বর্ষায় দিনভর বাইক চালিয়ে চেনের দফারফা, পরিষ্কার ঝকঝকে থাকবে এই টিপস মানলে

Published on:

How to clean Motorcycle Chain at Home in Monsoon

সূর্যদেবের অগ্নিবাণ পেরিয়ে এসে বৃষ্টিদেবের আশীর্বাদ এসে পড়ছে ভারতের সর্বত্র। উত্তরবঙ্গে বিগত ক’দিন ধরেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও আকাশের মুখ ভার। মাঝেমধ্যেই স্থানীয়ভাবে নামছে কয়েক পশলা বৃষ্টি। এই বৃষ্টির দিনে শহরে জমা জলের চিত্র আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে অভ্যস্ত। সেই কারণেই তার মধ্যে দিয়ে দৈনন্দিন কাজে বাইক ছোটাতে হলে এর চেনের অংশে জমা জলের ময়লা অতি সহজেই জমতে শুরু করে। এমনকি জলের অবিরাম স্রোতে ধুয়ে যায় চেনের তৈলাক্ত অংশ। সেই কারণেই মোটরসাইকেলের পারফরম্যান্স ঠিক রাখতে হলে বর্ষার দিনগুলিতে এই চেনের স্বাস্থ্যের দিকে একটু বেশি নজরদারি প্রয়োজন।

বৃষ্টির সময় ঘরে বসেই বাইকের চেনের যত্ন নিন এই সহজ কয়েকটি উপায় অবলম্বন করে-

প্রয়োজনীয় সামগ্রী একত্রিত করা

যে কোনো কাজের জন্যই প্রয়োজন হয় বিশেষ কিছু সামগ্রীরর। মোটরসাইকেলের চেইন পরিষ্কার করতে হলে প্রয়োজন পরিষ্কার কাপড়, চেন পরিষ্কার করার বিশেষ ব্রাশ, ক্লিনিং সলিউশন এবং চেনের লুব্রিকেন্ট। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি বাইকের চেন পরিষ্কার করার এই সমস্ত সামগ্রী আজকালকার দিনে অতি সহজেই বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে পাবেন আপনি।

সমতল জায়গায় বাইক পার্ক করা

চেন পরিষ্কার করার শুরুতেই আপনার মোটরসাইকেলটিকে একটি সমতল স্থানে ডবল স্ট্যান্ডের উপর রাখতে হবে। কোনো কোনো মডেলে ডবল স্ট্যান্ড ফিচার না থাকলে সেক্ষেত্রে প্যাড লক স্ট্যান্ড ব্যবহার করতে হবে। এর কারণ বাইকের চেন পরিষ্কার করার সময় এর পিছনের চাকাটি মুক্তভাবে ঘোরানো প্রয়োজন।

চেনের অবস্থা পরীক্ষা করা

প্রথমেই বাইকের চেনের দিকে ভালোভাবে নজর দিন। অনেক সময় দীর্ঘদিন অযত্নে পড়ে থাকলে চেনের অবস্থা হয় সঙ্গিন। চেন যদি অতিরিক্ত ঝুলে পড়ে কিংবা শক্ত হয়ে থাকে সেই বিষয়টি প্রথমেই দেখে নেওয়া উচিত। এছাড়াও চেনের গায়ে জমা মরচে কিংবা নষ্ট হয়ে যাওয়ার চিহ্ন যদি নজরে আসে তবে এই চেন বদলে ফেলাই ভালো।

চেন পরিষ্কার করা

মোটরসাইকেলের চেনের গায়ে যেহেতু লুব্রিক্যান্ট লাগানো থাকে তাই এটি পরিষ্কার করার সময় পুরানো লুব্রিক্যান্ট সম্পূর্ণরূপে তুলে ফেলা প্রয়োজন। এজন্য বাজার চলতি চেন ক্লিনিং সলিউশন ব্যবহার করতে হবে। তবে খরচা বাঁচাতে এক্ষেত্রে কেরোসিন তেল দিয়ে কাজ চালানো যেতে পারে। প্রথমে চেনের উপর এই সলিউশন দিয়ে তারপর চেন পরিষ্কার করার বিশেষ ব্রাশের সাহায্যে সবদিক ঘষে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। এই সময় চেন স্প্রোকেট এর দিকেও নজর দেওয়া উচিত। এই কাজটি করার সময় ইঞ্জিন অন করলে কিন্তু চাকার সঙ্গে লাগানো দাঁত যুক্ত অংশে হাত লেগে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

চেন শুকনো করে নেওয়া

চেন পরিষ্কার হয়ে গেলেই এরপর ভাল সুতির কাপড় দিয়ে পুরো চেন মুছে ফেলতে হবে। এই সময় যদি কোনো অংশে তৈলাক্ত পদার্থ লেগে থাকে তবে সেখানে পুনরায় কেরোসিন লাগিয়ে ঘষে দিতে হবে। এরপর বাইকটিকে বেশ খানিকক্ষণ এমন অবস্থায় রেখে দিন। এতে চেনটি শুষ্ক হতে পারবে।

চেন লুব্রিক্যান্ট করা

চেন শুকিয়ে গেলেই এরপর ভালো মানের চেন লুব্রিকেন্ট স্প্রে করে লাগিয়ে দিতে হবে এর সর্বত্র। চেনের ভিতরের এবং বাইরের দিকে সব জায়গাতেই সমানভাবে সমানভাবে লুব্রিক্যান্ট লাগানো উচিত। তবে কোনো অবস্থাতেই চেনের গায়ে যেন অতিরিক্ত লুব্রিকেন্ট লেগে না যায়। তাতে আদতে বাইক চালানোর সময় বেশি করে ধুলাবালি লাগবে এতে।

অতিরিক্ত লুব্রিকেন্ট মুছে ফেলা

চেনের উপর লুব্রিকেশন এর কাজ হয়ে গেলেই একটি কাপড়ের সাহায্যে অতিরিক্ত তৈলাক্ত পদার্থ গুলি মুছে ফেলা ভালো। এর ফলে এই বাড়তি লুব্রিক্যান্ট বাইকের বিভিন্ন জায়গায় লেগে দাগ সৃষ্টি করা থেকে বাঁচানো যাবে।

লুব্রিক্যান্ট চেনে প্রবেশ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করা

এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি হয়ে গেলে কখনোই খানিকক্ষণ এর মধ্যেই বাইক চালাতে চেষ্টা না করাই ভালো। এই সময় চেনের ভিতরের অংশগুলিতে লুব্রিক্যান্ট সঠিকভাবে প্রবেশ করার জন্য এক থেকে দেড় ঘন্টা বাইকটি রেখে দেওয়া শ্রেয়।

মনে রাখবেন যে সমস্ত বাইকের সাথে ওপেন চেন সেটআপ দেওয়া থাকে সেগুলিতে প্রতি ৫০০-৬০০ কিমি চালানোর পর পর এই চেন পরিষ্কার এবং লুব্রিকেশন করা উচিত। এর ফলে চেনের স্বাস্থ্য এবং চেন স্প্রোকেট দীর্ঘদিন সঠিকভাবে কার্যকর থাকে। তাই বাইকের পারফরমেন্স হয় উন্নত।

সঙ্গে থাকুন ➥