ISRO: মহাকাশ গবেষণায় নতুন মাইলস্টোন ইসরোর, শনিবার লঞ্চ করছে পিএসএলভি-সি৫৪ মিশন

বহুদিন ধরে একাধিক নজিরবিহীন কান্ডকারখানা ঘটিয়ে মহাকাশ গবেষণায় একের পর এক মাইলস্টোন তৈরি করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (Indian Space Research Organisation) বা ISRO (ইসরো)।…

বহুদিন ধরে একাধিক নজিরবিহীন কান্ডকারখানা ঘটিয়ে মহাকাশ গবেষণায় একের পর এক মাইলস্টোন তৈরি করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (Indian Space Research Organisation) বা ISRO (ইসরো)। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি পাওয়া খবর অনুযায়ী, ওশানস্যাট-৩ (Oceansat-3) এবং ৮ টি ন্যানো স্যাটেলাইট সহ আগামী ২৬ নভেম্বর শ্রীহরিকোটা স্পেসপোর্ট থেকে পিএসএলভি-সি৫৪ / ইওএস-০৬ (PSLV-C54 / EOS-06) মিশন লঞ্চ করতে চলেছে ISRO। আগামী শনিবার সকাল ১১টা ৫৬ মিনিটে উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

কারা এই রকেটে চড়ে মহাকাশে যাচ্ছে?

রকেটটিতে থাকা যাত্রীদের সম্পর্কে ইসরোর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই (PTI)-কে জানিয়েছেন যে, ইওএস-০৬ (ওশানস্যাট-৩) এবং আটটি ন্যানো স্যাটেলাইট এই স্পেসক্র্যাফ্টে থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে ভুটানস্যাট (BhutanSat), পিক্সেল ইন্ডিয়া (Pixxel India) কর্তৃক বিকশিত আনন্দ (Anand), ধ্রুব স্পেস (Dhruva Space)-এর দুটি থাইবোল্ট (Thybolt) এবং স্পেসফ্লাইট ইউএসএ (Spaceflight USA) সংস্থার বানানো চারটি অ্যাস্ট্রোকাস্ট (Astrocast)।

এবার সমুদ্রের গভীরে খানাতল্লাশি করার দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এর আগে গত ৮ নভেম্বর ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং (Jitendra Singh) জানিয়েছিলেন যে, আগামী ২৬ নভেম্বর ওশানস্যাট-৩ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ভারত। তিনি আরও বলেন যে, বর্তমানে ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় ‘সামুদ্রিক নজরদারি’ (marine surveillance)-র ধারণাটিকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে, যেখানে নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সাথে নানাবিধ মূল্যবান ইনপুট শেয়ার করে নেওয়ার জন্য স্পেস অ্যাপ্লিকেশনও মোতায়েন করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, মি. সিং ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির প্রথম জয়েন্ট সোসাইটি মিটিংয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন। এই বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরোলজি (IITM), ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফর্মেশন সার্ভিসেস (INCOIS), ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্স স্টাডিজ (NCESS), ন্যাশনাল সেন্টার ফর পোলার অ্যান্ড ওশান রিসার্চ (NCPOR) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজি (NIOT)।

চন্দ্রযান, মঙ্গলযানের পর এবার সমুদ্রযান!

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ভারতে সম্প্রতি প্রথম মনুষ্যবাহী সমুদ্র মিশন ‘সমুদ্রযান’ (Samudrayaan Mission) লঞ্চ করা হয়েছে। মি. সিং এই প্রসঙ্গে বলেছেন যে, মহাকাশকে কেন্দ্র করে সরজমিনে তদন্ত তো বহুদিন ধরেই চালানো হচ্ছে, তবে অতল মহাসাগরের গহীনে যে রোজ কত নিত্যনতুন ঘটনা ঘটে চলেছে, সে সম্পর্কে বিশদে জানতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। এর ফলে একদিকে যেমন মহাকাশে খানাতল্লাশি চলবে, তেমনি অন্যদিকে গভীর সমুদ্রের অতলে লুকিয়ে থাকা যাবতীয় রহস্যও হাতের মুঠোয় এসে যাবে। এই মিশনের অধীনে মৎস্য ৬০০০ (MATSYA 6000) নামক একটি চমকপ্রদ সমুদ্রযান তৈরি করা হচ্ছে, যা গভীর সমুদ্রের গহীন তথ্য প্রকাশ্যে আনবে।

গভীর সমুদ্রের রহস্য ভেদ করতে এবার নতুন অভিযান হাতে নিয়েছে ভারত

বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিনজন মানুষ নিয়ে সমুদ্রের গভীরে যাবে MATSYA 6000। এই সমুদ্রযানটিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সেন্সর ও যন্ত্রপাতির পাশাপাশি সমুদ্রতলে খননকার্য চালানোর ব্যবস্থাও থাকবে। যেহেতু সমুদ্রের গভীরে জলের চাপ অত্যাধিক বেশি, তাই সেই চাপ সামলানোর জন্য যন্ত্রটিকে মজবুত করতে টাইটানিয়াম ব্যবহার করছেন প্রযুক্তিবিদরা। জানা গিয়েছে যে, এর সুবাদে ১২ ঘণ্টা জলের তলায় থাকতে পারবে যানটি; তবে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ৯৬ ঘণ্টা পর্যন্ত জলের নীচে থাকতে পারবে এই সমুদ্রযান। মি. সিং জানিয়েছেন যে, এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স ও চিন এই ধরনের গভীর সমুদ্রাভিযান করেছে, এবং আগামী দিনে সফলভাবে মিশন সম্পন্ন করতে পারলে ভারতও এই তালিকায় ঢুকে পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *