5G পরিষেবা পেতে নতুন সিম প্রয়োজন? Jio Airtel কি কি 5G প্ল্যান লঞ্চ করেছে জেনে নিন
চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই দেশে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন যুগের সূচনা হয়ে গিয়েছে। ওইদিন নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে...চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই দেশে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন যুগের সূচনা হয়ে গিয়েছে। ওইদিন নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস (IMC) ২০২২ ইভেন্টে ভারতে 5G পরিষেবা লঞ্চের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই টেলিকম কোম্পানি Reliance Jio এবং Airtel ইতিমধ্যেই ভারতের নির্বাচিত কিছু শহরে তাদের দুরন্ত গতির 5G সার্ভিস চালু করেছে। তবে এই মুহূর্তে সারা ভারত জুড়ে 5G পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। তদুপরি, নির্বাচিত কিছু ব্যবহারকারীদের জন্য এই ঝড়ের গতির নেট সার্ভিস উপলব্ধ হওয়ায় উক্ত শহরগুলির সকল বাসিন্দারাও বর্তমানে 5G নেটওয়ার্কের অ্যাক্সেস পাচ্ছেন না। তদুপরি, দুটি সংস্থাই যেহেতু বাছাই করা কয়েকটি ব্যান্ডে নিজেদের 5G সার্ভিস চালু করেছে, তাই সমস্ত 5G কানেক্টিভিটির স্মার্টফোনেও বর্তমানে এই পরিষেবা মিলছে না। সেক্ষেত্রে গ্রাহকদের মনে নবাগত পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সার্ভিসকে কেন্দ্র করে বর্তমানে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি মারছে। তাই পাঠকদের মনের কৌতূহল মেটাতে এই প্রতিবেদনে আমরা 5G পরিষেবার সাথে সম্পর্কিত এমনই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর আপনাদেরকে জানাতে চলেছি।
5G কী?
৫জি হল সবচেয়ে সাম্প্রতিক (লেটেস্ট) নেটওয়ার্ক স্ট্যান্ডার্ড, যা ইউজারদেরকে ৪জি (4G)-র তুলনায় আরও উন্নত এবং দুরন্ত গতির নেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। বিশেষ কিছু লো-ব্যান্ড, মিড-ব্যান্ড এবং ২৪ গিগাহার্টজ থেকে শুরু করে ৫৪ গিগাহার্টজের মধ্যবর্তী সমস্ত হাই-ব্যান্ড মিলিমিটার ওয়েভে ৫জি পরিষেবা উপলব্ধ হবে। এক্ষেত্রে বলে রাখি, মিড-ব্যান্ড ৫জি-র ক্ষেত্রে ১.৭ গিগাহার্টজ থেকে ৪.৭ গিগাহার্টজের মধ্যবর্তী এমএমওয়েভ ব্যবহৃত হয়, যেখানে হাই-ব্যান্ডের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানটি দাঁড়ায় ২৪-৪৭ গিগাহার্টজ। তবে লো-ব্যান্ডের ৫জি-তে ৪জি-র মতোই ৬০০ মেগাহার্টজ থেকে ৯০০ মেগাহার্টজের মধ্যবর্তী এমএমওয়েভ ব্যবহৃত হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত জুলাইয়ের শেষে আয়োজিত ৫জি স্পেকট্রামের নিলামপর্বে ২০ বছরের মেয়াদে মোট ৭২০৯৭.৮৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম নিলামে ওঠে।
5G ব্যবহারের জন্য কি একটি নতুন SIM কার্ডের প্রয়োজন হবে?
এর উত্তর হল, না; এই মুহূর্তে ভারতে পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবা ব্যবহার করতে হলে ইউজারদের কোনো ৫জি সিম কার্ড ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না। যদিও শোনা যাচ্ছে যে, এয়ারটেল এবং জিও খুব শীঘ্রই মার্কেটে ৫জি সিম নিয়ে হাজির হবে; তবে এই মুহূর্তে সংস্থাদ্বয়ের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বর্তমানে গ্রাহকরা তাদের বিদ্যমান ৪জি সিমেই ৫জি পরিষেবা উপভোগ করতে সক্ষম হবেন।
এই মুহূর্তে ভারতে কোন কোন 5G রিচার্জ প্ল্যান উপলব্ধ রয়েছে?
জিও এবং এয়ারটেল এখনও আপামর ভারতবাসীর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ৫জি রিচার্জ প্ল্যান রোলআউট করেনি। বর্তমানে ইউজারদেরকে বিদ্যমান ৪জি রিচার্জ প্ল্যানেই জিও ৫জি ওয়েলকাম অফার (Jio 5G Welcome Offer) মারফত আনলিমিটেড ৫জি ডেটা অফার করছে রিলায়েন্স জিও। তবে এক্ষেত্রে কিন্তু একটা শর্ত প্রযোজ্য রয়েছে; জিও-র তরফে জানানো হয়েছে যে, কোম্পানির আনলিমিটেড ৫জি পরিষেবা ব্যবহার করতে হলে ইউজারদের স্মার্টফোনে ন্যূনতম ২৩৯ টাকা কিংবা তার বেশি মূল্যের প্ল্যান রিচার্জ করা থাকতে হবে। তদুপরি, গ্রাহকদের ডিভাইসে এন২৮ (n28), এন৭৮ (n78) কিংবা এন২৫৮ (n258) ব্যান্ড থাকাও আবশ্যক। অন্যদিকে, এখন এয়ারটেলও উপভোক্তাদেরকে তাদের বিদ্যমান ৪জি প্ল্যান মারফতই ঝড়ের গতির ৫জি পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে।
Jio এবং Airtel-এর 5G পরিষেবা পেতে হলে ইউজারদেরকে কী করতে হবে?
আগেই বলেছি যে, বর্তমানে কেবলমাত্র Jio এবং Airtel ভারতের নির্বাচিত কিছু শহরের বাসিন্দাদের 5G পরিষেবা প্রদান করা শুরু করেছে। তাই এই মুহূর্তে পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সার্ভিসের স্বাদ পেতে চাইলে ইউজারদেরকে অবশ্যই উক্ত সংস্থাদ্বয়ের গ্রাহক হতে হবে। সেক্ষেত্রে বলে রাখি, Airtel ব্যবহারকারীরা এয়ারটেল থ্যাঙ্কস (Airtel Thanks) অ্যাপে গিয়ে চেক করে দেখতে পারেন যে তারা সংস্থার 5G পরিষেবা ব্যবহারের জন্য এলিজিবল কি না। অন্যদিকে, নির্বাচিত কিছু ভাগ্যবান গ্রাহককে Jio ইতিমধ্যেই 5G সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য ইনভিটেশন পাঠাতে শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে উপভোক্তারা মাই জিও (My Jio) অ্যাপে গিয়ে চেক করে দেখতে পারেন যে তারা এরকম কোনো নোটিফিকেশন পেয়েছেন কি না। আর উক্ত অ্যাপগুলিতে এরকম কোনো নোটিফিকেশনের দেখা পেলেই ইউজাররা নিশ্চিতভাবে 5G পরিষেবা ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে সক্ষম হবেন।