Bharat Sanchar Nigam Limited: লাইভ নেটওয়ার্কে স্বদেশী 4G টেকনোলজি পরীক্ষা করতে চলেছে BSNL

বহু চেষ্টা এবং পরিকল্পনা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত এদেশে 4G পরিষেবা রোলআউট করে উঠতে পারেনি সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানি Bharat Sanchar Nigam Limited বা BSNL। তবে খুব শীঘ্রই ভারতে 4G এবং সেইসাথে 5G সার্ভিস আনার জন্য চলতি সময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে সংস্থাটি। দেশীয় প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে গোটা দেশে 4G চালু করতে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস বা টিসিএস (TCS) এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ টেলিম্যাটিক্স (C-DoT)-এর সাহায্য নিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম কোম্পানিটি। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি পাওয়া খবর অনুযায়ী, আগামী মাস থেকেই ৫০ টি রেডিও ইউনিট নিয়ে লাইভ নেটওয়ার্কে স্বদেশে তৈরি সলিউশনটির টেস্টিংয়ের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করেছে BSNL।

স্ট্যাটিক নেটওয়ার্কে ইকুইপমেন্ট টেস্ট করা হয়েছে

আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ টেলিম্যাটিক্সের (সি-ডট) সহযোগিতায় তৈরি এই সরঞ্জামটিকে ইতিমধ্যেই স্ট্যাটিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে টেস্ট করা হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে যে এটি একযোগে এক কোটি কল হ্যান্ডেল করতে সক্ষম। ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, লাইভ নেটওয়ার্কে সফলভাবে টেস্টিংপর্ব সম্পন্ন হলেই সারাদেশে এই টেকনোলজি রোলআউট করা শুরু হবে।

সূত্র মারফত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, টিসিএস বিএসএনএলকে জানিয়েছে যে, তারা রেডিও ইকুইপমেন্ট উৎপাদনের জন্য কমপক্ষে তিনটি চুক্তিভিত্তিক নির্মাতাদের সাথে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যাতে রোলআউট হওয়ার পরে সারাদেশে সাবলীলভাবে তথা নির্বিঘ্নে এই সার্ভিস প্রদান করা যায়৷ এছাড়াও, তেজস নেটওয়ার্কস (Tejas Networks) স্থানীয়ভাবে নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিএসএনএলের ১,০০,০০০ টি ৪জি সাইট লঞ্চ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যার জন্য ১৫,০০০-১৬,০০০ কোটি টাকা খরচ হবে।

BSNL-এর 4G রোলআউটে কেন এত বিলম্ব হচ্ছে?

উল্লেখ্য, বহুবার বিএসএনএলের ৪জি রোলআউটের দিনক্ষণ প্রকাশ্যে এলেও বিভিন্ন কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছে। এর মূল কারণ হিসেবে অনেকে মনে করছেন যে, যেহেতু দেশীয় প্রযুক্তিতে সংস্থাটি এই পরিষেবা নিয়ে আসতে চাইছে, তার জন্যই মূলত দেরি হচ্ছে। এছাড়া, বিলম্বের আর-একটি কারণ হল টাকা। কারণ ভারতে সংস্থার উক্ত পরিষেবার আগমনের জন্য যে টাকার প্রয়োজন, তা বিএসএনএলের কাছে মজুত নেই বলে পূর্বে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি ১,০০,০০০ টি ৪জি সাইট লঞ্চ করার জন্য সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানিটি ১৫,০০০-১৬,০০০ কোটি টাকা হাতে পেয়ে গিয়েছে বলে খবর মিলেছে। তাই দেশীয় প্রযুক্তিতে ৪জি এবং ৫জি পরিষেবা রোলআউট করার ক্ষেত্রে সংস্থাটিকে ভবিষ্যতে আর কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।

BSNL-এর 4G রোলআউট হলে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নতির এক চরম শিখরে পৌঁছোবে ভারত

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, বর্তমানে বিশ্বের মাত্র পাঁচটি দেশে এন্ড-টু-এন্ড (অর্থাৎ একেবারে নিজস্ব) 4G এবং 5G প্রযুক্তি বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে BSNL-এর 4G নেটওয়ার্ক সফলভাবে চালু হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের মতো দেশগুলির সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারবে ভারত। উল্লেখ্য, দেশীয় প্রযুক্তিটিকে কেন্দ্র করে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ যেহেতু অনেকটাই এগিয়ে গেছে, তাই 4G রোলআউট হলে তার কিছুদিন পরেই এদেশে BSNL-এর 5G পরিষেবার আগমন ঘটবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, সংস্থার 4G সার্ভিসের জন্য তো আপামর জনগণ দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেই রয়েছেন; তবে চলতি সময়ে যেহেতু বেসরকারি কোম্পানিগুলি এদেশের একাধিক শহরে 5G পরিষেবা রোলআউট করে ফেলেছে, তাই সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানিটির পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সার্ভিসের মুখ দেখার জন্যেও হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন অনেকেই। সেক্ষেত্রে এবার কবে নিশ্চিতভাবে এদেশে BSNL-এর 4G এবং 5G পরিষেবার আবির্ভাব ঘটবে, তার উত্তর একমাত্র সময়ের কাছেই রয়েছে।