TV চ্যানেলে দেখাতে হবে দেশাত্মবোধক কনটেন্ট, আপলিঙ্ক-ডাউনলিঙ্ক নিয়েও নয়া পদক্ষেপ কেন্দ্রের
গত বুধবার মোদী মন্ত্রিসভার তরফে টিভি চ্যানেলগুলির জন্য আপলিঙ্কিং এবং ডাউনলিঙ্কিংয়ের নতুন নির্দেশিকা অনুমোদন করা হয়েছে।...গত বুধবার মোদী মন্ত্রিসভার তরফে টিভি চ্যানেলগুলির জন্য আপলিঙ্কিং এবং ডাউনলিঙ্কিংয়ের নতুন নির্দেশিকা অনুমোদন করা হয়েছে। প্রায় ১১ বছর পরে নতুন এই 'গাইডলাইনস ফর আপলিঙ্কিং অ্যান্ড ডাউনলিঙ্কিং অফ টেলিভিশন চ্যানেলস ইন ইন্ডিয়া, ২০২২' (Guidelines for Uplinking and Downlinking of Television Channels in India, 2022) প্রকাশিত হল। এর আগে শেষবার ২০১১-এ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের (Ministry of Information & Broadcasting) তরফে এই নির্দেশিকাটি সংশোধন করা হয়েছিল। নতুন নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, কোনো ইভেন্টের লাইভ সম্প্রচারের জন্য এখন আর আগে থেকে কোনোরকমের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই; তবে সম্প্রচারের জন্য ইভেন্টগুলিকে নথিভুক্ত করতে হবে। এছাড়াও, ভারতীয় টেলিপোর্ট থেকে বিদেশি চ্যানেল আপলিঙ্কিংয়ের অনুমতি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। এর ফলে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে; তদুপরি, ভারত অন্য দেশের টেলিপোর্ট হাব হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব অপূর্ব চন্দ্র (Apurva Chandra)।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অপূর্ব চন্দ্র একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে, দেশের ৮৯৮ টি টেলিভিশন সম্প্রচারকের মধ্যে ৫৩২ টি চ্যানেল তাদের পরিষেবাগুলির আপলিঙ্কিং এবং ডাউনলিঙ্কিংয়ের জন্য বিদেশী উপগ্রহ ব্যবহার করে। তবে সরকার উপগ্রহগুলির আপলিঙ্কিংকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে চায়, যাতে ভারত অতি অনায়াসে আপলিঙ্কিংয়ের একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, স্যাটেলাইট টেলিকমিউনিকেশনে আপলিঙ্ক একটি গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে একটি উপগ্রহের লিঙ্ক। অন্যদিকে, ডাউনলিঙ্ক হল এক বা একাধিক গ্রাউন্ড স্টেশনগুলির মধ্যে সংযোগ। সেক্ষেত্রে নয়া নির্দেশিকা কার্যকর হলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে বলেই আশা করা যায়।
রোজ ৩০ মিনিট ‘দেশপ্রেমিক’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে টিভি চ্যানেলগুলিকে
এর পাশাপাশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলির উদ্দেশ্যে জারি করা সরকারের নয়া গাইডলাইনে আরও বলা হয়েছে যে, দিনে অন্তত আধ ঘণ্টার জন্য এমন অনুষ্ঠান দেখাতেই হবে, যা জাতীয় স্বার্থে বা জনস্বার্থে কাজে লাগে। নির্দেশিকায় সাফ বলা হয়েছে যে, টেলিভিশন চ্যানেলগুলি যে ‘এয়ারওয়েভ’ ব্যবহার করে, সেটা আদতে জাতীয় সম্পত্তি। ফলে সেটাকে এমনভাবে ব্যবহার করা উচিত যাতে তা দেশের কাজে লাগে। তদুপরি, কোন সময়ে ওই বিশেষ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করতে হবে, সেটাও মন্ত্রকই ঠিক করে দেবে। অর্থাৎ সোজা কথায় বললে, কেন্দ্রের বলে দেওয়া সময়েই টিভি চ্যানেলগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে জাতীয়তাবাদী অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হল, এই জাতীয়তাবাদী অনুষ্ঠানের মধ্যে কী কী পড়ে? এই প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব অপূর্ব চন্দ্র জানিয়েছেন যে, এর জন্য মূলত ৭-৮ টি থিমের কথা ভাবা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারী কল্যাণ, শিক্ষা ও শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি, কৃষি এবং গ্রামোন্নোয়ন, পরিবেশ এবং সাংস্কৃতিক হেরিটেজ রক্ষা, জাতীয় সংহতি এবং অনগ্রসরদের কল্যাণ সম্পর্কিত বিষয়। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রধানত এই বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করেই টিভি চ্যানেলগুলিকে আধ ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করতে হবে।
যে টিভি চ্যানেল কেন্দ্রের নির্দেশ মানবে না, তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে সরকার
অপূর্ব চন্দ্র আরও বলেছেন যে, কবে থেকে এবং কোন টাইম স্লটে এই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করতে হবে, তা ব্রডকাস্টার এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার খুব শীঘ্রই টিভি চ্যানেলগুলিকে জানিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, এই নির্দেশিকা সমস্ত চ্যানেলের জন্য কার্যকর হবে, এবং একবার এই নিয়ম চালু হলে সব চ্যানেল তা মেনে চলছে কি না, তার ওপর মন্ত্রক কড়া নজর রাখবে। সেক্ষেত্রে যারা এই নির্দেশিকা মানবে না, তাদের কাছে কৈফিয়ত তলব করবে কেন্দ্র।