Bharat Sanchar Nigam Limited: সমস্ত সার্কেলে ভালো পরিষেবা দিতে তৎপর BSNL, কড়া চিঠি চেয়ারম্যানের

সরকারি অনুদান পাওয়া সত্ত্বেও কেন এই দুরাবস্থা? এ ব্যাপারে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে BSNL-কে

বিগত কয়েক বছরের ব্যবসায়িক খরা কাটিয়ে পুনরায় টেলিকম দুনিয়ায় কামব্যাক করার জন্য হালফিলে রীতিমতো উঠেপড়ে লেগেছে Bharat Sanchar Nigam Limited বা BSNL। একটি সফল ব্যবসা গড়ে তুলতে এখন একেবারে বদ্ধপরিকর সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিটি। তাই বর্তমানে যে সকল সার্কেলগুলি ভালোভাবে পারফর্ম করছে না, তাদের বিরুদ্ধে সংস্থাটি বেশ কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইদানীংকালে ১৩ টিরও বেশি টেলিকম সার্কেলের খোঁজ মিলেছে, যেখানে রাজস্বের বেশ উল্লেখযোগ্য ঘাটতি লক্ষ্য করেছে BSNL। তাই রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর (সিএমডি) পি কে পুরওয়ার (P.K. Purwar) সম্প্রতি এই সমস্ত সার্কেলের চিফ জেনারেল ম্যানেজারদেরকে (সিজিএম) চিঠি লিখে অবিলম্বে জায়গাগুলির ফাইন্যান্সিয়াল পারফরম্যান্সকে আরও উন্নত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

নন-পারফর্মিং সার্কেল আর কোনোমতেই বরদাস্ত করবে না BSNL

ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস (Financial Express)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গত এক বছরে তিনটি সার্কেল ক্রিটিক্যাল নেগেটিভ ক্যাটাগরিতে, পাঁচটি সার্কেল উল্লেখযোগ্যভাবে নেগেটিভ ক্যাটাগরিতে এবং পাঁচটি সার্কেল বর্ডারলাইন নেগেটিভ ক্যাটাগরিতে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে আগামী দিনে টেলিকম সংস্থাটির ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য অবিলম্বে এই সকল সার্কেলগুলিকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, অন্তত পুরওয়ারের লেখা কড়া চিঠিগুলিতে সার্কেলগুলির সিজিএমদেরকে এরকমই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি অনুদান পাওয়া সত্ত্বেও কেন এই দুরাবস্থা? এ ব্যাপারে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে BSNL-কে

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিএসএনএলের জন্য ১.৬৪ লক্ষ কোটি টাকার পুনরুজ্জীবন প্রকল্প অনুমোদন করেছেন। এছাড়াও, নানা ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সংস্থাটিকে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী দেবুসিংহ চৌহান (Devusinh Chauhan) জানিয়েছেন যে, এই পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের সৌজন্যে ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড নিট মুনাফা অর্জন করে ২০২৭ অর্থবর্ষের মধ্যে নিশ্চিতভাবে লাভবান হবে। এর পাশাপাশি ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএনএলকে আরও দুটি ত্রাণ প্যাকেজ দিয়েছিল। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও সংস্থাটি কেন আপামর দেশবাসীকে উন্নত মানের টেলিকম পরিষেবা দিতে পারছে না, সে ব্যাপারে বিএসএনএলকে অবশ্যই কেন্দ্রের কাছে জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw)।

বৈষ্ণব আরও বলেছেন যে, বেসরকারি কোম্পানিগুলিকে জোর টক্কর দিয়ে যাতে টেলিকম দুনিয়ায় বিএসএনএল কামব্যাক করতে পারে, সেজন্য সংস্থাটিকে যথাসাধ্য সাহায্য করছে সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও সংস্থাটি যেহেতু গ্রাহকদেরকে যথাযথ পরিষেবা দিতে পারছে না, তাই এবার অবিলম্বে কেন্দ্রকে কঠোর পদক্ষেপ নিতেই হবে। তার কথায়, আগামী দিনে যদি দেখা যায় যে সংস্থার কোনো কর্মচারী ভালোভাবে কাজ করছেন না, তাহলে তাকে অবিলম্বে কোম্পানি থেকে বহিষ্কার করা হবে। অর্থাৎ সহজে বললে, সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম সংস্থাটির হাল ফেরাতে বর্তমানে বিএসএনএল এবং কেন্দ্র যে একযোগে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে, সেকথা বলাই বাহুল্য।

২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে 4G লঞ্চ করবে BSNL

যদিও ইতিমধ্যেই প্রাইভেট টেলিকম সংস্থাগুলি এদেশে 5G চালু করেছে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বহু চেষ্টা করা সত্ত্বেও BSNL এখনও পর্যন্ত 4G-ই লঞ্চ করে উঠতে পারেনি। তবে এই মুহূর্তে পাওয়া খবর অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি ভারতে 4G চালু করার পরিকল্পনা করেছে। উল্লেখ্য যে, দেশীয় প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে গোটা দেশে 4G চালু করতে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস বা টিসিএস (TCS) এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ টেলিম্যাটিক্স (C-DoT)-এর সাহায্য নিচ্ছে BSNL। আবার এও শোনা গিয়েছে যে, ২০২৩-এ 4G চালু হলেই পরের বছর সম্ভবত লঞ্চ হবে BSNL-এর 5G। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, পূর্বে সংস্থার 4G রোলআউটের একাধিক দিনক্ষণ প্রকাশ্যে আসলেও বিভিন্ন কারণে প্রতিবারই তা পিছিয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে এবার সত্যি সত্যিই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম কোম্পানিটির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে কি না, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।