দিগ্বেশ রাঠীর নোটবুক সেলিব্রশন শুধু উদযাপন নয়, গরীব পরিবারের লড়াইয়ের ইতিহাসও

এবারের আইপিএলে উইকেট নেওয়ার পর এক অভিনব সেলিব্রেশনে মাততে দেখা যাচ্ছে লখনউ সুপার জায়ান্টসের স্পিনার দিগ্বেশ রাঠীকে, যিনি নোটবুক খুলে কিছু লিখে রাখার ভঙ্গিমা প্রদর্শন করছেন। এই ‘নোটবুক সেলিব্রেশন’ দর্শকদের মাঝে যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনই বোর্ডের নজরেও পড়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ইতিমধ্যেই কাটা গেছে তার ম্যাচ ফি।
তবু দিগ্বেশ কেন এই সেলিব্রেশন চালিয়ে যাচ্ছেন? ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে তার দাদা সানি রাঠী জানিয়েছেন, “আমি দিগ্বেশকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে বলেছে এই সেলিব্রেশন ওকে অনুপ্রাণিত করে। ভালো খেলায় উদ্দীপ্ত করে। আমি ওকে শুধু বলেছি, নিজের আনন্দের জন্য করো, তবে কখনও কারও অপমান করো না।”
দিল্লির সন্তান দিগ্বেশের ক্রিকেট যাত্রা সহজ ছিল না। বিভিন্ন স্থানীয় ক্লাবের হয়ে খেলতেন তিনি। এক ক্লাব ম্যাচে তার প্রতিভা চোখে পড়ে প্রাক্তন ভারতীয় উইকেটরক্ষক বিজয় দাহিয়ার। এরপরই মোরি গেট অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন দিগ্বেশ। এর আগে পীরাগরি এলাকার এক অ্যাকাডেমিতে দুই বছর ধরে তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল, মাঠে নামানো হয়নি একবারও।
২০২৩ সালে দিল্লি প্রিমিয়ার লিগে দক্ষিণ দিল্লি সুপারস্টারজ়ের হয়ে ১৪ উইকেট নেন দিগ্বেশ। সেখান থেকেই সুযোগ আসে আইপিএলে, লখনউ সুপার জায়ান্টসে ৩০ লক্ষ টাকায় সই করেন তিনি।
দিগ্বেশের ডাক নাম ববি। তার বাবা ধর্মেন্দ্র তিন ছেলের নাম রেখেছেন বলিউডের ‘সানি, ববি, হ্যাপি’ – যেন এক সিনেমার গল্প। বড় ভাই সানি ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার, নিজে ক্রিকেট ছাড়লেও ভাইকে এগিয়ে দেন। বর্তমানে তিনি একজন পুলিশ কনস্টেবল।
পরিবারের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও দিগ্বেশের এই জায়গায় উঠে আসার নেপথ্যে রয়েছে আত্মত্যাগ, অধ্যবসায় এবং ভাইয়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। তার নোটবুক সেলিব্রশন তাই শুধু উদযাপন নয়, লড়াইয়ের ইতিহাসও।