কিছুদিন আগে EVA নামক একটি সৌর চালিত গাড়ি বাজারে এনে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল পুনের এক কোম্পানি। এবার শ্রীনগরের বিলাল আহমেদ মীর নামে একজন গণিত শিক্ষক তিন বছরের কঠোর প্রচেষ্টার পর প্রকাশ্যে আনলেন কাশ্মীরের প্রথম সৌর চালিত গাড়ি “RAY”। এই গাড়ি কাশ্মীরে পরিবহন ব্যবস্থায় বিপ্লব আনবে বলে মনে করছেন তিনি। লক্ষণীয় বিষয় হল, গাড়িটি রাস্তায় চলাচলের জন্য প্রস্তুত বলে দাবি করেছেন বিলাল আহমেদ।
উন্নত দক্ষতা এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে একটি নতুন নকশা দেওয়া হয়েছে এই সৌর চালিত গাড়িতে। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে এই গাড়ি তৈরি যাত্রা শুরু করেন তিনি। বিলাল আহমেদ জানেন, “সব ধরণের আর্থিক সমস্যা সত্ত্বেও, আমি সম্পূর্ণ উদ্যোগটি নিজেই স্পন্সর করেছিলাম এবং এর জন্য প্রায় ২০-২২ লক্ষ টাকা খরচ করেছিলাম।”
এই গাড়ির বিশেষত্ব কী?
আপাতত গাড়িটির একটি প্রোটোটাইপ হাজির করেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, RAY হল ১ কিলোওয়াট সৌরশক্তিচালিত একটি গাড়ি, যাতে উন্নত সৌর প্যানেল, একটি উচ্চ প্রযুক্তির BMS (ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) এবং স্বয়ংক্রিয় পার্কিং সেন্সর রয়েছে। গাড়িটি চার্জ না করেই একটানা চলতে পারে। সর্বাধিক সূর্যলোক ধারণ করার জন্য রয়েছে এতে সেন্সর-অপ্টিমাইজড সোলার প্যানেল।
আরও পড়ুনঃ হিরো স্প্লেন্ডার বাইকের থেকেও নাকি ভালো! কী কারণে এত জনপ্রিয় হল Bajaj Platina
এই গাড়িটি বিলাল আহমেদ মীরের কাছে কোনও স্বপ্নের থেকে কম নয়, যাবাস্তবে রূপান্তরিত করতে ১৩ বছর ব্যয় করেছেন তিনি। ১৯৮৮ সালের নিসান মাইক্রা গাড়িকে রূপান্তরিত করে এই প্রোটোটাইপ তৈরি করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, যেখানে বেশিরভাগ বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জ দেওয়ার জন্য সূর্যালোকের প্রয়োজন হয়, সেখানে RAY মেঘলা, তুষারময় আবহাওয়াতেও নিজেকে চার্জ করতে পারে।
এই গাড়িতে রয়েছে ৫টি সিট, সৌরশক্তি এবং রিচার্জেবল ব্যাটারির সমন্বয়ে ডুয়াল ইলেকট্রিক সিস্টেম। পিছনের বুটের কাছে সুবিধাজনকভাবে অবস্থিত একটি চার্জিং পোর্ট। গাড়িটি ১০ ফেব্রুয়ারি বাজারে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং এই বছরের জুনের শেষ নাগাদ রাস্তায় নামানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
তাঁর লক্ষ্য হল সাধারণ মানুষের জন্য পরিষ্কার-শক্তির গাড়ি তৈরি করা। তিনি বলেন, “ভারতে আমার কোনও প্রতিযোগিতা নেই। বিদেশে, লাইটইয়ার এবং অ্যাপটেরা মোটরসের মতো কোম্পানি রয়েছে এবং আমি তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করছি।” তাঁর এই উদ্ভাবন ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পেয়েছে। তাঁর গবেষণা ৬টির বেশি দেশে প্রকাশিত হয়েছে।