নিজের শ্রাদ্ধে সবার সাথে কথা বললেন মৃত মহিলা! প্ল্যানচেট নয়, কামাল প্রযুক্তির
মৃত্যুর পর মানুষের কী হয়, সেই রহস্য প্রত্যেকেরই কৌতূহলের বিষয়। আবার এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই মানুষের ভীতি, নানা ভৌতিক...মৃত্যুর পর মানুষের কী হয়, সেই রহস্য প্রত্যেকেরই কৌতূহলের বিষয়। আবার এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই মানুষের ভীতি, নানা ভৌতিক বা অলৌকিক কাহিনীর উত্থান! সেক্ষেত্রে যদি আপনাকে বলা হয় যে কোনো মৃত ব্যক্তি আপনার সাথে কথা বলবে, তাহলে আপনি হয়ত সেই কথা অবিশ্বাস করবেন অথবা সিনেমা-গল্পের প্ল্যানচেট নামক বস্তুটির বিষয়ে ভাববেন। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে, এমনটা সত্যিই সম্ভব, তবে কোনো অলৌকিক উপায়ে নয় বরঞ্চ বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির কল্যাণে! পাঠকদের জানিয়ে রাখি, সম্প্রতি ইংল্যান্ডের এক মহিলা নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় একটি বক্তৃতা দিয়েছেন; তবে এখানে টাইম ট্রাভেল বা প্রেতাত্মা জনিত কোনো ঘটনা এর পেছনে নেই। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI (এআই)-এর মাধ্যমে এই কাজটি ঘটিয়েছে ভিডিও প্ল্যাটফর্ম StoryFile (স্টোরিফাইল)।
নিজের স্মরণসভায় হাজির 'মৃত' মহিলা!
হলোকাস্ট প্রচারক মেরিনা স্মিথ ১৯৩৪ সালের ১৬ নভেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। এই বছর জুন মাসে তিনি মারা যান। কিন্তু ২৯শে জুলাই নটিংহামের ব্যাবওথে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে হলোগ্রামের সাহায্যে একটি ভিডিও দেখানো হয়, যা দেখে উপস্থিত ব্যক্তিদের মনে হয় মেরিনা বেঁচে আছেন। এআই চালিত হলোগ্রাফিক ভিডিও টুলের সাহায্যে তিনি সেখানে উপস্থিত মানুষের সঙ্গেও মত বিনিময় করেন। এইসময় তিনি তার জীবনের সাথে জড়িত অনেক গোপন কথাও বলেন। এমনকি তাঁর হলোগ্রাফিক অবতার, অনুষ্ঠানে উপস্থিত পরিবারের সদস্যদের প্রশ্নের জবাবও দেয়।
Holography কী?
প্রযুক্তি সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে উন্নত হচ্ছে। এরই ফলশ্রুতি হল হলোগ্রাফি (Holography), যা ফটো তোলার একটি নতুন মাধ্যম। সাধারণ কামেরায় আমরা যে ছবি তুলি তা হল দ্বিমাত্রিক, কিন্তু হলোগ্রাফি টেকনিকে তোলা ছবি বা হলোগ্রাম ত্রিমাত্রিক। এটি কোনো কিছুর ওয়েভফ্রন্ট রেকর্ড করে তাকে পরে নতুন করে পেশ করার সুযোগ দেয়। সোজা ভাষায় বললে, হলোগ্রাম বস্তুর ত্রিমাত্রিক প্রতিবিম্ব প্রদান করে এবং এতে বস্তুর ছবিটি দেখতে অবিকল আসল মনে হয়।
StoryFile ও Holography
বিবিসি (BBC)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এআই-চালিত ভিডিও প্ল্যাটফর্ম স্টোরিফাইল হলোগ্রাফি টেকনিক ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যার প্রথম ব্যবহারিক প্রয়োগ করেছেন স্টোরিফাইলের সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিফেন স্মিথের মা মেরিনা স্মিথ। স্টোরিফাইল স্টার্টআপটি ২০১৭ সালে চালু হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, স্টোরিফাইল ডিপফেক প্রযুক্তি থেকে এমনিতে বেশ আলাদা। এটি বিশেষ 3D প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগে কারো প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করে রেখে মানুষকে রিয়েল টাইমে তার সাথে যোগাযোগ করতে দেয়। এক্ষেত্রে তারা মেরিনার ভিডিও ক্লিপগুলি আগে থেকেই প্রস্তুত করে সংরক্ষণ করে রেখেছিল, শ্রদ্ধানুষ্ঠানে যা প্রয়োজন অনুযায়ী চালানো হয় – জীবন সম্পর্কিত তথ্য শেয়ারের জন্য ছোট্ট ক্লিপ কিংবা কারো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আলাদা ক্লিপ।