Independence Day: কিছুদিনের মধ্যে দেশে চালু হবে 5G, কয়েক দশক আগে কেমন ছিল মোবাইল পরিষেবা?

এই বাজারে মোবাইল সিমে ৯৯ টাকার বেসিক রিচার্জ করতেই আমাদের বড্ড গায়ে লাগে! তবুও দিনের পর দিন দেশীয় টেলিকম কোম্পানিগুলি ট্যারিফ শুল্ক বাড়িয়ে চলেছে। কিন্তু যদি এই পরিস্থিতিতে যদি আপনাকে বলা হয় একটি প্রিপেইড সিম কার্ডের জন্য ৪,৯০০ টাকা খরচ করতে এবং তারপর আপনি প্রতি মিনিটে ১৭ টাকা হারে ইনকামিং বা আউটগোয়িং কল করতে পারবেন – সেই অপশনকে কি আপনি স্বাগত জানাবেন? স্বাভাবিকভাবেই উত্তর ‘না’ হবে! সেক্ষেত্রে বলি, সিম কার্ড ব্যবহার বা ফোন করার জন্য এই খরচ অত্যন্ত বেশি মনে হলেও এবং সুদূর ভবিষ্যতে রিচার্জের বেনিফিট এই জায়গায় না পৌঁছালেও, একটা সময় ভারতের মানুষ টেলিকম পরিষেবার জন্য এত টাকাই ব্যয় করেছেন। সোজা ভাষায় বললে, আনলিমিটেড কল এবং 4G (৪জি) ডেটার সুবিধা পেতে আমাদের যে দাম চোকাতে হচ্ছে, তার চেয়ে কম সুবিধার বিনিময়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ করেছে আমাদের আগের প্রজন্ম। আজ যেমন ভারতের স্বাধীনতা লাভের ৭৫তম বর্ষপূর্তি, তেমনি ডিজিটাল ইন্ডিয়ার জন্য মোবাইল পরিষেবার শুরু বা বিবর্তনের পেছনে আছে বিশাল ইতিহাস।

আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার ভারত

এই মুহূর্তে দেশের বেশিরভাগ মানুষের হাতেই একটি স্মার্টফোন দেখা যাবে, ভারত এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার। কিন্তু এই উন্নতির ছবিটা একদিনে বা সহজে গড়ে ওঠেনি। স্বাধীনতার পর বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে ভারতের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কীভাবে এদেশে মোবাইল পরিষেবার অভিষেক হল, আর কীভাবেই স্মার্টফোনের কারণে বিশ্ববাজারে জায়গা করে নিল ভারত? চলুন দেখে নেওয়া যাক এই যাত্রা। 

ভারতের প্রথম মোবাইল কল সম্পন্ন হয় পশ্চিমবঙ্গে

টেলিফোন আবিষ্কারের ৭ বছরের মধ্যেই কলকাতা, মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই) এবং বম্বে (মুম্বাই)-এ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ স্থাপন করা হয়। বলতে গেলে, বিংশ শতাব্দীতেই এদেশে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা উপলব্ধ হয়। তবে এখানে মোবাইল পরিষেবা চালু হয়েছে স্বাধীনতার বহু বছর পর। ১৯৯৫ সালে অর্থাৎ ওই শতাব্দীর প্রায় শেষ দিকে ভারতে জিএসএম (GSM) বা গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন পরিষেবা শুরু হয়। আর এই পরিষেবার অধীনে নোকিয়ার (Nokia) হ্যান্ডসেট থেকে প্রথম কল (পড়ুন ভারতে প্রথম মোবাইল কল) করেন তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। ওইসময় বসু, কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী সুখরামের সাথে কলে কথা বলেন।

সেক্ষেত্রে আজ আমরা ৫জি (5G) নেটওয়ার্ক চালুর অপেক্ষা করলেও, ওই সময় প্রথম জিএসএম কল একটি ইতিহাস গড়েছিল। তবে তখন মানুষের হাতে এখনকার মত চমকপ্রদ ফোন থাকত না, এগুলি ছিল ইঁটের মত এবং ভারী। স্বাভাবিকভাবেই এই ফোনগুলির সাথে কোনো ল্যান্ডলাইন বাধ্যতামূলক ছিল না।

CDMA-এর হাত ধরে শুরু হয় টেলিকম পরিষেবার পরিবর্তন

২০০২ সালে সিডিএমএ (CDMA)-এর হাত ধরে এদেশে টেলিকমিউনিকেশনের দ্বিতীয় প্রজন্ম শুরু হয়। সিডিএমএ প্রবর্তনের সাথে সাথে ফিচার ফোন বাজারে আসে, আর এই সময় থেকে পরবর্তী বহু বছর পর পর্যন্ত ভারতের বাজারে নোকিয়া ফিচার ফোন বিক্রিতে আধিপত্য কায়েম করে। এরপর, ২০০৪ সালে দেখা যায় ল্যান্ডলাইন গ্রাহকদের চেয়ে মোবাইল ফোন কানেকশনের সংখ্যা সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ব্যস এখান থেকেই শুরু হয় নতুন যুগ – সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বাজারে আসে ৩জি (3G) এবং ৪জি নেটওয়ার্ক, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ ফিচার ফোন থেকে টাচ স্ক্রিন মোবাইল হয়ে স্মার্টফোন ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন!