স্পোর্টস বাইকপ্রেমীদের জন্য সুখবর, নতুন চেহারায় Honda CBR150R ভারতে ফিরছে, জোর টক্কর Yamaha R15-এর সঙ্গে

Honda CBR150R নতুন চেহারায় ভারতে ফিরছে। হন্ডা এই বিষয়ে খোলাখুলি কিছু না বললেও তাদের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ সে দিকেই তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা বহন করছে। ২০১২ সালে হন্ডার ওই এন্ট্রি লেভেল ফুল-ফেয়ার্ড স্পোর্টস বাইক দেশের বাজারে আত্মপ্রকাশ করেছিল। কিন্তু আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ার কারণে ২০১৭ সালে Honda CBR150R ভারত থেকে বিদায় নেয়। তবে হন্ডা তাদের ১৫০ সিসির স্পোর্টস বাইকটিকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় নতুন ইনিংসে গড়ার পরিকল্পনা করছে।

ন’মাস আগে Honda CBR150R-এর ডিজাইন পেটেন্ট করার জন্য আবেদন করেছে সংস্থার ভারতীয় শাখা। এবং সেটা জানুয়ারিতে জার্নালে নথিভুক্ত হয়েছে। ডিজাইন দেখে অনুমান বর্তমানে, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান, মালয়েশিয়ার বাজারে বিক্রিত ও দারুণ জনপ্রিয় নতুন প্রজন্মের Honda CBR150R মডেলটি ভারতে আনার চিন্তাভাবনা চলছে।

এখন বাজেট রেঞ্জে কম ক্যাপাসিটির ইঞ্জিনযুক্ত পারফরম্যান্স নির্ভর মোটরসাইকেল তরুণ প্রজন্মের প্রথম পছন্দ। পকেটে অত্যাধিক চাপ পড়বে না কিন্তু গতি বা থ্রিলের সাথেও কোনও আপোস হবে না, এই ফর্মুলাতেই বাজিমাত করেছে চতুর্থ প্রজন্মের Yamaha R15 V4। আর সত্যি কথা বলতে গেলে, ১৫০ সিসির স্পোর্টস বাইক সেগমেন্টে R15 V4-কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে এমন বুকের পাটা কারোর নেই। এটি ডিজাইন, প্রযুক্তি, পাওয়ার সব দিক থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে এগিয়ে। তবে Honda CBR150R লঞ্চ হলে R15 V4 কঠিক প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

হন্ডা সিবিআর১৫০আর ডিজাইন (Honda CBR150R Design)

বর্তমান প্রজন্মের হন্ডা সিবিআর১৫০আর মডেলে ডিজাইনের নিরিখে আরও পাওয়ারফুল সিবি৫০০আর এবং সিবি৬৫০আর-এর অনুপ্রেরণা স্পষ্ট। বাইকটিতে অ্যারোডায়নামিক বডি প্যানেল রয়েছে। সামনে এলইডি হেডল্যাম্প এবং এলইডি ডিআরএল আছে। কম্প্যাক্ট উ উইন্ডস্ক্রিন, স্পোর্টি রিয়ার ভিউ মিরর, লো-সেট ওয়াইড হ্যান্ডেলবার, এবং স্টেপ-আপ সিটের সাথে এসেছে নতুন হন্ডা সিবিআর১৫০আর।

বাইকটির সাইড প্যানেলগুলি শুধুমাত্র নজর কাড়ার জন্য ডিজাইন করা হয়নি। দ্রুতগতিতে চলার সময়ে হাওয়ার বাঁধা যাতে সহজেই এড়াতে পারে, সে জন্য বুদ্ধিমত্তার সাথে সেগুলির নকশা করা। বীপরিতধর্মী কালার শেড এবং স্টাইলিশ গ্রাফিক্স হন্ডা সিবিআর১৫০আর বাইকের স্পোর্টি প্রোফাইলকে আরও উন্নত করেছে।

মালয়েশিয়ায় হন্ডা সিবিআর১৫০আর ছ’টি এবং ইন্দোনেশিয়ায় দু’টি কালার অপশনে উপলব্ধ। তার মধ্যে মোটোজিপি এডিশনের পাশাপাশি হন্ডা রেসিং রেড, ডমিনেটর ম্যাট ব্ল্যাক উল্লেখযোগ্য। হন্ডা সিবিআর১৫০আর ভারতে ভিন্ন পেইন্ট অপশনে লঞ্চ হবে বলে আশা করা যায়, যা আর্ন্তজাতিক মডেলে অনুপস্থিত।

হন্ডা সিবিআর১৫০আর স্পেসিফিকেশনস ও ফিচার্স (Honda CBR150R Specifications and Features)

ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে, হন্ডা সিবিআর১৫০আর একটি ১৪৯.২ সিসি লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত। এটি ৯,০০০ আরপিএমে ১৭.১ পিএস পাওয়ার এবং ৭,০০০ আরপিএমে ১৪.৪ এনএম টর্ক উৎপন্ন করার সক্ষমতা রাখে। প্রসঙ্গত, ইয়ামাহা আরওয়ান ফাইভ-এর আউটপুট ১৮.৪ পিএস ও ১৪.২ এনএম। অর্থাৎ সিবিআর১৫০আর পাওয়ারে পিছিয়ে থাকলেও টর্ক সামান্য বেশি। আবার আরওয়ান ফাইভ-এর মতো এতেও সিক্স-স্পিড গিয়ারবক্সের সাথে অ্যাসিস্ট ও স্লিপার ক্ল্যাচ পাওয়া যায়।

Honda CBR150R বাইকে ডায়মন্ড ফ্রেম ব্যবহার করা হয়েছে। সাসপেশনের জন্য সামনে সোনালী রঙের ইউএসডি ফর্ক এবং পিছনে মনোশক আছে। দু’টি চাকায় একটি করে ডিস্ক ব্রেক দেওয়া হয়েছে৷ ডুয়েল চ্যানেল এবিএস অপশনাল হিসাবে রয়েছে।

খাতায়-কলমে Yamaha R15 V4 এবং Honda CBR150R প্রায় সমান সমান বলা চলে। তবে Yamaha R15-এর নতুন মডেল ইতিমধ্যেই তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে। বাইকটির দাম ১.৭২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ১.৮২ লাখ (এক্স-শোরুম) পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে Honda CBR150R-এর মূল্য ১.৭০ লাখ থেকে ১.৮০ লাখের মধ্যে রাখতে পারলে ইয়ামাহাকে টক্কর দেওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। বাইকটি সত্যি সত্যিই ভারতে লঞ্চ হলে ইয়ামাহার আধিপত্যে থাবা বসাতে পারবে কিনা, তা এখন সময়ই বলবে।