সাবধান! ভারতীয়দের ডেটা চীনে পাচার করছে শাওমি রেডমি, অনুমতি ও নিচ্ছে না আপনার থেকে

শাওমির বিরুদ্ধে আবার একটি অভিযোগ উঠল ব্যবহারকারীদের ডেটা পাচার করার। সিকিউরিটি রিসার্চাররা খুঁজে পেয়েছেন চাইনিজ কোম্পানিটি তাদের ব্যবহারকারীদের ডেটা চীনে পাচার করছে। এই ডেটাগুলি পাচার…

শাওমির বিরুদ্ধে আবার একটি অভিযোগ উঠল ব্যবহারকারীদের ডেটা পাচার করার। সিকিউরিটি রিসার্চাররা খুঁজে পেয়েছেন চাইনিজ কোম্পানিটি তাদের ব্যবহারকারীদের ডেটা চীনে পাচার করছে। এই ডেটাগুলি পাচার হচ্ছিল চীনের বিখ্যাত সংস্থা আলিবাবার রিমোট সার্ভারের মাধ্যমে। অন্যান্য প্রিলোডেড অ্যাপগুলির সঙ্গে শাওমির রেডমি এবং এমআই সিরিজের ফোনের ডিফল্ট ব্রাউজারের মাধ্যমে এই ডেটাগুলি ট্রান্সফার করা হচ্ছিল। এমনকি যদি আপনি ইনকগনিটো মোডে রেখেও ইন্টারনেট সার্চ করেন তাহলেও আপনার ডেটা ট্রান্সফার হয়ে যাচ্ছিল। তবে এই ডেটা পৌঁছচ্ছে শুধুমাত্র তাদের সার্ভারে, কোন তৃতীয় সার্ভারে এই ডেটা ট্রান্সফার করা হয়নি।

সিকিউরিটি রিসার্চাররা শাওমির বিভিন্ন ফোনে এই কমতিগুলি খুঁজে পেয়েছেন, যার মাধ্যমে শাওমি তাদের ব্যবহারকারীর অনুমতি না নিয়েই তাদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনে পাচার করছিল। রিসার্চাররা আবিষ্কার করেছেন যে, শাওমির অত্যন্ত জনপ্রিয় স্মার্টফোন রেডমি নোট ৮-এ এই সমস্যা সবথেকে বেশি রয়েছে। ব্রাউজারে কোন তথ্য সার্চ করার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ডাটা রিমোট সার্ভারের মাধ্যমে আলিবাবার সার্ভারে পৌঁছে যাচ্ছিল।

রিসার্চাররা জানিয়েছেন শুধুমাত্র তার পরিচয় নয়, তার ব্যক্তিগত জীবনের বেশ কিছু তথ্যও ওই সার্ভারে পৌঁছে গিয়েছে। তারা জানিয়েছেন যে, সম্ভবত শাওমি ইচ্ছাকৃতভাবে এই সফ্টওয়্যারগুলিকে রেডমি স্মার্টফোনে যোগ করেছে। রিসার্চাররা আরও জানিয়েছেন যে, রেডমি নোট ৮ স্মার্টফোনটি ব্যবহার করার সময়, ফোনটি শুধুমাত্র ব্রাউজিং হিস্ট্রি নয় আরো বেশ কিছু তথ্য রেকর্ড করছিল। এমনকি তারা জানিয়েছেন কোন কোন ফোল্ডার তিনি খুলছেন, কোন স্ক্রিন তিনি সোয়াইপ করছেন সব তথ্য রেকর্ড হচ্ছে রেডমি স্মার্টফোনে। এমনকি স্ট্যাটাস বার এবং সেটিংস পেজ অব্দি রেকর্ড হয়েছে। এই সমস্ত তথ্য পাচার করা হয়েছে রিমোট সার্ভারের মাধ্যমে যেটি লোকেট করা গিয়েছে সিঙ্গাপুরে এবং রাশিয়ায়। সর্বোপরি এই সার্ভারটির প্রধান ওয়েব ডোমেইন রেজিস্টার রয়েছে বেজিং থেকে, যেখানে রয়েছে শাওমির হেডকোয়ার্টার্স।

রিসার্চাররা আরও জানিয়েছেন যে, শুধুমাত্র রেডমি নোট ৮ নয় শাওমির আরও বেশকিছু স্মার্টফোনে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ফোনগুলি তালিকায় সবচেয়ে উপরের দিকে রয়েছে এমআই ১০, রেডমি কে২০ এবং এমআই মিক্স ৩। এছাড়াও গুগল প্লে স্টোরে উপলব্ধ এমআই ব্রাউজার প্রো এবং এমআই ব্রাউজার অ্যাপ্লিকেশন দুটিও একই ধরনের ইউজার ডেটা পাচার করছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এই দু’টি অ্যাপ্লিকেশনের এই গুগল প্লে স্টোরে ডাউনলোড সংখ্যা ১৫ মিলিয়নেরও বেশি।

শাওমি এই ডেটাগুলি ব্যবহার করে তাদের ব্যবহারকারীদের আচরণের উপর নজর রাখার জন্য। শাওমি ইতিমধ্যেই বিহেভিউরাল অ্যানালিটিকস স্টার্টআপ সেন্সার্স অ্যানালিটিক্সের সঙ্গে যুক্ত, যেটি শাওমিকে সাহায্য করে এটা বুঝতে যে তাদের ব্যবহারকারীরা কিরকম ভাবে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে শাওমি অ্যাপ্লিকেশনগুলি এই রেকর্ড করা ডেটাগুলিকে এমন সার্ভারেই পাঠাচ্ছিল যেগুলির সঙ্গে সেন্সার্স অ্যানালিটিক্সের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। তবে শুধু এইবারই প্রথম নয় এর আগেও এই ধরনের বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছিল চীনের এই জনপ্রিয় মোবাইল ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে। বিগত ২০১৪ সালে ভারতীয় বিমান বাহিনীর তরফেও শাওমির বিরুদ্ধে সিকিউরিটি গত সমস্যার একটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও শাওমি পরবর্তীকালে বিভিন্ন আপডেটের মধ্যে দিয়ে এই সমস্যাটির সমাধান করে নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *