5G Launch: ভারতে লঞ্চ হল পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক, ৪জি -র তুলনায় ২০ গুন দ্রুত ৫জি
ভারতীয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদেশে 5G ইন্টারনেট পরিষেবা...ভারতীয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদেশে 5G ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করলেন। তিনি দিল্লির প্রগতি ময়দানে আজ অর্থাৎ ১লা অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া 'ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস' (IMC 2022) ইভেন্টের প্রথম দিনে এই ৫তম সেলুলার নেটওয়ার্কিং পরিষেবাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন। এক্ষেত্রে, 5G নেটওয়ার্কিংয়ের সুবিধা সর্বপ্রথম শিল্প কেন্দ্রগুলির জন্য এবং তারপর আপামর জনগণের জন্য চালু করা হবে। যদিও, প্রায় প্রত্যেকটি টেলিকম সংস্থাই 5G রোলআউটের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে।
IMC 2022 ইভেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতে 5G পরিষেবা চালু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি IMC 2022 ইভেন্টে ৫জি পরিষেবার ব্যবহার, সলিউশন ও এর সাথে সংযুক্ত সম্ভাবনাগুলিকে প্রদর্শন করেন এবং কীভাবে এই ব্রডব্যান্ড সেলুলার নেটওয়ার্ক কাজ করবে তাও বুঝিয়েছেন। পাশাপাশি, এই ৫তম প্রজন্মের ইন্টারনেট অনুষ্ঠানিকভাবে রোলআউট হওয়ার পর কি কি পরিবর্তন দেখা যাবে এবং তার ফলে এটি বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রকে কীভাবে প্রভাবিত করবে এই বিষয় সংক্রান্ত তথ্যের উল্লেখও ছিল প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়। প্রসঙ্গত, ১০০টিরও বেশি স্টার্ট-আপ, যারা মূলত ৫জি সম্পর্কিত সফ্টওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার সমাধান নিয়ে কাজ করছে আলোচ্য ইভেন্টে অংশ নিয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে এই শহরগুলিতে 5G পরিষেবা পাওয়া যাবে
এই বিষয়ে ভারতীয় টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ জানিয়েছে যে, দেশের মোট ১৩টি বড় শহরে বসবাসকারীরা সর্বপ্রথম ৫জি পরিষেবা ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। এই শহরগুলি হল - দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, কলকাতা, চণ্ডীগড়, বেঙ্গালুরু, গুরুগ্রাম, হায়দ্রাবাদ, লখনউ, পুনে, গান্ধীনগর, আহমেদাবাদ এবং জামনগর। উল্লেখিত শহরগুলির পর অর্থাৎ চলতি বছরের শেষার্ধ নাগাদ অন্যান্য বড় শহর এবং ২০২৩ সালে বাদবাকি সার্কেলকেও ৫জি নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, বর্তমানে মাত্র ৮টি শহর এই 'নেক্সট জেনারেশন' নেটওয়ার্কিংয়ের সুবিধা পাচ্ছেন।
4G -এর চেয়ে ২০ গুণ বেশি স্পিড অফার করবে 5G
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে ৫জি ডিভাইস ব্যবহারকারীরা ৪জি -এর তুলনায় ২০ গুণ পর্যন্ত অধিক স্পিডের সাথে ইন্টারনেট সার্ভ করার সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে, ২০Gbps পর্যন্ত স্পিডে ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা প্রদান করতে সক্ষম হবে ৫জি। অন্যদিকে আরেকটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভারতবাসী ৫জি পরিষেবায় আপগ্রেড করার জন্য ৪৫% পর্যন্ত প্রিমিয়াম দিতে ইচ্ছুক। আপনাদের অবগতের জন্য জানিয়ে রাখি, এই মুহূর্তে দেশে ৫জি রেডি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ মিলিয়নেরও গন্ডি পেরিয়ে গিয়েছে।
5G এর মাধ্যমে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে
টেলি কমিউনিকেশনে সাথে সম্পর্কিত এই নতুন প্রযুক্তি - রোবোটিক্স, ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) এবং মেশিন লার্নিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। ৫জি শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদেরই উপকৃত করবে না, পাশাপাশি - শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন, শিল্প, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং কৃষির মতো ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। সমালোচকদের মতে, এই প্রযুক্তির রোলআউটের পর এমন অনেক হার্ডওয়্যার সলিউশন সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা যাবে, যা দেশের উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করবে।
টেলিকম কোম্পানিগুলি 5G ব্যবহারের বিবিধ পদ্ধতি প্রদর্শন করেছে
রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio), ভোডাফোন-আইডিয়া (Vodafone-Idea) এবং ভারতী এয়ারটেল (Bharti Airtel) -এর মতো প্রথমসারির টেলিকম সংস্থাগুলি আজকের লঞ্চ-পর্ব অনুষ্ঠিত হওয়ার পর, ৫জি পরিষেবার সাথে সম্পর্কিত তাদের কর্মকান্ড তথা 'রিসার্চ ওয়ার্ক' প্রদর্শন করেছে। যেমন জিও, মুম্বাইয়ের একজন স্কুল শিক্ষককে ট্রু ৫জি (True 5G) -এর সাহায্যে মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং উড়িষ্যার তিনটি ভিন্ন স্থানের সাথে সংযুক্ত করেছে। মুকেশ আম্বানি অধীনস্ত এই সংস্থাটি কোনো 'অগমেন্টেড রিয়ালিটি' বা AR ডিভাইস ছাড়াই অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR) এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে ৫জি নেটওয়ার্কিংয়ের সহজ ব্যবহার প্রদর্শন করেছে।
অন্যদিকে, এয়ারটেল তাদের ডেমোতে দেখিয়েছে কীভাবে উত্তরপ্রদেশের একটি মেয়ে হলোগ্রাম প্রযুক্তির সাহায্যে সৌরজগৎ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছে এবং অভিজ্ঞ হয়েছে। আবার, ভোডাফোন-আইডিয়া দিল্লি মেট্রোর ভূগর্ভস্থ টানেলে কর্মরত ব্যক্তিদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই নব্য প্রজন্মের নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি ব্যবহারের একটি ডেমো প্রদর্শন করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। উক্ত টেলিকম সংস্থাটি দেখিয়েছে যে, কীভাবে 'ভার্চুয়াল রিয়ালিটি' (VR) এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি (AI) -এর সাহায্যে কর্মীদের রিয়েল-টাইমে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব।
এককথায়, IMC 2022 চলাকালীন অফিসিয়াল হওয়া ৫তম সেলুলার নেটওয়ার্কের সাথে ভারত এখন প্রযুক্তিগতভাবে নিজেকে আরো উন্নীত করার পথে পা বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলাফল আমরা অদূর ভবিষ্যতেই চাক্ষুস করবো।