সুদিন ফিরছে BSNL-এর, ঘুরে দাঁড়ানোর নিশ্চিত জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

বিগত কয়েক বছরে একের পর এক লোকসানের মুখে পড়েছে BSNL, তবে আর নয়! শীঘ্রই সংস্থাটি বহু প্রতীক্ষিত 4G পরিষেবা লঞ্চ করবে, ফিরবে তাদের সুদিনও।

বিগত কয়েক মাসে নিজের পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে অনেকটাই সজীব হয়েছে BSNL বা Bharat Sanchar Nigam Limited। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি অবশেষে 4G পরিষেবা লঞ্চ করার একেবারে অন্তিম পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, আগের চেয়ে ভালো হয়েছে তাদের নেটওয়ার্ক কভারেজও। তাছাড়া মূল্যবৃদ্ধির এই বাজারে তারা অত্যন্ত সস্তায় রিচার্জের বিকল্প প্রদান করে গ্রাহকদের খানিকটা দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও সক্ষম হয়েছে। এমতাবস্থায় BSNL-এর সুদিন যে সত্যিই ফিরছে, সে বিষয়ে আবারও জোরালো সম্ভাবনার কথা প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। গতকাল মানে বুধবার একটি ঘোষণায় বৈষ্ণব বলেছেন যে, এই বছরের শেষদিকে অক্টোবর বা নভেম্বরের মধ্যে সংস্থার গ্রাহক সংখ্যা কমতে থাকার সমস্যা একেবারে খতম হয়ে যাবে। তাঁর মতে, এই কয়েকদিনে BSNL বেশ খানিকটা ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছে, সেক্ষেত্রে একবার সংস্থার 4G এবং 5G নেটওয়ার্ক রোলআউট হয়ে গেলে তারা গ্রাহক হারানো বন্ধ করবে।

ইউজারবেসে পতন BSNL-এর বড় সমস্যা

বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিএসএনএল তার ইউজারবেস ধরে রাখতে বা গ্রাহক সংখ্যা বজায় রাখতে গিয়ে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। ক্রমাগত সংস্থাটিকে, প্রাইভেট টেলিকম অপারেটরদের কাছে পরাস্ত হতে দেখা গেছে। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI)-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ মাসে মোবাইল সেগমেন্টে বিএসএনএলের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১০৩.৬৮ মিলিয়ন, যার কারণে এটি মাত্র ৯.২৭ শতাংশ মার্কেট শেয়ার অর্জন করে। এদিকে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থায় দাঁড়ায় প্রাইভেট টেলকোগুলি – ওই সময় রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio), ভারতী এয়ারটেল (Bharati Airtel) এবং ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea)-র সম্মিলিত মার্কেট শেয়ার ছিল ৯০.৭৩ শতাংশ। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ২০২৩ সালের মার্চ মাসেই বিএসএনএল ৫০,০০০-এরও বেশি গ্রাহক হারিয়েছিল বলে জানা যায়। এমনকি ওয়্যারলাইন সেক্টরেও তাদের পরিস্থিতি খুব একটা আলাদা নয়।

চলতি বছরেই ঘুরে দাঁড়াবে BSNL

ইন্ডাস্ট্রি অ্যানালিস্টরা বিএসএনএলের সংগ্রামের কারণ হিসেবে ৪জি নেটওয়ার্কের অভাবকেই দায়ী করেছেন। আর এমনটা হলে সংস্থার অবস্থা বদলাতে যে বেশিদিন নেই, এমনটা আশা করাই যায়। এর আগে টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, ৮৯,০৪৭ কোটি টাকার তৃতীয় রিলিফ প্যাকেজ ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন যে, সরকারি সংস্থাটি শীঘ্রই বেসরকারী টেলিকম অপারেটরদের সাথে কঠোর প্রতিযোগিতায় নামবে। আবার কিছু সপ্তাহ আগে তিনি জানান, বিএসএনএল, ৪জি নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজের শেষধাপে পৌঁছেছে যেখানে তিন মাসের ট্রায়াল পিরিয়ডের পরে প্রতিদিন গড়ে ২০০টি করে টাওয়ার বসানো হবে৷ সবমিলিয়ে বলা যায়, খুব তাড়াতাড়ি সংস্থাটি ৪জি চালু করবে এবং এতে করেই তাদের সুদিন ফিরবে।

কার্যত এমনই আভাস দিয়ে বৈষ্ণব, বিএসএনএলের কিছু উন্নতির কথাও তুলে ধরেছেন। সম্প্রতি তিনি বলেন যে, বিএসএনএল, প্রতি মাসে ১ লাখেরও বেশি নতুন কানেকশন প্রদান করছে। গত মে মাসে তাদের মোট হোম ফাইবার গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০.৮৮ লাখে। নিঃসন্দেহে এ এক ইতিবাচক দিক!

MTNL-এর কাজ সামলাবে BSNL

সম্প্রতি সরকার, ঋণগ্রস্ত এমটিএনএল (MTNL) বা মহানগর টেলিকম নিগম লিমিটেডকে বন্ধ করে তার সমস্ত পরিষেবা বা কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব বিএসএনএলের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে দিল্লি এবং মুম্বাইয়ের মতো বড় শহরগুলিতে পরিষেবা দিতে শুরু করলে বিএসএনএলের শক্তি আরও বাড়বে। এইসব জায়গায় সংস্থাটি আগামী এক বছরের মধ্যে ৪জি, ৫জি নেটওয়ার্ক লঞ্চ করবে বলে জানা গিয়েছে।