গোটা বিশ্বে সবার আগে 6G ডিভাইস আনল জাপান, স্পিড 5G-র থেকেও 500 গুণ দ্রুত
দেড় বছর আগে আনুষ্ঠানিক লঞ্চ হলেও এখন ভারতের অনেক জায়গাতেই 5G পরিষেবা ঠিকমতো পৌঁছায়নি। আর শুধু আমাদের দেশের কথাই বলছি...দেড় বছর আগে আনুষ্ঠানিক লঞ্চ হলেও এখন ভারতের অনেক জায়গাতেই 5G পরিষেবা ঠিকমতো পৌঁছায়নি। আর শুধু আমাদের দেশের কথাই বলছি কেন, বিশ্ব বহু ভূখন্ডও এখনও পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই 6G লঞ্চের দিকে এগিয়ে গেল জাপান। আসলে বিশ্বব্যাপী 5G চালুর পরপরই বহু দেশ 6G লঞ্চ সম্পর্কে আলোচনা চালাচ্ছিল, শুরু করেছিল কাজও। কিন্তু সবাইকে পেছনে ফেলে এশিয়া মহাদেশের অন্যতম প্রধান দেশ জাপান আগামী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক আনার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। আসলে একটি জাপানি কনসোর্টিয়াম সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম হাই-স্পিড 6G প্রোটোটাইপ ডিভাইসের ওপর থেকে পর্দা সরিয়েছ।
6G লঞ্চের দিকে এগিয়ে গেল জাপান, আনল নয়া ডিভাইস
রিপোর্ট অনুযায়ী, জাপানি কনসোর্টিয়াম কর্তৃক চালু হওয়া নতুন ৬জি প্রোটোটাইপ ডিভাইসটি ১০০ জিবিপিএস স্পিডে ৩৩০ ফুটেরও বেশি দূরত্বে ডেটা শেয়ার করতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এই স্পিড বর্তমান ৫জি প্রসেসরের চেয়ে ২০ গুণ দ্রুত এবং এর সামগ্রিক স্পিড ৫জি ফোনের গড় স্পিডের চেয়ে ৫০০ গুণ দ্রুত। সেক্ষেত্রে একবার ৬জি বাজারে চালু হয়ে গেলে সেকেন্ডে ৫টি এইচডি (HD) সিনেমা ডাউনলোড করা যাবে, আর সেইদিন হয়তো খুব বেশি দূরে নেই!
উল্লেখ্য, আলোচ্য প্রোটোটাইপ ডিভাইসটি চারটি প্রধান জাপানি টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি – ডোকোমো, এনটিটি কর্পোরেশন, এনইসি কর্পোরেশন এবং ফুজিৎসু মিলে তৈরি করেছে। এই সংস্থাগুলি দীর্ঘদিন ধরে ডিভাইসটি নিয়ে কাজ করছিল, যারপর গত ১১ই কনসোর্টিয়ামের তরফে পরীক্ষার সফলতার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে, তাদের প্রোটোটাইপ ডিভাইসটি ১০০ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের সাহায্যে বাড়ির ভেতরে এবং ৩০০ গিগাহার্টজ ব্যান্ড ব্যবহার করে আউটডোরে ১০০ জিবিপিএস স্পিড অফার করতে পারে।
এইসব সুবিধা দেবে 6G
যেখানে ৪জি (4G) থেকে ৫জিতে উন্নীত নেটওয়ার্ক, ভিডিও স্ট্রিমিং এবং মোবাইল ব্রাউজিংয়ের মতো কাজের জন্য ডেটা ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করে, তার প্রেক্ষিতে আসন্ন ৬জি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি দুনিয়ার জন্য নতুন দরজা খুলে দিতে পারে। কেননা, ৬জি, হাই হাই-স্পিডের পাশাপাশি রিয়েল-টাইম হলোগ্রাফিক কমিউনিকেশন, ইমার্সিভ ভার্চুয়াল এবং মিশ্র-রিয়েলিটি এক্সপিরিয়েন্সের মতো জিনিসগুলি কার্যকর করার দিকেও নজর দেবে।
6G সম্পর্কে আশায় থাকবেননা
এতদূর পর্যন্ত পড়ে নিশ্চয়ই এটা মনে হচ্ছে যে ৬জির এই স্পিড বেশ চিত্তাকর্ষক, কিন্তু এতে করে আগেভাগে নিজের প্রত্যাশা খুব বেশি বাড়াবেন না। কারণ ৬জি নেটওয়ার্ক বর্তমানে কেবলমাত্র একটি ডিভাইসেই পরীক্ষিত হয়েছে, তাছাড়া নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিরও নিজস্ব কিছু নেতিবাচক দিকও থাকে। যেমন, 'লেটেস্ট' ৫জি নেটওয়ার্কের বর্তমান গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী থিয়োরিটিকাল ম্যাক্সিমাম স্পিড ১০ জিবিপিএস। তবে খাতায়-কলমে এত স্পিড হলেও, বাস্তবে এর গতি সাধারণত অনেক কম – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টি-মোবাইল ইউজাররা ৫জিতে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে প্রায় ২০০ মেগাবাইট স্পিড পান। এত কম গতির একটি কারণ হাই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের সীমাবদ্ধতা।
সেক্ষেত্রে ৬জিতে রকেট স্পিডের ইন্টারনেট পেতে হলে আরও উচ্চতর ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের প্রয়োজন হবে, যা পাওয়া কোনোমতেই সহজ হবেনা। তাছাড়া জাপানের সাম্প্রতিক প্রোটোটাইপ ডিভাইসের প্রেক্ষিতে বলা যায়, বাড়ির দেওয়াল এবং বৃষ্টির মতো বহু জিনিস ৬জি সিগন্যালকে অনেকাংশে ব্যাহত করতে পারে। অর্থাৎ, ৬জি স্পিড উপভোগ করতে এখনও অনেক কাঠ-খড় পোহাতে হবে।