মিশে যাচ্ছে BSNL ও MTNL, প্রস্তুতি শুরু ভারত সরকারের

একীভূতকরণের প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে MTNL -কে প্রথমে ফরেন এক্সচেঞ্জের থেকে বাদ দেওয়া হবে

২০১৯ সালে ‘ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড’ (BSNL) এবং ‘মহানগর টেলিফোন নিগম লিমিটেড’ (MTNL) টেলিকম সংস্থা দুটির একীভূতকরণে অনুমোদন দিয়েছিল ভারত সরকার৷ কিন্তু কিছু আইনি সমস্যা এবং BSNL -এর কাঁধে চেপে থাকা ঋণের কারণে এই পরিকল্পনা পিছিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এসে কেন্দ্রীয় সরকার MTNL -কে BSNL -এর সাথে একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল। আর এই মার্জিং প্রক্রিয়ার সুবিধার্থে, স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে MTNL সংস্থাকে ডিলিস্ট করার প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র।

ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস প্রদত্ত একটি লেটেস্ট রিপোর্ট অনুসারে, একীভূতকরণের প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে MTNL -কে প্রথমে ফরেন এক্সচেঞ্জের থেকে বাদ দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত আপনাদের জানিয়ে রাখি, MTNL প্রথম ২০০১ সালে ‘নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ’ (NYSE) -এ তাদের আমেরিকান ডিপোজিটরি শেয়ার (ADSs) তালিকাভুক্ত করে। যদিও কিছু সময় পর সংস্থাটি শেয়ার সরিয়ে নেয় NYSE থেকে। আর ২০১৩ সালে OTCQX আন্তর্জাতিক বাজারে MTNL -এর শেয়ার তালিকাভুক্ত করা হয়। যাইহোক, পরবর্তী ধাপে MTNL -এর যাবতীয় শেয়ার ভারতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ থেকেও ডিলিস্ট করা হবে।

BSNL এবং MTNL সংস্থা দুটির একীভূত হতে প্রায় দু’বছর সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত প্ল্যান অনুসারে, অপারেশনাল বিজনেসের মার্জিং প্রক্রিয়ার মধ্যে – ওয়্যারলাইন, ওয়্যারলেস এবং এন্টারপ্রাইজ বিজনেস সহ MTNL -এর টেলিকম ব্যবসার পরিচালন সম্পদ বা অপারেশনাল অ্যাসেট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার MTNL সংস্থার ৯০% শেয়ার অধিগ্রহণ করবে বলেও জানতে পেরেছি আমরা৷

মার্জিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য MTNL -কে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হবে

‘মহানগর টেলিফোন নিগম লিমিটেড’ বা MTNL এর একীভূতকরণের পরিকল্পনার কে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হবে। যার মধ্যে, প্রথমটিতে MTNL -এর অপারেশন, স্টাফ এবং অপারেশনাল অ্যাসেট থাকবে। দ্বিতীয় অংশে, MTNL সংস্থার অন্যান্য অ্যাসেট এবং দায়-দায়িত্ব (liabilities) অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যার মধ্যে স্পেকট্রাম হোল্ড রাইটও সামিল রয়েছে। তৃতীয় সেগমেন্টে, MTML -এর যাবতীয় অপরেশন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তদুপরি জানা যাচ্ছে, MTNL -এর দায়-দায়িত্ব এবং ঋণের বোঝা BSNL -এর কাছে স্থানান্তর করা হবে না।

এই বিষয়ে একজন সরকারী আধিকারিক মন্তব্য করেছেন যে, “BSNL, MTNL -এর কর্মী, অপরেশনাল অ্যাসেট এবং সংস্থার মরিশাসের অপরেশন (কার্যক্রম) গ্রহণ করবে। অন্যদিকে, MTNL স্পেকট্রাম সহ অন্যান্য অ্যাসেট এবং দায়-বদ্ধতা নিজ অধিকারে রাখবে।” অতএব, এই বিবৃতি থেকে BSNL যে MTNL -এর কাছে উপলব্ধ স্পেকট্রাম নিজেদের দখলে নেবে না এটা নিশ্চিত।

প্রসঙ্গত গত বছরের জুলাই মাসে, BSNL এবং MTNL -কে সহায়তা করার জন্য মন্ত্রিসভা ১.৬৪ লাখ কোটি টাকার একটি রিভাইভাল (পুনরুজ্জীবন) প্যাকেজ অনুমোদন করেছিল। আর এরও পূর্বে অর্থাৎ ২০১৯ সালে ৬৯,০০০ কোটি টাকার রেসকিউ প্ল্যানও পাস করানো হয়েছিল। এইসকল সরকারি অনুদানের সাহায্যেই BSNL সম্প্রতি ‘টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস’ বা TCS সংস্থার সাথে হাত মিলিয়ে পাঞ্জাবের ২০০টি সাইটে ৪জি (4G) পরিষেবা চালু করার কাজ শুরু করেছে। এর জন্য ইতিমধ্যেই সরঞ্জাম পাওয়াও শুরু করে দিয়েছে টেলিকম সংস্থাটি। আর যদি সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক চলে, তাহলে এপ্রিল মাসে পাঞ্জাবের আরো কয়েকটি নতুন স্থানে ৪তম মোবাইল সেলুলার নেটওয়ার্ক চালু করার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলেও দাবি করেছে BSNL কর্তৃপক্ষ।