4G-র থেকে ১৬.৫ গুন দ্রুত 5G, প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ স্পিড ৬৫০ এমবি

সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত অক্টোবর মাসের শুরুতে ভারতে 5G নেটওয়ার্ক লঞ্চ হয়েছে। ইতিমধ্যেই এদেশের নির্বাচিত কয়েকটি শহরে এই নতুন পরিষেবা চালু করেছে Bharti Airtel এবং Reliance Jio। এর ফলে ইউজাররা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নিজেদের বিদ্যমান 4G সিমেই পঞ্চম প্রজন্মের হাই-স্পিড ইন্টারনেট সার্ভিস ব্যবহার করতে পারছেন। উল্লেখ্য যে, 5G-র আগমনের পূর্বে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছিলেন যে, 4G-র তুলনায় 5G-তে ২০ থেকে ৩০ গুণ দ্রুত স্পিড পাওয়া যাবে। তবে আদতে কি পাওয়া যাচ্ছে এই স্পিড? সেক্ষেত্রে বলি, ওপেনসিগন্যাল (Opensignal)-এর এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। গত অক্টোবর মাসে গোটা দেশে 4G-র তুলনায় 5G গড়ে কত দ্রুত স্পিড প্রদান করেছে, সে সম্পর্কে বিশদ বিবরণ জনসমক্ষে এনেছে Opensignal।

4G-র চেয়ে বহুগুণ দ্রুততর নেট স্পিড প্রদান করতে সক্ষম 5G

ওপেনসিগন্যালের মতে, ৫জি নেটওয়ার্কে ভারতীয় ব্যবহারকারীরা ৪জি-র তুলনায় বহুগুণ দ্রুত ইন্টারনেট স্পিড পেতে সক্ষম হয়েছেন। সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫জি ব্যবহারকারীরা তাদের মোবাইলে ৪জি ইউজারদের তুলনায় গড়ে ১৬.৫ গুণ দ্রুতগতির নেট অ্যাক্সেস করতে পেরেছেন। ৫জি ইউজাররা গড়ে ২৪২.১ এমবিপিএস ডাউনলোড স্পিড পেয়েছেন, যেখানে ৪জি ব্যবহারকারীরা মাত্র ১৪.৭ এমবিপিএস গতিতে নেট ব্যবহার করতে পেরেছেন বলে জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ২০ কিংবা ৩০ গুণ না হলেও ৪জি-র তুলনায় ৫জি-তে যে অনেকটাই দ্রুতগতির নেট পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে, সেকথা নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য।

তবে পিক (সর্বোচ্চ) ৫জি এবং ৪জি ডাউনলোড স্পিডের কথা বলতে গেলে, ৪জি-র তুলনায় ১১.৬ গুণ দ্রুত নেট সার্ভিস দিয়েছে ৫জি। ৪জি-র ৫৯.৫ এমবিপিএসের তুলনায় ৫জি-র ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬৯০.৬ এমবিপিএস স্পিড পরিলক্ষিত হয়েছে। এমনকি, আপলোড স্পিড ডিপার্টমেন্টেও ৪জি-কে জোরদার টেক্কা দিয়েছে ৫জি। প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গিয়েছে যে, অক্টোবরে গড় ৫জি আপলোড স্পিড ছিল ২১.২ এমবিপিএস, যেখানে ৪জি-র গড় আপলোড স্পিড মাত্র ৩.৯ এমবিপিএস। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে, আপলোডের ক্ষেত্রেও ৪জি-র থেকে ৫.৪ গুণ দ্রুত নেট স্পিড অফার করেছে ৫জি।

কোন কোন শহরে এই মুহূর্তে উপলব্ধ রয়েছে 5G পরিষেবা?

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এয়ারটেল ভারতের মোট ১২ টি শহরে ৫জি চালু করেছে, যার মধ্যে রয়েছে চেন্নাই, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, শিলিগুড়ি, দিল্লি, গুয়াহাটি, পাটনা, নাগপুর, পানিপথ, বারাণসী এবং গুরুগ্রাম। কিছুদিন আগে পর্যন্ত পুনের বিমানবন্দরেও সংস্থাটির ৫জি সার্ভিস উপলব্ধ ছিল, কিন্তু এখন টেলিযোগাযোগ বিভাগের (DoT) আদেশে এটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বর্তমানে মুম্বাই, বারাণসী, দিল্লি-এনসিআর অঞ্চল, গুজরাত (৩৩ টি জেলা সদর), বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ, পুনে এবং নাথদ্বারাতে (৫জি ওয়াই-ফাই) জিও-র ৫জি পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে গোটা দেশে পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সার্ভিস রোলআউট করার কাজে কোম্পানি দুটি যেভাবে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে, তাতে চলতি বছরের শেষের দিকে আরও বেশ কয়েকটি শহরে সংস্থাদ্বয়ের ৫জি পরিষেবা উপলব্ধ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।

হাতে একটি 5G সাপোর্টেড স্মার্টফোন থাকলেই এই রকেট গতির নেট পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন ইউজাররা

প্রসঙ্গত বলে রাখি, Jio বর্তমানে ইউজারদেরকে স্ট্যান্ডঅ্যালোন (SA) নেটওয়ার্কের মাধ্যমে 5G পরিষেবা অফার করছে। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে নন-স্ট্যান্ডঅ্যালোন (NSA) 5G নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদেরকে ‘রকেটের’ গতির নেট সার্ভিস প্রদান করছে Airtel। উভয় সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে যে, এই মুহূর্তে ভারতে Airtel এবং Jio-র পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবা ব্যবহার করতে হলে 5G সিম কার্ডের প্রয়োজন হবে না। ব্যবহারকারীরা তাদের 5G সাপোর্টেড স্মার্টফোনে বিদ্যমান 4G সিমের রিচার্জ প্ল্যান মারফতই এই ঝড়ের গতির নেট পরিষেবা ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে পারবেন।