Windows 11: লঞ্চের প্রায় ১ বছর পরও ২ শতাংশের কম পিসিতে ব্যবহার হচ্ছে নতুন উইন্ডোজ ওএস

Microsoft গত বছর তাদের লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১১ (Windows 11) রোলআউট করে। তার পর থেকেই নতুন ডিজাইন ও ফিচারের সাথে আসা এই নয়া অপারেটিং…

Microsoft গত বছর তাদের লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১১ (Windows 11) রোলআউট করে। তার পর থেকেই নতুন ডিজাইন ও ফিচারের সাথে আসা এই নয়া অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট বিনামূল্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে উপযুক্ত ডিভাইসগুলিতে। কিন্তু, এত কিছু সত্ত্বেও হয়তো উইন্ডোজ ডিভাইস ব্যবহারকারীদের মনের নাগাল পেতে ব্যর্থ হয়েছে টেক জায়ান্টটি। এমনটা বলার কারণ, সম্প্রতি বিজনেস এবং কনজিউমার পিসি কেন্দ্রিক একটি সার্ভে পরিচালনা করা হয়েছিল, যেখানে, সমীক্ষাধীন পিসিগুলির মধ্যে ২% এরও কম সিস্টেমে উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। একই সাথে, মাইক্রোসফ্টের জনপ্রিয় উইন্ডোজ এক্সপি (Windows XP) ওএসের চেয়েও কম সংখ্যক সিস্টেমে সর্বশেষ উইন্ডোজ সংস্করণটি সক্রিয় বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

২ শতাংশের কম পিসি সিস্টেমে ইনস্টল করা হয়েছে Windows 11

নতুন তথ্যটি, ল্যান্সউইপার নামক একটি আইটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা দ্বারা পরিচালিত সার্ভে বা সমীক্ষার মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে। এই সার্ভের অধীনে বিশ্ব জুড়ে প্রায় ১০ মিলিয়ন পিসি বা ডেস্কটপকে নিরীক্ষণ করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে, সাম্প্রতিক এই সার্ভে রিপোর্ট অনুসারে এই, উইন্ডোজ ১১ ওএস ভার্সনের তুলনায় উইন্ডোজ এক্সপি চালিত পিসির সংখ্যা অধিক। অর্থাৎ, সমীক্ষাধীন মোট পিসি বা পার্সোনাল কম্পিউটারের মধ্যে ১.৭১% ডিভাইসে উইন্ডোজ এক্সপি উপস্থিত ছিল। আর, লঞ্চের পর থেকে এযাবৎ মাত্র ১.৪৪% ডিভাইসকে উইন্ডোজ ১১ ওএসে স্যুইচ বা আপগ্রেড করা হয়েছে।

স্পষ্টতই, একটি ছয় মাস বয়সী নয়া অপারেটিং সিস্টেমের জন্য এরূপ ইনস্টলেশন পরিসংখ্যান খুবই হতাশাজনক। তবে, যে খবরটি আমাদের সবথেকে বেশি অবাক করে দিয়েছে তা হল, ২০২২ সালে এসেও বহু পিসি সিস্টেমে এক দশক পুরোনো উইন্ডোজ ৭ বা উইন্ডোজ ৮ ওএস ব্যবহার করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে, অপারেটিং সিস্টেম দুটি যথাক্রমে ৪.৭% এবং ১.৯৯% পিসিতে বিদ্যমান।

তদুপরি, রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, দুনিয়া জুড়ে চলমান অধিকাংশ বিজনেস পিসিতে ২০১৫ সালে রিলিজ হওয়া উইন্ডোজ ১০ ওএস ব্যবহার করা হয়। সেক্ষেত্রে, মোট প্রায় ৮০.৩% বিজনেস ও কনজিউমার কম্পিউটার এখনো উইন্ডোজ ১০ দ্বারা চালিত। প্রসঙ্গত, মাইক্রোসফ্ট বর্তমানে উইন্ডোজ ১০ থেকে উইন্ডোজ ১১ ওএসে বিনামূল্যে স্যুইচ করার বিকল্প দিচ্ছে পিসি ব্যবহারকারীদের। তাসত্ত্বেও, বেশিরভাগ ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি সফ্টওয়্যার আপগ্রেড করার মতো বড় পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছে না‌ বলেই মনে হচ্ছে।

আসলে উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম রান করার জন্য প্রয়োজনীয় উন্নীত তথা লেটেস্ট হার্ডওয়্যার অনেকের পিসি ডিভাইসেই নেই। অন্যদিকে, সফ্টওয়্যারটির নতুন সিকিউরিটি প্রোটোকলের প্রতি অনেকেই আস্থা রাখতে পারছেন না। ফলে, উল্লেখিত দুটি কারণের জন্যই মূলত এই লেটেস্ট ওএস ভার্সনের ইনস্টলেশন কম হচ্ছে বলে আমাদের অনুমান। ল্যান্সউইপারের সার্ভে অনুসারে, সমীক্ষার অধীনে থাকা প্রায় ৫৫% ডিভাইসই উইন্ডোজ ১১ ওএস ভার্সনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বলে দাবি করা হয়েছে। মাইক্রোসফ্টের মতে, উইন্ডোজ ১১ ডাউনলোডের জন্য ‘ট্রাস্টেড প্ল্যাটফর্ম মডিউল ২.০’ বা TPM 2.0 ফিচারের প্রয়োজনীয়তাও একটি প্রধান কারণ হতে পারে। কেননা, বেসলাইন নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ডিভাইসে এই ফিচারের থাকা আবশ্যক।

উইন্ডোজ ১১ লঞ্চের সময়, মাইক্রোসফ্টের প্রযুক্তি প্রধান যুক্তি দিয়েছিলেন যে, সর্বোত্তম নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সময়ে ডিভাইসে TPM 2.0 ফিচারের উপস্থিতি আবশ্যক। বিশেষত, কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কাজ করা কর্পোরেট সিস্টেমে এই ফিচারটি থাকা খুবই দরকার। এক্ষেত্রে, ল্যান্সউইপার তাদের সার্ভেতে হাইলাইট করেছে যে, উইন্ডোজ ১১ ভার্সনে আপগ্রেড করার জন্য প্রায় অর্ধেক উইন্ডোজ ওয়ার্কস্টেশন (৪৭%) TPM ফিচারের প্রয়োজনীয়তা পূরণে ব্যর্থ।

তদুপরি, বিগত দু’বছরে একাধিক সংস্থা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল, তাই এইসকল অফিসগুলিতে হার্ডওয়্যার আপগ্রেড করার খুব একটা প্রচেষ্টা দেখানো হয়নি। আর, ২০২৫ সালের আগে উইন্ডোজ ১০ ওএস ভার্সনের পাশে ‘ব্যাকডেটেড’ ট্যাগ লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই, এই কথাটা অনেকেই ইতিমধ্যে বুঝে গেছেন। ফলস্বরূপ, পিসি ব্যবহারকারীরা তাদের ডিভাইসের হার্ডওয়্যার বা অপারেটিং সিস্টেম আপগ্রেড করার খুব একটা তাড়া অনুভব করছেন না। এটাও, একটা মুখ্য কারণ হতে পারে উইন্ডোজ ১১ -এ স্যুইচ না করার।

আপনাদের জানিয়ে রাখি, এই সার্ভের অধীনে বিশ্বের সমস্ত উইন্ডোজ সিস্টেমকে সংযুক্ত করা হয়নি। তবে, সমীক্ষার অধীনে থাকা ১০ মিলিয়ন পিসির থেকে একটি যুক্তিসঙ্গত ছবি উঠে এসেছে আমাদের সামনে। আর, বলতে বাঁধা নেই যে, উইন্ডোজ ১১ এর গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কিত এই তথ্য যথেষ্ট হতাশাজনক। তবে, ভবিষ্যতে গ্লোবাল মার্কেটে যখন নতুন হার্ডওয়্যার সমন্বিত ল্যাপটপ এবং পিসি লঞ্চ হবে, তখন এই দৃশ্যপট সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে যাবে বলে আশা করতে পারি আমরা।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন