এবার চাঁদে 4G, Nokia-র ঘোষণায় মহাকাশে বসেই Facebook করার স্বপ্ন সত্যি হবে
ভিড় থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরী করার উদ্দেশ্যে আজকাল প্রায় কম-বেশি প্রত্যেকটি টেক ব্র্যান্ডই ব্যতিক্রমী প্রজেক্ট...ভিড় থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরী করার উদ্দেশ্যে আজকাল প্রায় কম-বেশি প্রত্যেকটি টেক ব্র্যান্ডই ব্যতিক্রমী প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। ব্যতিক্রম নয় Nokia-ও। তারা চাঁদের মাটিতে ৪তম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক বা 4G পরিষেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। CNBC প্রদত্ত রিপোর্ট অনুসারে, আলোচ্য ব্র্যান্ডটি 'লুনার ডিসকভারি' প্রক্রিয়া আরো সহজসাধ্য করতে এবং মিশনে থাকা মহাকাশচারীদের আরো উন্নত কমিউনিকেশন প্রদান করতে ২০২৩ সালের শেষের দিকে চাঁদে 4G নেটওয়ার্ক চালু করার পরিকল্পনা করছে।
HMD Global মালিকাধীন আলোচ্য প্রযুক্তি সংস্থাটি, শীঘ্রই একটি স্পেসএক্স (SpaceX) রকেটের মাধ্যমে ৪জি নেটওয়ার্ক চালু করার সরঞ্জাম নিয়ে যাবে বলে জানা গেছে। এই রকেট একটি অ্যান্টেনা-সজ্জিত বেস স্টেশন দ্বারা চালিত হবে, যা একটি নোভা-সি লুনার (Nova-C lunar) ল্যান্ডারে সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি এর সাথে একটি সোলার-পাওয়ারড বা সৌরশক্তি চালিত রোভারও দেওয়া হবে। জানা যাচ্ছে, এই ল্যান্ডার এবং রোভারের মধ্যে দিয়েই ৪জি LTE সংযোগ স্থাপন করা হবে। সর্বোপরি নোকিয়ার ৪জি নেটওয়ার্কটি, 'ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন' ওরফে NASA সংস্থার আসন্ন আর্টেমিস ১ (Artemis 1) মিশনের সময় ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে। আপনাদের অবগতের জন্য জানিয়ে রাখি, ২০২৫ সাল নাগাদ আর্টেমিস ১ মিশন বাস্তবায়িত হলে ১৯৭২ সালের পর আবার চাঁদের মাটিতে পা রাখবে মানুষ।
প্রসঙ্গত চলতি বছরে অনুষ্ঠিত 'মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস' ওরফে MWC 2023 টেক ইভেন্ট চলাকালীন নোকিয়া, লুনার নেটওয়ার্ক চালু করার কথা নিশ্চিত করেছিল। এই বিষয়ে সংস্থাটি জানিয়েছিল -"৪জি নেটওয়ার্ক, অত্যাবশ্যক কমান্ড ও কন্ট্রোল ফাংশন, লুনার রোভারের রিমোট কন্ট্রোল, রিয়েল-টাইম নেভিগেশন এবং হাই ডেফিনিশন ভিডিওর স্ট্রিমিং সহ বিভিন্ন ধরণের ডেটা ট্রান্সমিশন অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ক্রিটিকাল কমিউনিকেশন ক্ষমতা প্রদান করতে সহায়তা করবে।"
আবার এক নোকিয়া এক্সিকিউটিভ জানিয়েছেন যে, টেরেস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক ভবিষ্যতে সংঘটিত হতে চলা মহাকাশ মিশনগুলির জন্য যোগাযোগের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে। আরো সহজ ভাষায় বললে, চাঁদে ৪জি নেটওয়ার্ক চালু করা হলে মহাকাশচারীদের জন্য মিশনে থাকাকালীন সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখার প্রক্রিয়া আরো সহজ হবে।
সবকিছু যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে তবে চলতি বছরের শেষের দিকে ৪জি লুনার নেটওয়ার্ক চালু করা হতে পারে বলে আশা করছে নোকিয়া। মুর ইনসাইটস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির (Moor Insights & Strategy) প্রধান বিশ্লেষক আনশেল সাগ (Anshel Sag) বলেছেন যে - “যদি হার্ডওয়্যার যথা সময়ে প্রস্তুত এবং ভেরিফাই করা সম্ভব হয়, তাহলে নোকিয়া ২০২৩ সালেই চাঁদে ৪জি চালু করতে পারবে, যদি না সংস্থাটির লঞ্চ পার্টনারের তরফ থেকে কোনো বাধা বা বিলম্ব আসে।"
নোকিয়া মূলত চাঁদে বরফ আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে ৪জি নেটওয়ার্ক স্থাপন করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও পূর্ববর্তী কয়েকটি রিপোর্ট অনুসারে, চাঁদের পৃষ্ঠের বেশিরভাগই অংশই শুষ্ক। তবে সাম্প্রতিক কিছু ইন্টারনাল মিশনের ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে যে, চাঁদের মেরুগুলির চারপাশে থাকা গর্তে বরফের অবশিষ্টাংশ আবিষ্কৃত হয়েছে। এবার আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, চাঁদে বরফ থাকা কেন গুরুত্বপূর্ণ? আসলে, বরফকে জলে রূপান্তর করে পানীয় হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি, এই বরফকে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন শক্তিতে রূপান্তরিত করে রকেটকে পাওয়ার দেওয়া যাবে। এছাড়া এই বরফের জলকে কাজে লাগিয়ে মহাকাশচারীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলেও দাবি করা হচ্ছে।