ পরিবারের প্রত্যেক সদস্য এমনকি বাড়ির খুদেটির হাতেও নিজস্ব মোবাইল দেখা যায়। কিন্তু দু-দশকের আগের ছবিটা ছিল একদমই আলাদা – স্মার্টফোন বা প্রত্যেকের হাতে ফোন থাকা তো দূর, বরঞ্চ ল্যান্ডলাইন কানেকশনের ওপর ভিত্তি করেই চলত দূরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ। একটি বাড়িতে গোটা পরিবারের মধ্যে একটি কিংবা পুরো পাড়ায় হাতেগোনা কয়েকজনের হাতেই মাত্র মোবাইল দেখা যেত! কিন্তু ওই সময় মোবাইল সার্ভিসের জন্য ভরসা ছিল BSNL (বিএসএনএল) বা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড। হ্যাঁ, ২০০০-২০০১ সালের আশেপাশের বছরগুলিতে মানুষকে ল্যান্ডলাইন এবং টেলিফোন বুথের ঝামেলা থেকে মুক্ত করে এই BSNL-ই। আজও যেখানে অন্য কোনো টেলিকম অপারেটরের নেটওয়ার্ক পরিষেবা পাওয়া যায় না, সেখানে উপলব্ধ এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সিগন্যাল কারণ BSNL-এর কভারেজ অন্যান্য টেলিকম সংস্থার তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু তাও এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই টেলকো ক্রমাগত লোকসানে চলছে এবং প্রতিদিনই পিছিয়ে পড়ছে। কেন আজ এই সঙ্গীন দশা BSNL-এর?

সরকারি সাহায্যে টিকে আছে BSNL

দিনের পর দিন বিএসএনএলের গ্রাহকসংখ্যা তো কমছেই, তবে তার সাথে সংস্থার অবস্থা এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে এখন কার্যত সরকারি সাহায্যে তারা টিকে আছে। হালফিল ৫জি (5G) স্পেকট্রাম নিলামে সংস্থাটি অংশগ্রহণ তো করেইনি, উপরন্তু এখনো পর্যন্ত চালু হয়নি তাদের ৪জি (4G) সার্ভিস। তবে কোম্পানির এই ভেন্টিলেশনে পৌঁছে যাওয়ার অবস্থা একদিনে হয়নি বা তাদের শুরুর দিনগুলি এমন ছিলনা। ২০০১ সালের ১লা অক্টোবর থেকে শুরু করে গোটা এক দশক একবার টেলিকম সেক্টরে একচেটিয়া আধিপত্য চালিয়েছে বিএসএনএল। অথচ আজ সরকার এই কোম্পানিকে বন্ধের হাত থেকে বাঁচাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর কারণ সম্পর্কে কথা বলতে গেলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে কয়েকটা বছর আগের সময়ে।

দুই দশক আগে বিএসএনএলের সিম পেতে কয়েকদিন লাইনে দাঁড়াতে হত। আবার কানেকশন নেওয়ার পর, কলিংয়ের জন্য লাগত প্রতি মিনিট ১ টাকা হারে ট্যারিফ চার্জ। কিন্তু প্রথম দশকের শেষ দিকে ধীরে ধীরে বেসরকারি সংস্থাগুলি সস্তা এবং সুবিধাজনক পরিষেবার হাত ধরে টেলিকম সেক্টরে প্রবেশ করতে শুরু করলে বিএসএনএলের সুদিন শেষ হয়। সহজে ও সস্তায় কানেকশন পাওয়ায় সাধারণ মানুষ এইসমস্ত কোম্পানিগুলির প্রতি আকৃষ্ট হয়, অন্যদিকে শুরু হয় বিএসএনএলের লোকসান পর্ব। ২০০৯-২০১০ অর্থবছর সংস্থা প্রথম ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ওই সময়, রিলায়েন্স (Reliance) এবং এয়ারটেল (Airtel)-এর মত কোম্পানি বাজারে প্রবেশ করে। ব্যস সেই থেকেই বিএসএনএলের আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়নি। এখন একের পর এক সস্তা প্ল্যান চালু রেখে তারা গ্রাহকদের খুশি করার চেষ্টা করছে বটে, তবে এই প্রতিযোগিতার বাজারে তারা কতদিন এভাবে ব্যবসা চালাবে বা আদৌ তাদের সময় ঘুরবে কিনা – সে সম্পর্কে কিছুই আন্দাজ করা যায় না।

ফের BSNL-এর জন্য ঘোষিত হয়েছে রিলিফ প্যাকেজ

সরকারি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, গত বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা BSNL এবং BBNL (ভারত ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক লিমিটেড) একীভূত করার সবুজ সংকেত দিয়েছে। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব BSNL-এর জন্য ফের ১,৬৪,১৫৬ কোটি টাকার রিলিফ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *