IRCTC কে টুইট করে ৬৪ হাজার টাকা হারালেন মহিলা, এই ভুল আপনিও করছেন না তো?
ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার আগমন ঘটায় বর্তমান সময়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন অনেকটাই সহজসরল হয়ে গিয়েছে। যেহেতু...ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার আগমন ঘটায় বর্তমান সময়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন অনেকটাই সহজসরল হয়ে গিয়েছে। যেহেতু ঘরে বসে কয়েকটা ক্লিক মারফত এক চুটকিতেই নানাবিধ জরুরি কাজ সেরে ফেলা সম্ভবপর হচ্ছে, তাই অতি অনায়াসে সব কাজের নিষ্পত্তি করতে কমবেশি সকলেই এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলির দ্বারস্থ হয়ে থাকেন৷ আবার অন্যদিকে, সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান সময়ের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। Facebook, Twitter, Instagram-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলিতে ব্যবহারকারীরা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অনেক সময়েই শেয়ার করে থাকেন। তবে ব্যক্তিগত জীবনের কিছু তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা সম্প্রতি ঘটা এক মারাত্মক ঘটনায় হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পেরেছেন নেটিজেনরা।
আসলে ব্যাপারটা হল, বর্তমানে ইন্টারনেটের প্রাচুর্যতা এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির বহুল জনপ্রিয়তার সুবাদে মানুষ যেমন একদিকে বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছে, তেমনিই অন্যদিকে এই প্ল্যাটফর্মগুলিকে হাতিয়ার করে প্রতি মুহূর্তে নিজেদের পকেট ভারী করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্ক্যামাররা। ফলে দুর্ঘটনাবশত ছোটোখাটো কোনো ভুল করে ফেললেই বড়োসড়ো মাশুল দিতে হচ্ছে ইউজারদের। হালফিলে ঠিক এমনই একটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন মুম্বাইয়ের এক মহিলা। জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেবল একটি ট্রেনের টিকিট শেয়ার করে তিনি খুইয়েছেন প্রায় ৬৪ হাজার টাকা! কিন্তু ঠিক কীভাবে ঘটল এই মর্মান্তিক ঘটনা? আসুন জেনে নিই।
RAC টিকিট কনফার্মের জন্য টুইট করেছিলেন মহিলা, কিন্তু পরিশেষে হলেন সাইবার জালিয়াতির শিকার
রিপোর্ট অনুযায়ী, মুম্বাইয়ের ভিলে পার্লের বাসিন্দা এমএন মীনা নামের ওই মহিলা আগামী ১৪ জানুয়ারি গুজরাতের ভুজে যাওয়ার জন্য সম্প্রতি আইআরসিটিসি (IRCTC)-র ওয়েবসাইট থেকে তিনটি টিকিট বুক করেছিলেন। কিন্তু সব আসন বুক থাকায় তার টিকিট RAC হয়ে যায়। তাই তার RAC টিকিট কনফার্ম হয়েছে কি না, তা চেক করার জন্য ওই মহিলা ট্রেনের টিকিটের বিস্তারিত তথ্য ও মোবাইল নম্বর আইআরসিটিসি-কে ট্যাগ করে একটি টুইট করেন। আর এর পরেই শুরু হয় আসল খেলা!
২ টাকা পেমেন্ট করতে বলে কেটে নেওয়া হল ৬৪,০০০ টাকা!
টুইট করার খানিকক্ষণ পরেই ওই মহিলার কাছে একটি ফোন আসে। ফোনের ওপার থেকে এক ব্যক্তি দাবি করেন যে, তিনি আইআরসিটিসি-র কাস্টমার সাপোর্ট এক্সিকিউটিভ; এবং টিকিটটি যাতে কনফার্ম হয়ে যায়, তার জন্য তিনি মীনাকে সবরকম সাহায্য করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এরপর ওই ব্যক্তি মহিলাটিকে একটি লিঙ্ক পাঠান এবং তাকে সেটির সাথে সংযুক্ত থাকা ফর্মটি ফিলআপ করার নির্দেশ দেন। স্বভাবতই টিকিট কনফার্ম হওয়ার আশায় এক্সিকিউটিভের ছদ্মবেশধারী জালিয়াতের কথামতো ওই মহিলা ফর্মটি ফিলআপ করার পাশাপাশি ২ টাকা ট্রানজ্যাকশনও করেন। পরমুহূর্তে ওই ব্যক্তি জানান যে আর কোনো চিন্তা নেই, এবার তার টিকিট কনফার্ম হয়ে যাবে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এর কিছু সময় পরেই রীতিমতো মাথায় বাজ পড়ে মীনার! তিনি একটি মেসেজ মারফত জানতে পারেন, তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তোলা হয়েছে ৬৪,০১১ টাকা। খুব স্বাভাবিকভাবেই মীনা বুঝতে পারেন যে, তিনি সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। এরপর হ্যাকারদের নাগাল পেতে যে নম্বর থেকে তার কাছে ফোন এসেছিল, সেই নম্বরে একাধিকবার ফোন করেন ওই মহিলা; কিন্তু দেখা যায় যে, সেটি স্যুইচ অফ রয়েছে। ফলে জালিয়াতদের হাতেনাতে ধরার আশায় তিনি অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ভিলে পার্লে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে। এবার প্রতারকদের হদিশ আদৌ মিলবে কি না, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।