Recharge Plan: ফের বাড়ছে মোবাইলের খরচ! 4G প্ল্যানের দাম বাড়াতে তৎপর জিও, এয়ারটেলরা

চলতি মাসের শুরুতেই এদেশে রোলআউট হয়ে গিয়েছে বহুপ্রতীক্ষিত 5G নেটওয়ার্ক। ইতিমধ্যেই Jio এবং Airtel ভারতের নির্বাচিত কিছু শহরের বাসিন্দাদের এই পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। দুটি কোম্পানির তরফেই জানানো হয়েছে যে, যতদিন না আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো 5G প্ল্যান লঞ্চ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত ইউজাররা তাদের বিদ্যমান 4G রিচার্জ প্ল্যান মারফতই দুরন্ত গতির নেট পরিষেবা ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে সক্ষম হবেন। তবে বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে ইতিমধ্যেই এ খবর সামনে এসেছে যে, উভয় সংস্থাই খুব শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে 5G প্ল্যান লঞ্চ করতে পারে। সেক্ষেত্রে আসন্ন 5G প্ল্যানের দাম কত হবে, সেই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টেকমহলে বিস্তর জল্পনাকল্পনা চলছে। বেশ কিছু রিপোর্ট বলছে, 4G-র তুলনায় 5G প্ল্যানের দাম খানিকটা বেশি হবে; আবার কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে যে, 4G এবং 5G প্ল্যানের দামের মধ্যে খুব একটা তফাৎ থাকবে না। তবে এখন এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, এই মুহূর্তে 4G প্ল্যানের তুলনায় 5G প্ল্যানের দাম বাড়ানোর দিকে বিশেষ মনোনিবেশ না করে টেলিকম কোম্পানিগুলি 4G প্ল্যানের দাম বাড়ানোরই পরিকল্পনা করছে। কিন্তু কেন? আসুন জেনে নিই।

5G প্ল্যানের বেশি চাহিদা থাকবে না, তাই 4G প্ল্যানের দাম বাড়িয়েই লাভবান হবে টেলিকম কোম্পানিগুলি

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, চলতি মাসে দেশের নির্বাচিত কয়েকটি শহরে জিও এবং এয়ারটেল ৫জি পরিষেবা চালু করলেও বর্তমানে কিন্তু সংস্থা দুটি ৫জি বিটা ট্রায়াল রান করাচ্ছে। ফলে সারা ভারত জুড়ে এই মুহূর্তে সংস্থাদ্বয়ের নেট পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। তদুপরি, যে শহরগুলিতে কোম্পানি দুটি তাদের পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবা চালু করেছে, সেই সমস্ত শহরগুলির সব বাসিন্দারাও বর্তমানে ৫জি নেটওয়ার্কের অ্যাক্সেস পেতে সক্ষম হচ্ছেন না। তাই পুরোদমে সারা দেশে ৫জি পরিষেবা চালু করা না হলে টেলিকম কোম্পানিগুলি ৫জি প্ল্যানের সঠিক দাম নির্ধারণ করতে পারবে না বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

তদুপরি বিশেষজ্ঞদের মতে, সারা দেশে পুরোদমে ৫জি পরিষেবা চালু না হলে নেটওয়ার্কের ভালো কভারেজও পাওয়া যাবে না। তাই এই ‘রকেটের’ গতির নেট সার্ভিস ব্যবহারের আশায় বহুদিন ধরে আপামর দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকলেও হালফিলে ৫জি প্ল্যানের বিশেষ চাহিদা থাকবে না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ ইউজারই ৪জি রিচার্জ প্ল্যান ব্যবহার করবেন, আর সেই কারণেই ৪জি ট্যারিফ প্ল্যানের দাম বাড়িয়ে লাভবান হতে চাইছে টেলিকম কোম্পানিগুলি। তাই চলতি বছরের শেষের দিকে ARPU (ব্যবহারকারী পিছু গড় আয়) বাড়ানোর জন্য নিশ্চিতভাবে সংস্থাগুলি ৪জি প্ল্যানের দাম বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ARPU বাড়ানোর লক্ষ্যে এর আগেও বৃদ্ধি পেয়েছে 4G প্ল্যানের দাম

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই একাধিকবার বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলি চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে ৪জি ট্যারিফ প্ল্যানের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। আর সম্প্রতি ৫জি সার্ভিস রোলআউট হওয়ায় সত্যি সত্যিই একথা বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, ২০১৯ এবং ২০২১ সালের শেষেও নিজেদের ৪জি প্রিপেইড প্ল্যানের দাম বাড়িয়েছিল টেলিকম সংস্থাগুলি। আর একথা নিশ্চয়ই সকলেরই মনে আছে যে, গত বছরের শেষের দিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় তিনটি বেসরকারি কোম্পানি (রিলায়েন্স জিও, এয়ারটেল, এবং ভোডাফোন আইডিয়া বা ভিআই) তাদের প্রিপেইড রিচার্জ প্ল্যানগুলির দাম ২০%-২৫% পর্যন্ত বাড়িয়ে বেশ ভালোরকমের চাপ সৃষ্টি করেছিল আমজনতার পকেটে। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের শেষেও ফের একই ছবিই দেখা যাবে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।

আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, গত বছরের শেষের দিকে Airtel-ই সর্বপ্রথম তাদের 4G ট্যারিফ প্ল্যানের দাম বাড়ায়। সেক্ষেত্রে এ বছরও সংস্থাটি সেরকম কিছুই করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, Vi-ও তাদের দীর্ঘদিনের আর্থিক দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে এরকম কোনো পন্থাই অবলম্বন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে যে, Airtel তাদের ২০০ টাকার ARPU-কে বেশ খানিকটা বাড়াতে চায়, আর স্পষ্টতই 4G প্ল্যানের দাম বাড়ালে তবেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভবপর হবে। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে Airtel এবং Jio উভয়েরই ১৯০ ও ১৮০ টাকার কাছাকাছি ARPU রয়েছে। তবে এদের তুলনায় Vi অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে, কারণ তাদের ARPU এখনও ১৫০ টাকায়ও পৌঁছোতে পারেনি। সবমিলিয়ে, অদূর ভবিষ্যতে 4G এবং 5G প্ল্যানের হালহকিকত ঠিক কীরকম হবে, তার উত্তর একমাত্র সময়ের কাছেই রয়েছে। তাই এর দাম সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার জন্য আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।